গ্রাফটিং প্রযুক্তিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে স্বাবলম্বী মুকিত

359

কুষি

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় গ্রাফটিং প্রযুক্তিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন কৃষক আব্দুল মুকিত। টমেটো চাষ করে এখন তিনি বাড়িতে বসেই আয় করছেন। এমনকি তার উৎপাদিত এসব অসময়ের টমেটো বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হচ্ছে।

আব্দুল মুকিত ওই উপজেলার সদর ইউনিয়নের চৌশতপুর গ্রামের একজন সফল কৃষক। গ্রীষ্মকালে টমেটো চাষ বৃদ্ধির মাধ্যমে কৃষকদের পুষ্টি ও আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে গত তিন বছর ধরে টমেটো চাষ করে আসছেন আব্দুল মুকিত। গত বছর আব্দুল মুকিত তার বাড়ির সামনে ৩৫ শতক জমিতে টমেটো চাষ করেন, ফলনও হয় বেশ ভালো। এতে তার খরচ হয় প্রায় ২ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকার মতো। এই জমি থেকে তিনি টমেটো উত্তোলন করে ৭ লক্ষ টাকার উপরে বিক্রি করেছেন।

গত বছর লাভ হওয়ায় এবার তিনি ৬০ শতক জায়গায় প্রায় ৪ হাজার টমেটোর চারা রোপন করেন। ৬৫ দিনের পরিচর্যায় টমেটোর গাছে ফুল আসে এবং টমেটো ধরা শুরু হয়। আজ থেকে তিনি টমেটো বিক্রি শুরু করবেন বলে জানান। এ ছাড়াও আগামীতে আরো বড় পরিসরে চাষ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

সফল কৃষক আব্দুল মুকিত জানান, ফসলের কাংখিত মূল্য না পেয়ে জীবিকা নিয়ে দিশেহারা হয়ে তিন বছর আগে কৃষি অফিসের দারস্থ হন তিনি। ফসল চাষের প্রশিক্ষণ প্রদানসহ উচ্চমূল্যের ফসল চাষের পরামর্শ দিয়েছিলেন তৎকালীন কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার এ কে এম মাকসুদুল আলম। এ ছাড়া উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মাহবুব আলম নিয়মিত গিয়ে খোঁজ খবর দিয়ে সহযোগিতা করতেন।

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রফেসরের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিলেন গ্রীষ্মকালীন টমেটোর আধুনিক জাত। সেই থেকে সফলতার শুরু। ইতিমধ্যে ওই এলাকার সফল সবজি চাষি হিসাবে সুনাম অর্জন করেছেন আব্দুল মুকিত। টমেটো চাষে তার সফলতা দেখে এলাকার আরো অনেকে টমেটো চাষে আগ্রহী হয়েছেন। বিভিন্ন লোকজন প্রতিদিনই তার টমেটো বাগানে গিয়ে দেখেন কিভাবে পরিচর্যা করেন।

সরেজমিনে আব্দুল মুকিতের টমেটোর ক্ষেত দেখতে গিয়ে নবীগঞ্জের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ.কে. এম. মাকসুদুল আলম জানান, আব্দুল মুকিত টমেটো চাষে লাভ হওয়ায় এ বছর আরও বড় পরিসরে আবাদ শুরু করেছেন। জৈব সার ব্যবহার করে টমেটো চাষ করায় গত বছরের চেয়ে এ বছর আরো ভালো ফলন হয়েছে। বাজারে বিষমুক্ত টমেটো সরবরাহের লক্ষ্যে আমরা নিয়মিত মনিটরিং করছি।

তিনি আরো বলেন, কৃষি বিভাগের সার্বক্ষণিক তদারকি ও পরামর্শে এ এলাকায় টমেটোর চাষ করছেন কৃষকরা। ক্রমেই তারা খোরাকি কৃষি হতে লাভজনক কৃষিতে ঝুকছে।

উল্লেখ্য, সারাবছর এদেশে টমেটোর ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্তেও জনপ্রিয় এই সবজিটি আবহাওয়াগত কারণে সাধারনত বাংলাদেশে শুধু শীতকালে চাষ হয়ে থাকে। ভোক্তাদের কাছে জনপ্রিয় এ সবজির প্রাপ্তিকাল ছিল শুধু শীতকালের কয়েকটি মাস। ফলে গ্রীষ্মকালে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে আমদানীর মাধ্যমে চাহিদা পূরণ করা হতো।

ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/জেডএইচ