উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরার বিভিন্ন অঞ্চলে জাপানি কুইকস্টার জাতের ওলকপি চাষে আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় কৃষকদের। ফসলটি চাষাবাদ করে এরই মধ্যে বেশ লাভবানও হয়েছেন তারা।
কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, ওলকপির এ জাতটি বেশ উচ্চফলনশীল। এছাড়া জাতটি আগাম ফলন দিতেও সক্ষম।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, চলতি মৌসুমে কুইকস্টার জাতের ওলকপি আবাদ করে প্রতি বিঘায় ফলন পাওয়া গেছে ১৪০-১৪৫ মণ পর্যন্ত। বিঘাপ্রতি কৃষকদের লাভ হয়েছে ৫০-৫৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মাহমুদপুর (বাদামতলা) গ্রামের সবজিচাষী মতিয়ার রহমান জানান, চলতি শীত মৌসুমে তিন বিঘা পরিমাণ জমিতে উচ্চফলনশীল জাপানি কুইকস্টার জাতের ওলকপি চাষ করেছেন তিনি। গেল মৌসুমে দুই বিঘা পরিমাণ জমিতে এ জাতের ওলকপি উৎপাদন করে তার লাভ হয়েছিল ৮০ হাজার টাকা। এ কারণে এবার আরো বেশি পরিমাণ জমিতে সবজিটি আবাদ করবেন তিনি।
কৃষক মতিয়ার রহমান আরো জানান, এরই মধ্যে ক্ষেতের প্রায় ৯০ শতাংশ ওলকপি বিক্রি করে উৎপাদন খরচ বাদ দিয়েই প্রায় ৯০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে আমার। এখন ক্ষেতে যে পরিমাণ ওলকপি রয়েছে, তা বিক্রি করলে আরো অন্তত ১০-১২ হাজার টাকা আয় হবে বলে আশা করছি।
একই গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন জানান, স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শওকাত হোসেনের পরামর্শে দেড় বিঘা জমিতে জাপানি কুইকস্টার জাতের ওলকপি চাষ শুরু করেন তিনি। অন্য সবজির তুলনায় এটি উৎপাদন একটু ব্যয়বহুল হলেও অনেক লাভজনক।
তিনি বলেন, ‘‘আমি জাপানি কুইকস্টার জাতের ওলকপির বীজ কিনেছি প্রতি কেজি ১৫ হাজার টাকায়। বীজ বপন, সেচ, সার, কীটনাশক ও অন্যান্য খরচ যোগ করে দেড় বিঘা জমিতে ওলকপি উৎপাদনে আমার ব্যয় হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। আর এ পর্যন্ত ক্ষেতের ওলকপি বিক্রি করেছি ১ লাখ ১০ হাজার টাকার। অর্থাৎ এরই মধ্যে ৬০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে আমার।’’
স্থানীয় আলীপুর ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শওকাত হোসেন জানান, গত তিন-চার বছর আলীপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে কৃষকরা এ কুইকস্টার জাতের ওলকপি চাষ করছেন। স্থানীয় জাতের তুলনায় কুইকস্টার ওলকপি আবাদ অনেক বেশি লাভজনক। এ জাতের একেকটি ওলকপির ওজন হয় ৬০০ থেকে ৮০০ গ্রাম। এবার এখানকার কৃষকরা প্রতি বিঘায় ওলকপির ফলন পেয়েছেন ১৪০-১৪৫ মণ। এছাড়া স্থানীয় বাজারে এর ভালো চাহিদাও রয়েছে। এ কারণে ফসলটি আবাদ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ অরবিন্দ বিশ্বাস জানান, সাতক্ষীরার সব উপজেলায় বারো মাসই বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ হয়ে থাকে। তবে কয়েক বছর ধরে কৃষকরা এখানকার বিভিন্ন অঞ্চলে জাপানি কুইকস্টার জাতের ওলকপি চাষ করে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছেন। এটি একদিকে যেমন আগাম বাজারে ওঠে, তেমনি ফলনও হয় বেশি।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/ মোমিন