আমাদের দেশে ছোলার ডাল বেশ জনপ্রিয় ও সুস্বাদু খাবার। আমাদের দেশের প্রায় সকল জেলায় ছোলার চাষ করা যায়।
এটি একটি আমিষ জাতীয় ডাল ফসল।ছোলা উৎপাদন করে পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি অতিরিক্ত উৎপাদন বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয় করা সম্ভব। নিচে ছোলা চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত দেওয়া হল:
পুষ্টিগুণ
ছোলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ স্নেহ, খনিজ দ্রব্য ও এমাইনো এসিড। বীজ নির্বাচন: ছোলা চাষের জন্য বীজ হতে হবে তেজস্বী, উচ্চগুণমানসম্পন্ন, রোগমুবীজবাহিত রোগ এড়ানোর জন্য বপ নিলে ভাল হবে। বীজের হার: বিঘা প্রতি জমিতে ছোলা চাষের জন্য৬-৮ কেজি বীজের দরকার হয়।
সময়
ছোলার বীজ বোনার উত্তম সময় অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে নভেম্বর পর্যন্ত।
জাত নির্বাচন:
আমাদের দেশে বিভিন্ন জাতের ছোলার জাত রয়েছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ বারি ছোলা-২, বারি ছোলা-৩, বারি ছোলা-৪, বারি ছোলা-৫ ইত্যাদি। এগুলো সবই উচ্চফলনশীল জাত।
জমি তৈরি:
ছোলা চাষের জন্য উত্তম মাটি হচ্ছে বেলে দো-আঁশ বা এটেল দো-আঁশ মাটি। ছোলা চাষের আগে জমিতে উত্তম রূপে ৩-৪ বার চাষ ও মই দিয়ে নিতে হবে। এবং জমির মাটি ভালো করে ঝুরঝুরে করে নিতে হবে।
বীজ বপন:
ছোলার বীজ ছিটিয়ে ও সারিতে দুই ভাবেই বোনা যায়। সারিতে বীজ বপন করলে সারি থেকে সারির দূরত্ব কমপক্ষে ৪০ সে.মি.হতে হবে। বীজ একটু গভীর করে বপন করতে হবে যাতে করে পাখি নষ্ট না করতে পারে।
সার ও সেচ পদ্ধতি:
জৈব সার ছোলা চাষের জন্য উত্তম। মাটির ধরন ও গুণাগুণ অনুয়ায়ী অন্যান্য সার দিতে হবে। তারপর জমিতে রস না থাকলে বীজ বপনের পর ২/১ টা সেচ দিতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে জমিতে যেন বন্যা বা বৃষ্টির পানি জমে না থাকে।
রোগ ও তার প্রতিকার:
ছোলার বীজ গজানোর পর বিভিন্ন ধরণের রোগ হতে পারে। যেমন-ফিউজিয়াম অক্সিসপোরাম (Fusarium Oxysporum)নামক, স্কেলেরোসিয়াম রলফসি নামক, বট্রাইটিস ইত্যাদি প্রজাতির ছত্রাকের আক্রমণে গাছের বিভিন্ন প্রকারের ক্ষতি হয়ে থাকে। এসব রোগে পরিণত বয়সে গাছ আক্রান্ত হলে পাতা ধীরে ধীরে হলুদ রঙ ধারণ করে। আক্রান্ত গাছ ঢলে পড়ে ও শুকিয়ে যায়। শেকড় ও কাণ্ডের সংযোগ স্থলে কালো দাগ পড়ে। এ সকল রোগের লক্ষণ কাণ্ড, পাতা, ফুল ও ফলে দেখা দেয়। এ রোগে ছোলার উৎপাদন অনেক কম হয়। এসব রোগ দেখা দিলে দ্রুত প্রতিকারের ব্যবস্থা নিতে হবে। যাতে করে ফসলের ক্ষতি কম হয়। এজন্য উৎপাদিত জৈব কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে।
পরিচর্যা:
জমিতে আগাছা থাকলে তা পরিষ্কার করতে হবে। যাতে পোকামাকড়, রোগজীবাণু ও ইঁদুরের আক্রমণ কম হয়।
ফসল সংগ্রহ:
জমির ফসল পেকে গেলে তা সংগ্রহ করতে হবে। ভাল জাতের ফসল চাষ করলে বিঘা প্রতি ২৪০-২৭০ কেজি ফসল উৎপাদন করা যায়।
ফার্মসএন্ডফার্মার/০৬জুন২০