জার্মান ঘাস এক প্রকার স্থায়ী ঘাস। এ ঘাসের কান্ডের গিটে শিকড় থাকে এবং পারা ঘাসের মত লাগানোর পর ঘাসের লতা সমস্ত জমিতে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘাস গরুর খবু পছন্দনীয়, দ্রুত বর্ধনশীল ও উচ্চ ফলন শীল। বাংলাদেশে এ ঘাস আবাদের প্রচুর সুযোগ রয়েছে।গবাদি পশু পালনের জন্য ঘাস একটি গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। যার ফলে ঘাস চাষ করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। আর জার্মান ঘাস এক ধরনের স্থায়ী ঘাস। এর কাণ্ডের গিটে শিকড় থাকে এবং পারা ঘাসের মতো লাগানোর পর ঘাসের লতা পুরো জমিতে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘাস গরুর খুব পছন্দ। দ্রুত বর্ধনশীল ও উচ্চ ফলনশীল এ ঘাস অাপনিও চাষ করতে পারেন।
জমি নির্বাচনঃ-
জার্মান ঘাস পারা ঘাসের মত নিচু ও জলাবদ্ধ জমিতে চাষ করা যায়। জার্মান ঘাস দাঁড়ানো পানিতে জন্মনো যায়। সে সমস্ত জমিতে সারা বছর পানি থাকে অথবা কিছুকাল ডুবে থাকে, সে সব জমিতে এ ঘাস চাষ করা যায়। এছাড়া খাল, বিল, মজা পুকুর, নদীর ধার, ডোবা, নালাতে এই ঘাস চাষের জন্য উপযুক্ত।
রোপণের সময়ঃ- মার্চ হতে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ ঘাস চাষের উপযুক্ত সময়।
রোপণের দূরত্বঃ- সারি থেকে সারি গাছে থেকে ১-১.৫ ফুট।
বংশ বিস্তারঃ-
এ ঘাস হতে ভালো বীজ উৎপাদন হয় না। কাজেই কাটিং ও মোথা দ্ধারা বংশ বিস্তার করতে হয়।
কাটিং বা মোথার প্রাপ্তিস্থানঃ- আপনার জেলা বা উপজালার প্রানী সম্পদ অফিসে। বিনা মূল্যে কাটিং বা মোথা বিতরণ করা হয়।
চারা তৈরিঃ-
গাছ পরিপক্ক হলে কান্ডের গিট হতে শিকড় বের হয়। এ রকম পরিপক্ক গাছের কমপক্ষে ৩ টি গিট নিয়ে কাটিং করতে হয়। সমতল শুকনা জমিতে লাগালে কয়েকটা চাষ দিয়ে আগাছামুক্ত করে নিতে হবে। এরপর নির্দিষ্ট দূরত্বে কোদাল দিয়ে গর্ত করে চারা বা কাটিং রোপন করতে হবে। কাটিংগুলি কাত করে অর্থাৎ ৪৫-৬০ ডিগ্রি কোনে এমন ভাবে লাগাতে হবে যেন কাটিং এর একটি গিট মাটির নীচে একটি মাটির সমান এবং অপর গিট মাটির উপরে থাকে।
সার প্রয়োগঃ-
জার্মান ঘাস উর্বর জমিতে ভাল হয়। ভাল ফলনের জন্য জমিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে গোবর দিতে হবে এবং চারা লাগানোর ২/৩ সপ্তাহ পর একর প্রতি ৪০ কেজি ইউরিয়া ছিটিয়ে দিতে হবে, প্রতিবার ঘাস কাটার পর একর প্রতি ৩৫-৪০ কেজি ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে।
ঘাস কাটাঃ-
জার্মান ঘাস দ্রুত বর্ধনশীল। রোপণের ৫০-৬০ দিন প্রথম কাটার উপযোগী এবং এর পর প্রতি ৪/৫ সপ্তাহ পর পর কাটা যায়। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় এ ঘাস মার্চ হতে অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ে। শীতকালে এ ঘাসের তেমন বৃদ্ধি ঘটে না।
ফলনঃ- জার্মান ঘাস বছরে প্রায় ৫ বার কাটা যায়। উর্বর জমিতে ও ভালো ব্যবস্থাপনায় বছরে একর প্রতি ৩০-৪৫ টন সবুজ ঘাস পাওয়া যায়।
প্রাপ্তিস্থান
জার্মান ঘাস থেকে ভালো বীজ উৎপাদন হয় না। তাই কাটিং ও মোথা দ্বারা বংশ বিস্তার করতে হয়। জেলা বা উপজেলার প্রাণিসম্পদ অফিসে বিনামূল্যে কাটিং বা মোথা বিতরণ করা হয়। সেখান থেকে সংগ্রহ করে চাষ করতে পারেন।
জার্মান ঘাস নিচু ও জলাবদ্ধ জমিতে চাষ করা যায়। এমনকী জমানো পানিতে চাষ করা যায়। যে সব জমিতে সারা বছর পানি থাকে অথবা কিছুকাল ডুবে থাকে, সে সব জমিতে এ ঘাস চাষ করা যায়। এছাড়া খাল, বিল, মজা পুকুর, নদীর ধার, ডোবা, নালা এই ঘাস চাষের জন্য উপযুক্ত।
ফার্মসএন্ডফার্মার/১৪মার্চ২০