এম শিমুল খান, গোপালগঞ্জ থেকে : গোপালগঞ্জে প্রাকৃতিক খাদ্যে পশু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত খামারিরা। কিছু দিন বাদেই পবিত্র ঈদুল আজহা অর্থাৎ কুরবানির ঈদ। শেষ সময়ে কুরবানির পশুকে সুস্থ ও সবলভাবে প্রাকৃতিক খাদ্য খাইয়ে মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন গোপালগঞ্জ জেলার গো-খামারিরা।
জেলায় এবার প্রায় কয়েক শতাধিক খামারে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। এ সব খামারে প্রতি বছরের মতো চলছে গরু, ছাগল, ভেড়া পালন।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় এ বছর ৬ হাজার ৫৭৬টি ষাঁড়, ১৬৭টি বলদ, ১ হাজার ৫৩৬টি গাভী, ৪ হাজার ৩০০টি ছাগল, ৯২টি ভেড়া কুরবানির জন্য রিষ্টপুষ্ট করা হয়েছে। কোনো প্রকার নিষিদ্ধ মোটাতাজাকরণ ওষুধ বা ইঞ্জেকশন ব্যবহার না করে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাদ্য খাইয়ে পশু পালন করায় দেশের বিভিন্ন জেলায় গোপালগঞ্জ জেলার সুনাম রয়েছে বলে জানান খামারিরা।
এ কারণেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রেতারা ছুটে আসছেন গোপালগঞ্জ খামারগুলোতে। তবে অন্যান্য বারের মতো যদি ভারত থেকে গরু আমদানি করা হয় তাহলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে বলে ধারণা করছে গো-খামারিরা।
গোপালগঞ্জ জেলা সদরের করপাড়া এলাকার খামারি মো. জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, “ধানের কুড়া, কাঁচা ঘাস, গমের ভুষি, ভুট্টা, ডাল, সরিষার খৈল, আগের গুড় ও লবণসহ প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে গরু মোটাতাজা করণ করা হচ্ছে। এবারের ঈদে ভারত থেকে পশু আমদানি না হলে দেশীয় খামারিরা যেমন লাভবান হবেন তেমনি আগামীতে খামার করতে উৎসাহিত হবেন অনেকে।”
কোটালীপাড়া উপজেলার গো-খামারি নাজির মোল্লা বলেন, “গত বছর ৩৭টি ষাঁড় পালন করে প্রায় ১৫ লক্ষাধিক টাকা লাভ হয়েছিল। এ বছর ৩০টি ষাঁড় পালন করছি। জেলার স্থানীয় হাটে গরুগুলো বিক্রি হবে।”
গোপালগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জানান, কুরবানির ঈদের প্রায় ছয় মাস আগে থেকেই খামারিরা পশু মোটাতাজা করতে শুরু করেন। সদর উপজেলাসহ জেলার প্রতিটি উপজেলায় কুরবানির ঈদ উপলক্ষে প্রতিটি খামারে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে পশু মোটাতাজা করার জন্য খামারিদের উৎসাহিত করা হয়েছে। জেলায় প্রায় সাড়ে ১২ হাজারের ওপরে কুররবানির পশু প্রস্তুত রয়েছে। পশুর হাটগুলোতে সুস্থ-সবল পশু বিক্রির লক্ষ্যে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ভেটেনারি টিম কাজ করবে।”
তবে ভারতীয় গরু এলে খামারিরা লোকসানের মুখে পড়বে বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন