টার্কি পালন করে স্বাবলম্বী বাড্ডার মিরাজ হোসেন

1222

[su_slider source=”media: 1092,1093,1094,1095,1096″ target=”blank” width=”400″ height=”200″ title=”no” pages=”no” mousewheel=”no” class=”post_slider”]

ফার্মস এন্ড ফার্মার ২৪.কম ডেস্ক: টার্কি নামটা আমাদের দেশে অনেকের কাছে অজানা থাকতে পারে। কিন্তু বিদেশে এটা একটা জনপ্রিয় নাম। টার্কি মূলত এক ধরনের পাখি। যদিও আমাদের দেশের পোল্ট্রি বিজ্ঞানীরা টার্কিকে পোল্ট্রির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। তাই বাংলাদেশে এই টার্কি পাখিকে টার্কি মুরগী বলেই জানে। টার্কির বাচ্চা দেখতে আমাদের দেশের মুরগীর বাচ্চার মতই। টার্কি মূলত আমেরিকা ও মধ্য আমেরিকার বনাঞ্চলে বাস করত। তবে বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টার্কি মুরগীকে গৃহপালিত পশুর মতই লালন পালন করা হয়। পুরুষ টার্কি স্ত্রী টার্কির তুলনায় আকৃতিতে বড় হয় এবং অনেক বেশি আকর্ষণীয় রঙের হয়ে থাকে। বড় পুরুষ টার্কির মাথা ন্যারা থাকে এবং গলার কাছে উজ্জল লাল রঙের হয়। একটি পুরুষ টার্কি ১৩০ সে.মি. লম্বা হয় এবং ওজন হয় ১০-১২ কেজি। তবে পুরুষ টার্কির তুলনায় স্ত্রী টার্কি আকৃতিতে ছোট হয় এবং ওজনে কম হয়। একটি স্ত্রী টার্কি বছরে ৮০-১০০ টি ডিম দেয়। ১৯৫০ সালে ব্রিল্যান্ড স্ট্রিক নামক একজন ইংরেজ নাবিক কিছু টার্কি আমেরিকা থেকে ইংল্যান্ডে নিয়ে আসে। তার পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই টার্কি মুরগীর লালন পালন শুরু হয়।

বর্তমানে বাংলাদেশেও খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই টার্কি মুরগী। এক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে অবদান রেখেছে “মিরাজের টার্কি ফার্ম”। রাজধানীর বাড্ডার সাতারপুল রোডের পূর্ব পদরদিয়া এলাকার বাসিন্দা বিদেশ ফেরত মিরাজ হোসাইনের এই ফার্মটি। তিনি ২০১৫ সালের মাঝামাঝিতে মাত্র ৬টি টার্কি দিয়ে এই ফার্মটি শুরু করে। বর্তমানে তারা ফার্মে ২-৩ মাস বয়সী ১৫০ টি এবং ৭-৮ মাস বয়সী ৪৬ টি টার্কি রয়েছে। ৪৫ দিনের একজোড়া বাচ্চার দাম ২৫০০-৩০০০ টাকা এবং বড় একজোড়া টার্কির দাম ১০-১২ হাজার টাকা। এছাড়া প্রতিটি ডিম বিক্রি হয় ১৫০ টাকা। সেক্ষেত্রে টার্কি মুরগীর পালন লাভজনক।

ফার্মস এন্ড ফার্মার ২৪.কম এর প্রধান সম্পাদক এম.শফিকুল ইসলাম এবং সম্পাদক নিমাই চন্দ্র কর (অজয়) এর সাথে আলাপকালে মোঃ মিরাজ হোসেন বলেন, আমি বিদেশ থেকে আসার পরে আত্নকর্মসংস্থান হিসাবে কি করা যায় ভাবি। বিভিন্ন পত্র পত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়া ঘাটাঘাটি করি। পরবর্তীতে আমি অনলাইন মিডিয়ার মাধ্যমে এই টার্কি সম্পর্কে জানতে পারি। তারপর আমি টার্কি পালনের উপর কিছু প্রশিক্ষণ গ্রহন করে মাত্র ৬ টি টার্কি নিয়ে আমি এই টার্কি ফার্মটি শুরু করি। আমার ইচ্ছা আছে বানিজ্যিক ভাবে সারা বাংলাদেশে এটাকে ছড়িয়ে দেওয়া। বর্তমানে আমার নিকট থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গার লোক টার্কি নিয়ে টার্কি ফার্ম গড়ে তুলেছে। এই টার্কি মুরগীর মাংস মানুষের কাছে খুব সুস্বাদু হয়ে উঠেছে এবং ঢাকার বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে ও সুপার সপগুলোতে পওয়া যাচ্ছে। টার্কির রোগ-প্রতিরোধ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পারিপার্শ্বিক অবস্থা, পরিবেশ, ঘর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও নিয়মিত খাবার দিলে টার্কি মুরগী তেমন মারাত্নক কোন ক্ষতি হয় না। তবে রোগ-প্রতিরোধের ভ্যাকসিন দিয়ে নেওয়া ভালো। বাচ্চা উৎপাদন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমানে আমি সার্ডেন লিংক এর বাপ্পী হাজারীর নিকট থেকে ৪০০ টি বাচ্চা উৎপাদন ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন ইনকিউবেটরের মাধ্যমে বাচ্চা উৎপাদন করছি। ইনকিউবেটরের মাধ্যমে ২৮ দিনে বাচ্চা উৎপাদন হয় এবং প্রতিমাসে আমার এখানে ২০০-২৫০ টি বাচ্চা উৎপাদন হচ্ছে। এছাড়া দেশী মুরগীর সাহায্যে সনাতন পদ্ধতিতেও ২৮ দিনে বাচ্চা উৎপাদন করা সম্ভব। তাই সর্বশেষ আমি বলতে চাই, দেশের মানুষের প্রানীজ প্রোটিনের চাহিদা পুরনের ক্ষেত্রে পোল্ট্রির পাশাপাশি টার্কি মুরগী বিরাট ভূমিকা রাখবে এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নাই।