উৎপাদনের পরিমাণে কুমড়া পরিবারের সবজিসমূহের মধ্যে লাউয়ের স্থান দ্বিতীয়। শীতকালে এ সবজির চাষাবাদ বেশি হলেও বর্তমানে গ্রীষ্মকালেও এর উৎপাদন যথেষ্ট। গ্রীষ্মকালীন লাউ এর জাত প্রাপ্যতার কারণে এ মৌসুমে লাউয়ের উৎপাদন বেড়েছে।গ্রীষ্মকালনি লাউ চাষে সমপরিমান রোপা আমন ধান চাষের থেকে অধিক লাভ হয়। গ্রীনলেডি/ ডায়না / গ্রীন ডায়মন্ড/ বারি লাউ- ৪ প্রভৃতি গ্রীষ্মকালে চাষ করা হয়।
বীজ বপণ :- সম পরিমান মাটি ও গোবর মিশিয়ে সেই মিশ্রিত মাটি ৮ x ১০ সে.মি. আকারের ছিদ্রযুক্ত পলিব্যাগে ভরে প্রতি পলিব্যাগে ২টি করে বীজ রোপন করতে হবে। বীজ রোপনের আগে ১৫-২০ ঘণ্টা বীজ পানিতে ভিজিয়ে নিতে হবে। বিঘা প্রতি ২৬৬-৫৩০ গ্রাম বীজ প্রয়োজন।
রোপণের জন্য চারার বয়স :-১৬-১৭ দিন।
জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ দোআঁশ ও এটেল দোআঁশ মাটি লাউ চাষের জন্য উত্তম।বেড এর আকার হবে প্রস্থ- ২.৫ মিটার, উচ্চতা- ১৫-২০ সে.মি,নালা- ৬০ সে.মি. (বেড থেকে বেড দূরত্ব)। মাদার ব্যাস হবে- ৫০ সে.মি., গভীরতা- ৫০ সে.মি। বেডের কিনারা থেকে ৬০ সে.মি. বাদ দিয়ে মাদার কেন্দ্র ধরে ২ মিটার পরপর ১ সারিতে মাদা তৈরি করতে হবে।
জমি চাষে সার প্রয়োগ: পঁচা গোবর- ১০০ কেজি টিএসপি- ২.০ কেজি, ইউরিয়া- ২.০ কেজি, এমপি- ২.০ কেজি, জিপসাম- ২ কেজি, দস্তা- ২৫০ গ্রাম, বোরান- ২০০ গ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড- ২৫০ গ্রাম।
মাদা তৈরির সময় প্রতি মাদায়ঃ গোবর- ১০ কেজি, টিএসপি- ৫০ গ্রাম, এমপি- ৫০ গ্রাম ও ৮ গ্রাম ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড। চারা রোপণের ৩০-৩৫ দিন পর থেকে প্রতি মাদায় ২০ দিন অমত্মরঃ ইউরিয়া- ৩০ গ্রাম ৪ বার।
সেচ দেয়া :- ৫-৭ দিন পর সেচ দিতে হয়।
বাউনী দেয়া :- বাঁশ/ রশি দিয়ে বাউনী তৈরি করতে হয়।
শোষক শাখা/অপসারণ :- গাছের গোড়ার দিকে যে ছোট ছোট ডগা হয় তাকে শোষক শাখা বলা হয়। গাছের গোড়ার দিকে ৪০-৪৫ সে.মি. পর্যমত্ম শোষক শাখাগুলো কেটে অপসারণ করতে হবে।
কৃত্রিম পরাগায়ন :- হেক্টর প্রতি ২-৩টি মৌমাছির কলোনী স্থাপন। হাত দিয়ে কৃত্রিম পরাগায়ন করে লাউয়ের ফলন ৩০-৩৫% বৃদ্ধি করা সম্ভব। কৃত্রিম পরাগায়নের উত্তম সময় হলো দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
ফসল তোলা (পরিপক্কতা সনাক্তকরণ)
১। ফলের গায়ে প্রচুর শুং থাকবে।
২। ফলের গায়ে নখ দিয়ে চাপ দিলে খুব সহজেই নখ ডেবে যাবে।
৩। পরাগায়নের ১২-১৫ দিন পর ফল সংগ্রহের উপযোগী হয়।
ফার্মসএন্ডফার্মার/০৬মে২০