জেনে নিন ফার্টিগেশন পদ্ধতিতে স্ট্রবেরি চাষের সুবিধা

1130

ফার্টিগেশন পদ্ধতিতে পানির সাথে রাসায়নিক সার মিশিয়ে ফসলে প্রয়োগ করা হয়। যেসব সার পানিতে দ্রবণীয় তা ফার্টিগেশন পদ্ধতিতে ব্যবহার করা যায়। ফলে ফসলের প্রয়োজনীয় সার ও পানি একত্রে গাছের গোড়ায় সরবরাহ করা যায়। ফার্টিগেশন পদ্ধতিতে ফসল উৎপাদনে সার ও সেচের পরিমিত ব্যবহার নিশ্চিত হয় এবং প্রচলিত পদ্ধতির চেয়ে ফলন ২৫-৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এ পদ্ধতিতে চাষ করলে স্ট্রবেরির ফলন ২০ থেকে ৫০ ভাগ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা সম্ভব। এ পদ্ধতিতে ৪৫-৫৫০ শতাংশ সার এবং ৪৫-৫০ শতাংশ সার কম লাগে। সার এবং পানি সাশ্রয়ের পাশাপাশি পরিবেশ সংরক্ষণেও ফার্টিগেশন পদ্ধতির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে ফসলের গোড়ায় প্রয়োগের ফলে প্রয়োগকৃত সারের প্রায় সবটুকু উদ্ভিদ গ্রহণ করে। ফলে অব্যবহৃত সার চুঁইয়ে ভূ-উপরিস্থ এবং ভূ-গর্ভস্থ পানি দূষিত করে না। এ পদ্ধতিতে ফসল উৎপাদন করলে মাটি ও পানি বাহিত রোগের বিস্তার কম হয়।

উচ্চ মূল্যের ফসল উৎপাদনে ফার্টিগেশন-ড্রিপ সেচ খুবই উপযোগী পদ্ধতি। সারাবিশ্বে উৎপাদিত স্ট্রবেরির প্রায় ৮৫ ভাগ প্লাস্টিক-কালচার পদ্ধতিতে আবাদ করা হয়। প্লাস্টিক কালচার পদ্ধতিতে স্ট্রবেরি গাছের প্রয়োজনীয় সার ও পানি সরবরাহ করা হয় ফার্টিগেশন পদ্ধতিতে। ফার্টিগেশন পদ্ধতিতে ফসল চাষ করলে আশানুরূপ ফলন পাওয়া যায় এবং অধিক মুনাফা অর্জন করা সম্ভব। ফার্টিগেশন বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন সেচ প্রযুক্তি যার চাহিদা ক্রমান¦য়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে এ পদ্ধতির খরচ বেশি হলেও দীর্ঘদিন ব্যবহারের মাধ্যমে খরচ সম্বনয় করা সম্ভব। প্রতি ৩ শতক জমির ফসলের জন্য এ পদ্ধতিতে সেচ ও সার বাবদ বছরে ৩৮০-৪২০ টাকা খরচ হয়।

ফার্টিগেশন পদ্ধতির সুবিধাগুলোঃ
■ ফার্টিগেশন পদ্ধতিতে হেক্টরে ১৫-২০ টন স্ট্রবেরি উৎপাদন করা সম্ভব।
■ এ পদ্ধতিতে প্রচলিত পদ্ধতির চেয়ে শতকরা ৫০-৫৫ ভাগ ইউরিয়া এবং ২৫ ভাগ পটাশ কম লাগে।
■ প্রচলিত ফারো এবং প্লাবন সেচ পদ্ধতিরে চেয়ে শতকরা ৪৫-৪৮ ভাগ সেচের পানি কম লাগে।
■ ফার্টিগেশন পদ্ধতিতে সেচজনিত জলাবদ্ধতার সম্ভাবনা না থাকায় এবং এক গাছ থেকে পানি চুয়িয়ে অন্য গাছে না যাওয়ায় প্লাবন বা ফারো সেচ পদ্ধতি অপেক্ষা এ পদ্ধতিতে রোগ বালাই এর প্রাদুর্ভাব কম হয়।

■ ফার্টিগেশন পদ্ধতিতে স্ট্রবেরি চাষের আয়-ব্যয়ের অনুপাত ৮ঃ১ এবং প্রতি হেক্টর জমিতে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে স্ট্রবেরি চাষ করে নিট মুনাফা ১৮-২৫ লাখ টাকা পাওয়া সম্ভব।
■ বর্তমানে এ উন্নত পদ্ধতির যাবতীয় উপকরণ স্থানীয়ভাবে তৈরি করা হয়।
■ লবণাক্ত ও খরাপ্রবণ এলাকা এবং পাহাড়ি অঞ্চলে ফার্টিগেশন পদ্ধতি খুবই উপযোগী ।

ফার্মসএন্ডফার্মার/১৪অক্টোবর২০