জালে ইলিশ, জেলেদের মুখে হাসি

1473

৯ অক্টোবর থেকে ২২ দিন ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধ

মা-ইলিশ সংরক্ষণে ২২ দিন বন্ধ থাকার পর আবারও শুরু হয়েছে ইলিশ ধরা। জেলের জালে ভরপুর ধরা পড়ছে ছোট-বড় সব ধরনের ইলিশ। বাজারেও ইলিশের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। ফলে দামও তুলনামূলক কিছুটা কম। ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে যে ইলিশ ১৫০০-১৬০০ টাকা পিস বিক্রি হয়েছে, তা এখন ১০০০-১১০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। বড় ইলিশের পাশাপাশি দম কমেছে ছোট ইলিশেরও। দাম কমে যাওয়ায় মাছ বাজারে প্রিয় মাছ ইলিশ কিনতে ভিড় করছেন বেশির ভাগ ক্রেতা। যার ফলে অন্য মাছের চাহিদা কিছুটা হলেও কমেছে। এ কারণেই রুই, পাবদা, তেলাপিয়া, পাঙাশের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে।

শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, মালিবাগ হাজীপাড়া ও খিলগাঁও অঞ্চলের বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মা-ইলিশ সংরক্ষণের অংশ হিসেবে ৯ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ আহরণ, পরিবহণ, বাজারজাতকরণ, কেনাবেচা, মজুত ও বিনিময় সম্পূর্ণ বন্ধ রাখে সরকার। ২২ দিনের সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবার থেকেই রাজধানীর বাজারে ইলিশ কেনাবেচা শুরু হয়।

ব্যবসায়ীদের দাবি, ইলিশ মাছ বাজারে আসার পর থেকেই বাজারে অন্য মাছের চাহিদা কিছুটা কমেছে। পর্যাপ্ত পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়ার কারণে দাম তুলনামূলক কম। এক সপ্তাহ পর্যন্ত ইলিশের দাম এমন থাকতে পারে। তারপর আবার ইলিশের দাম বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারভেদে ১ কেজি থেকে ১ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১০০০-১১০০ টাকা পিস, যা ইলিশ ধরা বন্ধ হওয়ার আগে ছিল ১৪০০-১৬০০ টাকা পিস। ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকা কেজি, যা আগে ছিল ৮০০-১০০০ টাকা কেজি। বড় ইলিশের পাশাপাশি দাম কমেছে ছোট ও মাঝারি ইলিশের। ৪০০-৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৪৫০ টাকার মধ্যে, যা আগে ছিল ৫০০ টাকার ওপরে।

এ বিষয়ে রামপুরার ব্যবসায়ী দিলীপ বলেন, ‘আগের থেকে এখন ইলিশের দাম একটু কম। আগে যে ইলিশ ১৬০০ টাকায় বিক্রি করেছি, এখন সেই ইলিশ ১০০০ টাকা পিস বিক্রি করছি। ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি করছি ৭০০ টাকা কেজি। এই ইলিশ আগে ৯০০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি।’ এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘জালে এখন পর্যাপ্ত পরিমাণে ইলিশ মাছ ধরা পড়ছে। তবে এ ধারা বেশি দিন থাকবে না। কিছুদিন পরেই ইলিশ মাছ ধরা পড়ার পরিমাণ কমে যাবে। তাই আমাদের ধারণা, এক সপ্তাহ পরেই ইলিশের দাম বেড়ে যাবে।’

এদিকে বাজারে ইলিশের সরবরাহ ও চাহিদা বাড়ায় অন্য মাছের দাম কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহে ১৫০-১৮০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া তেলাপিয়া মাছের দাম কমে ১২০-১৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। একই দামে বিক্রি হচ্ছে পাঙাশ। রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২১০-৩৫০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৮০-৪০০ টাকা কেজি। পাবদা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৪০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০০-৬০০ টাকা। তবে আগের মতোই ট্যাংরা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, শিং ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী আব্বাস বলেন, ‘মাছের বাজারে এসে এখন সবাই বড় ইলিশ খুঁজছে। তুলনামূলক কিছুটা কম দামেও পছন্দের বড় ইলিশ কিনতে পারছেন ক্রেতারা। যে কারণে অন্য মাছের চাহিদা একটু কম। এতে অন্য মাছের দাম কিছুটা কমেছে।’
ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/জেডএইচ