আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় কোন না কোন তরকারীতে আলু ব্যবহার করে থাকি। বলা যায় আলু ছাড়া আমাদের চলেই না। চাষিরা তাদের নিজস্ব কিংবা বর্গাকৃত জমিতে বিশাল আকারে আলু চাষ করে থাকে। কিন্তু যাদের চাষ করার মতো তেমন কোন জায়গা জমি নেই কিন্তু আলু চাষ করতে ইচ্ছুক তাদের জন্য টবে আলু চাষ হতে পারে একটি অনন্য সমাধান।
বাসার ছাঁদ কিংবা নিজেদের ঝুলবারান্দায় স্বল্প পরিসরে করা যেতে পারে আলুর চাষ। এতে করে আলু চাষের শখও মেটানো যাবে আবার আলুর যোগানে নিজস্ব ভূমিকা পালনও হবে তাতে করে অল্প হলেও নিজের চাষকৃত আলুর স্বাদ কেমন হয় তা দেখে নেয়া যেতে পারে। ইয়াহলে চলুন জেনে যাক টবে আলু চাষ করার জন্য আমরা কী কী পদ্ধতি অনুসরণ করব।
স্থান নির্বাচনঃ
প্রথমেই আপনাকে যা করতে হবে তাহলো স্থান নির্বাচন। স্থান নির্বাচনের ক্ষেত্রে আপনাকে এমন একটি জায়গা নির্বাচন করতে হবে যেখানে সব সময় আলো বাতাস চলাচল করতে পারে। আলু চাষ করার জন্য আপনি তিনটি জায়গা নির্বাচন করতে পারেন।
১। বাসার ছাঁদ
২। বারান্দা
৩। বাড়ীর উঠান
আলু চাষের জায়গা নির্বাচন হবার পর আপনাকে নির্বাচন করতে হবে আপনি কিসে চাষ করবেন টবে নাকি মাঝারি কোন ড্রামে। টব ও ড্রাম ছাড়াও প্ল্যাস্টিকের কন্টেইনার কিংবা প্ল্যাস্টিকের বালতিও ব্যবহার করতে পারেন।
টবে মাটি প্রস্তুত প্রণালীঃ
আলু চাষের জন্য মাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই টবে মাটি ভরাট করার আগে অবশ্যই আপনাকে বেলে দো আশ মাটি সঙ্গগ্রহ করতে হবে। মাটী সংগ্রহ করা হলে সেই মাটিতে একভাফ জৈব সার মিশ্রিত করে ভালোভাবে মাটিতে মিশিয়ে নিতে হবে। জৈবসার মাটিতে মিশিয়ে নেয়া হলে সেখানে হালকা একটু পানি দিয়ে মাটিকে ভিজিয়ে নিতে হবে।
বীজ সংগ্রহকরণঃ
আলুর বীজ সংগ্রহ করার সময় অবশ্যই খেয়াল করতে হবে আপন কোন জাতের বীজ লাগাবেন। হাইব্রীড জাতের নাকি দেশি জাতের । আপনার পছন্দ অনুযায়ী আলুর বীজ সংগ্রহ সেগুলোকে কাটতে হবে । বর্তমানে বাজারে কোম্পানি বিভিন্ন কাটিং বীজ পাওয়া যায়। যদি নিজেই কাটিং করতে চান তাহলে বীজ কিনে এনে প্রতিটি অঙ্কুর ১-২ ইঞ্চি পুরত্ব রেখে কেটে ছায়াযুক্ত স্থানে কিছুক্ষণ রেখে দিন।
বীজ রোপণঃ
টবের উপরের অংশ কিছুটা খালি রেখে আগে থেকে প্রস্তুতকৃত মাটি টবে ঢালুন। এবার আলুর বীজ ৫ বা ৭ ইঞ্চি পরপর মাটিতে পুতে দিন। আলুর বীজ লাগানো হলে বীজের উপর ৪-৫ ইঞ্চি করে মাটি মিশ্রণ দিয়ে ঢেকে দিন।
পরিচর্যাঃ
টবে আলুর বীজ লাগানোর পর খেয়াল রাখত হবে যেন সেচের পরিমাণ বেশি না হয় । কারণ টবে পানির পরিমাণ বেশি হলে আলুর শেকরর পচে যাবে তাই টবের গায়ে ছোট ছোট ছিদ্র ছিদ্র করে দিতে হবে যাতে করে টবে পানি আটকে না থাকে । টবের মাটিতে জৈব সার আগে থেকে দেয়ার কারণে আর অতিরিক্ত সার দেয়ার প্রয়োজন পড়েনা তবু প্রয়োজন হলে উপরি সার দেয় যেতে পারে। আলু গাছের গোড়ায় আগাছ্যাঃ জন্মাতে পারে সেক্ষেত্রে সেগুলো তুলে দিতে হবে। বাসার ছোট বাচ্চারা যাতে টব নষ্ট না করে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
আলু সংগ্রহঃ
আলু পরিপক্ক হতে আলু জাতভেদে মূলত ৭০ থেকে ৯০ দিন সময় লাগে। আলুর গাছ হলুদ বর্ণ ধারণ করলেই বুঝতে হবে আলু পরিপক্ক হয়েছে। আলু পরিপক্ক হলে গাছ ধরে টান দিলে আলু বের হয়ে আসবে সেক্ষেত্রে টব ভাঙ্গতে হবেনা ।
আলু সংরক্ষণঃ
• আলু পরিপক্ক হবার পরই তা তোলা উচিৎ নইলে অপরিপক্ক আলু বেশিদিন সংরক্ষণ করা যায় না।
• আলু তোলার সেগুলো শুকনো আদ্রযুক্ত জায়গায় রাখতে হবে।
• আলুর আকারভেদে সেগুলো বাছাই করে রাখা।
• কাটা কিংবা পচা কোন আলু থাকলে সেগুলো ভালো আলু থেকে আলাদা করে ফেলা।
•সংরক্ষণ করার জন্য ভালো পাত্র নির্বাচন করা।
ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/জেডএইচ