টবেই লাগাতে পারেন রসালো ‘রক মেলন’

1750

রক-মেলন-01
এই গাছের সঠিক যত্ন এবং ফলের পরাগায়ণ ভালোমত হলে এক একটি গাছ থেকে ৮ থেকে ১২ টি পর্যন্ত ফল পেতে পারেন। পরাগায়নের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে হাতে পরাগায়ণ করতে পারেন। ফলের আকৃতি গোলাকার হবে এবং এক একটি ফলের ওজন ৫০০ থেকে ৮০০ গ্রাম অনেক ক্ষেত্রে এর চেয়ে বেশি ওজন হতে পারে। পরিপক্কভাবে ফল পাকার ২ থেকে ৩ দিন আগেই ফলটি গাছ থেকে কেটে সংরক্ষণ করতে পারেন এবং বাজারজাত করতে পারেন।

রক মেলন, সুইট মেলন, মাস্ক মেলন, হানিডিউ মেলন, গালিয়া মেলন ও পার্সিয়ান মেলন নামে পরিচিত এই সুস্বাদু ফল। আরবিতে অনেক দেশে সাম্মামও বলে থাকে এটিকে। এই ফল অনেক প্রজাতির হয়ে থাকে, রং ও আকৃতি যেমনই হোক ভিতরটা একদম আমাদের দেশি বাঙ্গির মতো এবং মিষ্টি-সুস্বাদু।

বীজ বপনের সময়:
রক মেলনের বীজ বপন করতে হয় গরমের সময়। এছাড়া, শীত আসার পূর্বে সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর এবং মার্চ থেকে জুন মাসেও করা যায়। তবে বিশেষভাবে লক্ষ রাখতে হবে বীজ থেকে চারা হবার পর যাতে অতি বৃষ্টির পানির মধ্যে এই গাছ না পড়ে।

মাটি:
যে কোন ভালো মানের মাটি যেমন বেলে মাটি, বেলে দোআশ মাটি। তবে মাটি অবশ্যই ঝুরঝুরে হতে হবে যাতে তলদেশ পর্যন্ত সেঁচের ব্যাবস্থা হয়। মাটির উপরের অংশে কোনভাবেই পানি জমতে দেয়া যাবে না।

বীজ বপন:
টবে লাগানোর ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১২ ইঞ্চি টবে বা এমন মাপের যে কোন পাত্রে মাটির আধা ইঞ্চি নিচে দুটি বীজ বপন করতে হবে। মাটি পরিমাণে কম হলেও এর মধ্যে যথেষ্ট পরিমান জৈবসার এবং জৈব উপাদান বিদ্যমান থাকতে হবে। পাত্রের মাটি সবসময় ঝুরঝুরে রাখতে হবে এবং ভালো হবে টব বা পাত্রের মাটির উপরের অংশ কোন প্লাষ্টিক কাগজ বা ভালো গেঞ্জির কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখলে।

রক-মেলন
একটি টবে দুই থেকে তিনটি বীজ বপন করতে হবে। বীজ অথবা চারা রোপন শেষে হালকা সেঁচ দিতে হবে। টবে যাতে অতিরিক্ত পানি না জমে। মাটির উপরের অংশ অবশ্যই মালচিং করতে হবে। প্লাস্টিক কাগজ বা মোটা কাগজ অথবা মোটা গেঞ্জির কাপড় দিয়ে ও সিমেন্টের ব্যাগ দিয়ে এই মালচিং করতে পারেন।

৫ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই অনেক সময় তাপমাত্রা কম হলে ১২ থেকে ১৫ দিন সময় লাগতে পারে। বীজ অঙ্কুরোদগম হওয়ার পর থেকে ৭০ থেকে ৮০ দিনে ফুল আসে এবং ১০০ দিনের মধ্যে পরিপূর্ণ ফল পাওয়া যায়।

চারা অঙ্কুরোদগম হওয়ার পর থেকে ২ থেকে ৩ দিন পর পর হাল্কা সেঁচ দিতে হবে এবং কোন অবস্থাতে সেঁচ এমনভাবে দেওয়া যাবে না যে পাত্রে অথবা চারার নিচে পানি জমে থাকে। ফুল আসার সাথে সাথে সেঁচ প্রতি একদিন পর পর দিতে পারলে ভাল। ২ থেকে ৩ দিন পর পর দিলেও চলবে।

যেহেতু এটি একটি লতা জাতীয় গাছ এবং এর লতা দ্রুত বৃ্দ্ধি পায় তাই এর লতা ধারনের জন্য অতিরিক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। দুইভাবে এর ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। মাচা পদ্ধতি বা মাটিতে খড়কুটো বিছিয়ে দিয়ে।

পরিচর্যা:
এই ফলে হলুদ মাছি পোকা এসে গাছের পাতা ফুটো করে দেয়, পাতা এবং কান্ডের রস টেনে গাছের ক্ষতি করে এবং ফল আসার পরে ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণ হয়। তাতে ফল পঁচা রোগের সৃষ্টি হয় এবং ফল পঁচে যায়, সমাধান হলো- মাটি এবং গাছ প্রতিদিন লক্ষ্য রাখতে হবে। মাছি যাতে না আসে তার জন্য প্রায়শ জৈব বালাই নাশক নিতে হবে। ফল যাতে ছিদ্র না করতে পারে তার জন্য ফল আসার সাথে সাথেই আপনার গাছের ফলটি পলি ব্যাগ দিয়ে ঢেকে দিতে পারেন।রক-মেলন022

ফলন:
এই গাছের সঠিক যত্ন এবং ফলের পরাগায়ণ ভালোমত হলে এক একটি গাছ থেকে ৮ থেকে ১২ টি পর্যন্ত ফল পেতে পারেন। পরাগায়নের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে হাতে পরাগায়ণ করতে পারেন। ফলের আকৃতি গোলাকার হবে এবং এক একটি ফলের ওজন ৫০০ থেকে ৮০০ গ্রাম অনেক ক্ষেত্রে এর চেয়ে বেশি ওজন হতে পারে। পরিপক্কভাবে ফল পাকার ২ থেকে ৩ দিন আগেই ফলটি গাছ থেকে কেটে সংরক্ষণ করতে পারেন এবং বাজারজাত করতে পারেন।

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/ মোমিন