চাহিদার যোগান দিতে গতবারের তুলনায় চলতি মওসুমে জেলায় বেশি জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। বাজারে পেঁয়াজের চাহিদা মেটাতে ও লাভের আশায় চাষিরা এ ফসল আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন বলে কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত মওসুমে (২০২২) জেলার ৮ উপজেলায় ১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন পেঁয়াজের আবাদ হয়েছিল। চলতি মওসুমে এ জেলায় ১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছড়িয়ে বেশি জমিতে পেঁয়াজ আবাদ হওয়ার আশা করছেন কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষকরা।
পেঁয়াজের চাহিদা মেটাতে জেলায় ৩০০ হেক্টর জমিতে এন-৫৩ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। ‘অসময়ে এ জাতের পেঁয়াজ উৎপাদনে ২ হাজার ৫০০ কৃষককে সার, বীজসহ কৃষি প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে। আবাদ হওয়া গ্রীষস্মকালীন লাল জাতের পেঁয়াজ কাটা শুরু হয়েছে। নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসায় দাম কমা শুরু হয়েছে।
জেলার ৮উপজেলার মধ্যে চৌগাছা, ঝিকরগাছা ও সদর উপজেলায় অসময়ের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আবাদ ভালো হয়েছে। এছাড়া চৌগাছা, মণিরামপুর ও সদর উপজেলায় অন্য উপজেলার তুলনায় শীতকালীন পেঁয়াজের আবাদ বেশি হয়।
চৌগাছা উপজেলার হাজরাখানা গ্রামের পেঁয়াজ চাষি গোলাম মোস্তফা বাসসকে জানান, এ বছর তিনি ৬৬শতক জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। নতুন পেঁয়াজ কাটা শুরু করেছেন। মোট ১২০ মণ পেঁয়াজ ফলন হবে বলে আশা করছেন। পেঁয়াজ আবাদে তার মোট খরচ হবে ৬০ থেকে ৭০হাজার টাকা।
যশোর শহর কালিবাড়ি এলাকার পেঁয়াজ আড়তদার মেসার্স জননী ভান্ডারের স্বত্বাাজধিকারী কামাল হোসেন জানান, বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসা শুরু করেছে। পাইকারীভাবে নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৭০-৮০ টাকা দরে এবং পুরাতন পেঁয়াজ ১৩০-১৪০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সুশান্ত কুমার তরফদার বাসসকে জানান, কৃষকদের পেঁয়াজ চাষে আগ্রহী করতে সার, বীজসহ কৃষি উপকরণ বিনামূল্যে সরবরাহের লক্ষ্যে প্রণোদনা চালু করা হয়েছে।চাহিদার তুলনায় ঘাটতি পূরণে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে ২ হাজার ৫০০ কৃষককে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে।এ জেলায় কৃষকরা পেঁয়াজ চাষে সাড়া দেয়ায় আগামি বছর প্রণোদনা পাওয়া কৃষকের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী বাজারে পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে পেঁয়াজের মূল্য বাড়িয়েছে।প্রশাসন বাজার মনিটরিং করায় এবং গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ বাজারে আসা শুরু করায় হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়া পেঁয়াজের দাম অনেকখানি কমে গেছে। কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করায় তারা এখন বানিজ্যিকভাবে পেঁয়াজ চাষ শুরু করেছেন।এ বছর পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে তিনি জানান।