বিদেশি জাতের মাল্টা বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে জয়পুরহাটে

336

রওশন

জয়পুরহাট: জেলার বরেন্দ্র অঞ্চল হিসেবে ধান-আলু উৎপাদনে কালাই ও ক্ষেতলাল উপজেলার খ্যাতি প্রাচীনকাল থেকেই। তবে নতুনভাবে পরিচিতি ঘটতে যাচ্ছে এ অঞ্চলের। উত্তরবঙ্গে সর্ববৃহৎ এবং জয়পুরহাট জেলায় প্রথম বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষের সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছেন ক্ষেতলাল উপজেলার সমন্তাহার গ্রামের আদর্শ কৃষক এস এম রওশন জামিল।

তিনি নিজস্ব উদ্যেগে ১ হেক্টর (৭.৫ বিঘা) বন্যামুক্ত উঁচু জমিতে উন্নত জাতের বিদেশী ‘বারী মাল্টা-১’ মাল্টা ফল চাষ শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে শ্রম আর ঘামের প্রতিফলন হিসেবে তিনি বর্তমানে বাগান থেকে কাঙ্খিত মাল্টা ফল বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করা শুরু করেছেন।

সরেজমিনে ও ক্ষেতলাল উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ক্ষেতলাল উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৬/৭ কিলোমিটার দক্ষিণে মামুদপুর ইউনিয়নে ভাসিলা-পূরানো গোপীনাথপুর রাস্তার দক্ষিণ পার্শ্বে সমন্তাহার গ্রাম। সেই গ্রামের আদর্শ কৃষক এসএম রওশন জামিল ‘মনোয়ারা রজিব এগ্রো ফার্ম’ নামে ১ হেক্টর (৭.৫ বিঘা) বন্যামুক্ত উঁচু জমির উপর বাণিজ্যিকভাবে বাংলাদেশে নতুন উদ্ভাবিত ‘বারী মাল্টা-১- চাষ শুরু করেছেন।

এই ফল বাগানে গত ২০১৭ সালে জানুয়ারি মাসে প্রায় ৬০০টি ‘বারী মাল্টা-১’ মাল্টা গাছ রোপন করেন। বর্তমান কাঙ্খিত মাল্টা ফলগুলো গাছে গাছে বাতাসে বাতাসে দুলছে এবং ফলগুলো ফুট প্যাকিং শুরু হয়েছে।
ইতোমধ্যে কাঙ্খিত বিদেশি জাতের মাল্টা ফল বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করছেন। কলম করে মাল্টা ফলের প্রতিটি চারা প্রায় ৫০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। এই মাল্টা ফলের বাগান এক নজর দেখার জন্য প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে কৃষক, বৃক্ষপ্রেমি, ফলচাষি ও বাগান মালিকরা আসেন। জামিলের ওই দৃষ্টি নন্দন মাল্টা ফলের বাগান এখন সবার মুখে মুখে।

ক্ষেতলাল উপজেলার সমন্তাহার গ্রামের আদর্শ মাল্টা ফল চাষি এস এম রওশন জামিল বলেন, উত্তরবঙ্গে সর্ব বৃহৎ এবং জয়পুরহাট জেলার এই প্রথম আমি ১ হেক্টর জমিতে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার ব্যয়ে বাংলাদেশে নতুন উদ্ভাবিত উন্নত জাতের বিদেশি ‘বারী মাল্টা-১’ ফলের বাগান বাণিজ্যিকভাবে গড়ে তুলেছি। আমার এই মাল্টা ফল বিষ ও ফরমালিন মূক্তসহ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। টাটকা ফলগুলো নিজ এলাকাতে চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলাতে সরবরাহ করা হচ্ছে। বর্তমান বাজারে ২শ থেকে ২২০/-টাকা পর্যন্ত কেজি বিক্রি হচ্ছে এই মাল্টা। আশা রাখি এই মাল্টা ফলগুলো প্রায় ৬ লাখ টাকা বিক্রি হবে। এই বাগানে প্রতিদিন ৫ জন কর্মচারী কাজ করেন। আমার এই মাল্টা ফলের বাগান এলাকাতে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

ক্ষেতলাল উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আলমগীর কবির বলেন, এই এলাকার কৃষকেরা ধান ও আলুর চাষ করতে বেশি অগ্রহী হয়। এই সব চাষাবাদ ছাড়াও অনেক ধরনে ফল বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে আধিক লাভবান হওয়া যায়। সেই চেষ্টাই করেছি এবং আমরা জামিলের মাল্টা ফলের বাগানের মাধ্যমে তা দেখছি। আমরা যা চেয়েছি, তার চেয়ে অনেক বেশি সফল হয়েছি। তিনি আর্থিকভাবে অনেক লাভবান হবেন।বিএসএস

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এমএস