আরাফাতুজ্জামান, ঝিনাইদহ থেকে: ঝিনাইদহ শহরের ব্যাপারী পাড়ার দ্বিতীয় তলা ভবনের ছাদে মনোরম ছাদ কৃষি গড়ে তুলেছেন তহমিনা ইসলাম জুথি নামে এক গৃহিনী। দৃষ্টিনন্দন ফুল আর নানারকমের ফলের সম্ভারে দারুণ প্রশান্তি খুঁজে নিয়েছেন তিনি।
কেউ গাছ লাগান শখে, কারো থাকে বহুমুখি প্রাপ্তির হিসাব। সবদিক বিবেচনায় ছাদকৃষি লাভজনক। উদ্যোম নিয়েই পাঁচ বছর ধরে ছাদকৃষি সাজাচ্ছেন তিনি।
জানা যায়, শহরের ব্যাপারীপাড়ার কুয়েত প্রবাসী সাহাজুল ইসলামের স্ত্রী জুথি। তার দ্বিতল ভবনের ছাদে রয়েছে। ২ স্তর বিশিষ্ট ছাদকৃষি। পরিষ্কার ঝকঝকে। গাছপালার এই প্রাচুর্যে যত না মন আটকে যায় তার চেয়েও অনেক বেশি আকৃষ্ট হতে হয় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতায়। বাসভবনের গোড়াতেই ছিল তার ছাদকৃষির স্বপ্ন। তাই বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক ছেলে সাজ্জাদুল ইসলাম ও মেয়ে রুকাইয়া ইসলামের কাছ পেয়েছেন সবরকম সহযোগিতা। কৃষির উপযোগী করে সাজানো হয় আগে থেকেই। তারপর ভালোলাগার সব ফল ফুলের এই কৃষিক্ষেত্র সাজিয়ে তুলছেন তিনি। তার সংগ্রহে রয়েছে কামরাঙ্গা, সরিফা, করমচা, আপেল কুল, বাউকুল, কাজুবাদামসহ প্রায় ৫০টি প্রজাতির ফলজ ও বনজ গাছ।
সম্প্রতি ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আছাদুজ্জামান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক ড. খান মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান, অতিরিক্ত উপ-পরিচালক শংকর কুমার মজুমদারসহ কৃষি কর্মকতারা তার ছাদ কৃষি পরিদর্শন করেন।
এ ব্যাপারে ড. খান মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, “কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রযুক্তিগত সকল প্রকার সহযোগিতা তাকে দেয়া হচ্ছে। ছাদ কৃষি করলে পোকামাকড়ের আক্রমণ ও রোগবালাই কম হয়। ছাদে মাত্র একবার মাচা তৈরি করে কয়েক বছর পর্যন্ত সবজি চাষ করা সম্ভব হয়। এতে তেমন কোনো সময় ও বাড়তি অর্থ খরচ করতে হয় না। মৌসুমে বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ করা যায় এবং ফলনও ভালো হয়। বিভিন্ন ধরনের সবুজ সবজি পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে সংসারের জন্য বাড়তি আয়ও এনে দেয়। সবচেয়ে বড় কথা পরিবারের জন্য বিষমুক্ত সবজির জোগান দেয়া সম্ভব।”
তাহমিনা ইসলাম জুথির এ সাফল্যকে অভিনন্দনও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে তাহমিনা ইসলাম জুথি বলেন, “শহর জীবনে সুস্থ সুন্দর ও ভালো থাকতে হলে ভাবতে হবে শহরের পরিবেশের কথাও। নানা কারণে শহর যখন উষ্ণ হয়ে উঠছে তখন বাড়ির ছাদে ছাদকৃষি করলে পরিবেশ ভালো থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, “প্রকৃতি আমাকে সহযোগিতা করেছে। নিজের লাগানো শতাধিক গাছের কাছে যখন আসি, মন প্রশান্তিতে ভরে যায়। এই গাছ, গাছের ফল আমার পরম যত্নে বেড়ে ওঠা সন্তানের মতো। আমি আর আমার পরিবার এই বিষমুক্ত, অরগানিক খাবার খেয়ে স্বস্তি পাই। আমি আমার বাড়ির ছাদে আনার, কামরাঙ্গা, পেয়ারা ও বেদানাসহ ফলের গাছ লাগিয়েছি। যে কারণে আমার কোনো ফল বাজার থেকে কিনতে হয় না।”
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম