চা শ্রমিক থেকে একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা বনে যাওয়ার গল্প

433

চা

শ্রীমঙ্গল উপজেলার খাইছড়া এলাকার একজন সফল কৃষক কুমার দুধবংশী। এক সময় ছিলেন চা বাগানের শ্রমিক । চা শ্রমিকের কাজ ছেরে শুরু করেছেন কৃষিকাজ, আর এখানেই মিলেছে সাফল্য। তাই আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।

এই সফল কাজে দারুণভাবে উৎসাহিত হয়ে তার তত্ত্বাবধানেই প্রায় ২৫ থেকে ৩০ জন পুরুষ ও নারী শ্রমিক কৃষিতে যোগদান করেছিলেন। এখন তার এই কৃষিকাজের সফলতা দেখে অনেকে নিজ আগ্রহে কৃষিতে এগিয়ে আসতে চাইছেন।

বাগানে গিয়ে দেখা যায়, কুমার দুধবংশী নিজের ঝিঙ্গাক্ষেতে কাজ করেছেন। শেড পদ্ধিতে শুধু ঝিঙ্গা নয়, অনেক সবজি রয়েছে তার এই ক্ষেতজুড়ে। তারতাজা লম্বা লম্বা ঝিঙ্গাগুলো গাছের ডালে ঝুলে আপন স্বার্থকতার জানান দিচ্ছে।

দুধবংশী বলেন, আট থেকে দশ আগে কৃষিবিভাগ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে কিছু সবজি লাগিয়েছিলাম। খুব ভালো হয়েছিলো সেই ফসলগুলো। নিজ হাতে লাগানো সেই ফলসগুলো দেখে দারুণভাবে উৎসাহ লাভ করি। এখন তো পুরোপুরিভাবে কৃষি কাজ করছি। আমার এলাকায় ২৫ থেকে ৩০ জন কৃষক আছেন, আমিই তাদের দলপতি ।

জায়গার পরিমাণ এবং শ্রমিক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার মোট জমির পরিমাণ ৩০ শতাংশ। আমার সবজি বাগানে দুইজন শ্রমিক কাজ করেন, তাদের দৈনিক মজুরি ২০০ টাকা। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত তারা কাজ করেন। এখন গ্রীষ্মকালীন সবজির মধ্যে রয়েছে ঝিঙ্গা, করলা, ঢেঁড়স, শশা প্রভৃতি। শীতকালে ফলাই আলু, টমেটো, বেগুন, মিষ্টি লাউ প্রভৃতি।

সবজিক্ষেতে সার প্রয়োগ প্রসঙ্গে কুমার দুধবংশী বলেন, আমার প্রতিটি সবজিই বিষমুক্ত। আগে গোবর সার, এমওপি, ইউরিয়া এবং টিএসপি সারগুলো ব্যবহার করতাম। এখন আমাকে কৃষি কার্যালয় থেকে কেঁচো থেকে উৎপন্ন জৈব সার দেওয়া হচ্ছে। এগুলোর অত্যন্ত পরিবেশবান্ধব এবং মাটি ও কৃষির জন্য দারুণ উপকারী। এই জৈব সার দিলে অন্যকোনো সারের আর প্রয়োজন পড়ে না। এছাড়াও ‘সেক্স ফেরোমেন’ (কৃত্রিম ফাঁদ) দিয়ে ফসলের ক্ষতিকর পোকামাকড়গুলোকে দমন করা হচ্ছে।

বিক্রয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত প্রায় ১৭ থেকে ১৮ হাজার টাকা ঝিঙ্গা বিক্রি করেছি। সম্পূর্ন ঝিঙ্গাগুলো বিক্রি হলে মোট ২৪ থেকে ২৫ হাজারে গিয়ে দাঁড়াবে। এই সবজি ক্ষেতের ঝিঙ্গাচাষে মাত্র ৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছিলো।

শ্রীমঙ্গল উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন বলেন, কুমার দুধবংশী আমাদের উপজেলার একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। অনেক পরিশ্রম করতে পারেন তিনি। তার দেখাদেখি এলাকায় অনেক লোক কৃষিতে এসেছেন এবং আমাদের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে সফলভাবে কৃষিজাত নানান পণ্য চাষাবাদ করছেন।

ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/জেডএইচ