গোপালগঞ্জ : জেলার কোটালীপাড়া উপজেলায় শিলাবৃষ্টিতে তরমুজ ও বাঙ্গি চাষীদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যার শিলাবৃষ্টিতে উপজেলার কলাবাড়ী ইউনিয়নে এ ক্ষয়ক্ষতি হয়। এ ইউনিয়নের ১০ গ্রামের প্রায় ৬ হাজার কৃষকের তরমুজ ও বাঙ্গি প্রধান অর্থকরী ফসল। এ ফসলের আয় দিয়েই তাদের সারা বছর চলে। সবেমাত্র ক্ষেত থেকে কৃষক বাঙ্গি বিক্রি শুরু করেছেন। আর মাত্র কয়েক দিন পরে তরমুজ ফসল তুলবেন। কিন্তু হঠাৎ শিলাবৃষ্টিতে এ ফসল নষ্ট হওয়ায় কৃষকরা চোখে মুখে অন্ধকার দেখছেন।
কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, এ বছর কৃষক ৮শ’ ৫০ একর জমিতে তরমুজ ও ২শ’ ৫০ একর জমিতে বাঙ্গির চাষ হয়েছে।
কোটালীপাড়া উপজেলার কলাবাড়ী ইউনিয়নের হিজলবাড়ী গ্রামের কৃষক অসীম হাজরা বলেন, গত ২০ বছর ধরে আমরা তরমুজ ও বাঙ্গির আবাদ করে ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছি। তরমুজ, বাঙ্গি আমাদের প্রধান ও একমাত্র অর্থকরী ফসলে পরিণত হয়েছে। তরমুজ ও বাঙ্গির লাভের টাকায় আবাদের ঋণ পরিশোধ করে সারা বছর সংসার চালিয়েছি। শীলাবৃষ্টিতে বাঙ্গির ক্ষেত বিরাণ হয়েছে। ক্ষেতের অর্ধেক তরমুজ ফেটে ক্ষেতেই পচে যাবে। এখন আমাদের অবস্থা শোচনীয়।
একই উপজেলার কলাবাড়ী ইউনিয়নের নলুয়া গ্রামের মিলন বাড়ৈ, নিপুন বাড়ৈ ও মঙ্গল মজুমদার বলেন, ব্যাংক, এনজিও, দাদান ব্যবসায়ী ও মহাজনের কাছ থেকে ঋণ এনে বাঙ্গি, তরমুজের চাষ করেছিলাম। ক্ষেতের বাঙ্গি বিক্রি শুরু করেছি। তরমুজ আগামী ৭ দিনের মধ্যে ক্ষেত থেকে তোলা যাবে। এ অবস্থায় শীলা বৃষ্টি আমাদের বাঙ্গির ক্ষেত ধ্বংস করে দিয়েছে।
কলাবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাইকেল ওঝা জানান, শীলাবৃষ্টিতে তরমুজ চাষীদের ক্ষেতের তরমুজ নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতি হয়েছে কয়েক কোটি টাকার। আমি এই ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধি হিসেবে কৃষকদের ব্যাংক ও এনজিও এর ঋণ মওকুফের দাবি জানাচ্ছি।
কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসার রথীন্দ্রনাথ বিশ্বাস শীলাবৃষ্টির আঘাতে বাঙ্গি,তরমুজ ফসলের ক্ষতির কথা স্বীকার করে বলেন, কৃষি বিভাগের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। তারা কলাবাড়ী ইউনিয়নে অবস্থান করে বাঙ্গি ও তরমুজ রক্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে পরামর্শ দিচ্ছেন। পাশাপাশি আমরা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করছি। এখানকার কৃষক ঋণ নিয়ে বাঙ্গি, তরমুজ চাষ করেছিলেন। তাদের ঋণ মওকুফ করার জন্য আমরা সরকারের কাছে সুপারিশ করবো।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন