পদ্ম বা লোটাস গ্রামবাংলার মানুষের কাছে অতি পরিচিত ফুল। এর আদি নিবাস দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। ভারতের জাতীয় ফুল। কন্দ জাতীয় ভূ-আশ্রয়ী বহু বষর্জীবী জলজ উদ্ভিদ। এর বংশ বিস্তার ঘটে কন্দের মাধ্যমে। পাতা পানির ওপরে ভাসলেও এর কন্দ বা মূল পানির নিচে মাটিতে থাকে। পানির উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে গাছ বৃদ্ধি পেতে থাকে।
পাতা বেশ বড়, পুরু, গোলাকার ও রং সবুজ। পাতার বোটা বেশ লম্বা, ভেতর অংশ অনেকটাই ফাঁপা থাকে। ফুলের ডাটার ভিতর অংশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অসংখ্য ছিদ্র থাকে। ফুল আকারে বড় এবং অসংখ্য নরম কোমল পাপড়ির সমন্বয়ে সৃষ্টি পদ্ম ফুলের। ফুল ঊধ্বর্মুখী, মাঝে পরাগ অবস্থিত। ফুটন্ত তাজা ফুলে মিষ্টি সুগন্ধ থাকে। ফুল ফোটে রাত্রি বেলা এবং ভোর সকাল থেকে রৌদ্রের প্রখরতা বৃদ্ধির পূর্ব পযর্ন্ত প্রস্ফুটিত থাকে। রৌদ্রের প্রখরতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ফুল সংকোচিত হয়ে যায় ও পরবতীের্ত প্রস্ফুটিত হয়। ফুটন্ত ফুল এভাবে বেশ অনেক দিন ধরে সৌন্দর্য বিলিয়ে যায়। পদ্ম ফুলের রং মূলত লাল সাদা ও গোলাপীর মিশ্রণ যুক্ত।
তাছাড়া নানা প্রজাতির পদ্ম ফুল দেখা যায়। এর মাঝে রয়েছে লাল, সাদা ও নীল রঙের ফুল। বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি প্রাকৃতিক জলাধার হাওর-বাঁওড়, খালে-বিলে ও ঝিলের পানিতে পদ্ম ফুল ফুটতে দেখা যায়। বর্ষার মৌসুমে ফুল ফোটা শুরু হয়। তবে শরতে অধিক পরিমাণে ফুল ফোটে এবং এর ব্যপ্তি থাকে হেমন্তকাল অবধি। ফুটন্ত ফুলের বাহারি রূপ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। যে রূপের মায়ায় মুগ্ধ হয়ে শরৎ ঋতুর পদ্ম ফুলকে নিয়ে অনেক কবি তার কাব্যের উপমায় পদ্ম ফুলের রঙ রূপকে তুলে ধরেছেন ভিন্ন ভিন্ন ভাবে।
হিন্দু ধমার্লম্বি মানুষজনের কাছে অতি প্রিয় ও পবিত্র ফুল পদ্ম। বিশেষ করে দুর্গা পূজাতে পদ্ম ফুলের রয়েছে বেশ চাহিদা ও কদর। ফুলের চাহিদা থাকার কারণে এ পদ্ম ফুল সংগ্রহ ও বিক্রয় নিভর্র করে অনেক মানুষ জীবিকা নিবার্হ করে করছেন। তাছাড়া পদ্ম ফুল ভেষজগুণ সমৃদ্ধ ফুল গাছ। এর ডাটা সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। মানব দেহে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণে অতুলনীয়। চুলকানি ও রক্ত আমাশয় নিরাময়ে বেশ উপকারী।
ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/জেডএইচ