টাঙ্গাইল (বাসাইল): বাসাইলে আমন ধান কাটার ভরা মৌসুমেও পানিতে ভাসছে কৃষকের স্বপ্ন। টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার পাকা আমন ধানের বিস্তীর্ণ সোনালী মাঠগুলো এখনো ডুবে আছে গভীর পানিতে। যেন মাথা উঁচু করে শুধু জেগে আছে সোনালি ধানের শীষগুলো।
এবার আমন ধানের বাম্পার ফলনে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের মুখে হাসি ফুটলেও দ্রুত পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় আমন ধান কাটার ভরা মৌসুমেও পানিতে ভাসছে কৃষকের স্বপ্ন। পাকা ফসল ভরা মাঠের ধান কাটা নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে কৃষক। পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত সু-ব্যবস্থা না থাকায় ধান ভরা মাঠ থেকে নামছে না পানি। দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট। ধানের ক্ষেতে কোমর বা বুক পানি থাকায় শ্রমিকরা ধান কাটতে মাঠে নামতে পারছে না। বেশি টাকা দিয়েও মিলছে না ধান কাটার শ্রমিক। এ অবস্থায় আশায় বুক বাধা কৃষকরা মাঠের পাকা ধান ঘরে তোলা নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন। অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে চলতি বছরের সরিষা, কলাইসহ রবি শস্য ও মৌসুমী সবজি আবাদ।
বীজতলার উপযোগী জমি পানিতে নিমজ্জিত থাকায় কৃষকরা সময় মতো তৈরি করতে পারছে না বীজতলা। ফলে আগামী বুরো মৌসুমের চারা উত্পাদনেও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এসব মিলিয়ে উপজেলার কৃষককুল দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এমতাবস্থায়, বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে শঙ্কিত স্থানীয় কৃষি বিশ্লেষকরা।
এ ব্যাপারে বাথুলী সাদী, ময়থা, ফুলকী, করটিয়া পড়া ও কাউলজানীর কয়েকজন কৃষক বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে। তবে এসব বিস্তৃত এলাকার পানি নিষ্কাশনের অভাবে এখনো ধানের ক্ষেতগুলোতে বুক অবধি পানি জমে থাকায় ধান কাটা যাচ্ছে না। সময় মতো পানি চলে না যাওয়ায় এসব জমিতে মনে হয় সরিষার আবাদও করা যাবে না। এমনকি আগামী বুরো মৌসুমের ইরি-বোরো ধানের চারা উত্পাদনও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। এ অবস্থায় আমরা কি করব বুঝে উঠতে পারছি না।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল ফারুক জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগে কিছু এলাকায় ফসলহানি হলেও বোনা আমনের ফলন ভালো হওয়ায় মৌসুমের নির্ধারিত উত্পাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
স্থানীয় এমপি ও উপজেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলে ফসলের মাঠে আটকে যাওয়া পানি দ্রুত নিষ্কাশনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এসব বিলের পানি নিষ্কাশনের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে, এলাকার ফসল উত্পাদন চরমভাবে ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যার ফলে এলাকার চাহিদা অনুযায়ী খাদ্য-শস্যেরও ঘাটতি দেখা দিতে পারে এমনটাই মনে করছেন কৃষি বিশ্লেষকরা।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম