টিউলিপ চাষাবাদের উত্তম পদ্ধতি

88

বাংলাদেশেও বাণিজ্যিক ভিত্তিতে টিউলিপ উৎপন্ন করা সম্ভব। কৃষি-কৃষ্টির আজকের আয়োজন এর নানা দিক নিয়ে টিউলিপ চাষের জন্য বাংলাদেশের আবহাওয়া খুব একটা উপযুক্ত নয়। কেননা এই গাছ যতটা নিম্নি তাপমাত্রায় হয়, বাংলাদেশের তাপমাত্রা ততটা নিচে নামে না। তাই টিউলিপ চাষের ক্ষেত্রে এ দেশে এখন পর্যন্ত শুধু গবেষণা চলছে। গবেষণার পাশাপাশি টিউলিপ চাষের চেষ্টাও চলছে।

চাষের জন্য টিউলিপ বাল্বকে মাটিতে লাগানোর আগে অবশ্যই কোল্ড শক দিতে হবে। এরপর টিউলিপ বাল্বকে বছরের সবচেয়ে শীতল সময়ে লাগাতে হবে। ফুল ফুটলে একটি নির্দিষ্ট সময়ে বাল্বকে উঠিয়ে ফেলতে হবে এবং নতুন করে বাল্ব লাগাতে হবে। শীতপ্রধান দেশে কোল্ড শক দেওয়ার জন্য ফ্রিজে রাখার প্রয়োজন পড়ে না। আমাদের দেশে বাল্বগুলোকে ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা পরিবেশ দিতে হবে। সুন্দর ফুল ফোটানোর জন্য টিউলিপের ক্ষেত্রে আট থেকে ১৪ সপ্তাহের শীতল তাপমাত্রা প্রয়োজন।

টিউলিপ বাল্ব লাগাতে হবে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে। কারণ সেপ্টেম্বরের আগে শীতনিদ্রার জন্য প্রস্তুত থাকে না ফুলগাছটি। বাল্বগুলো লাগানোর আগের মুহূর্ত পর্যন্ত ফ্রিজেই রাখতে হবে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যে স্থানে লাগানো হবে সেটি অবশ্যই শীতলীকরণ করতে হবে। সূর্যের নিচে কিছুতেই রাখা যাবে না। টিউলিব বাল্ব ছয় থেকে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচের তাপমাত্রার মাটিতে লাগানো উচিত। এতে শিকড় গজাতে সুবিধা হয় এবং এক্ষেত্রে মাটি ঝরঝরে হতে হবে। কম্পোস্ট সার মিশিয়ে লাগালে ভালো ফুল পাওয়া যাবে। কেউ যদি টবে লাগাতে চান তাহলে বড় টব ও মাটির বেশ গভীরে লাগাতে হবে বাল্বগুলো। বাল্বগুলো যাতে বেশি গরম না হয় সেজন্য মাটির খুব গভীরে লাগানো হয়।

চার থেকে ছয় সপ্তাহ সময় লাগে শিকড় হওয়ার জন্য। আমাদের দেশের তাপমাত্রা শিকড় গজানোর বেলায় খুব একটা অনুকূল নয়। তাই চেষ্টা করতে হবে ফ্রিজেই যেন শিকড় গজায়। শিকড় গজালে গাছাটি বসন্তের তাপমাত্রার জন্য তৈরি হয়ে যায়।

মাটিতে লাগানোর পর সেই জায়গায় একটি চালার মতো ছাউনি করে দিতে হবে, যাতে বাল্ব সূর্যের তাপে গরম না হয়। নিয়মিত পানি দিয়ে মাটির তাপমাত্রা কমিয়ে আনতে হবে। আবার গাছের গোড়ায় পানি জমলে বাল্ব নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তাই ড্রেন তৈরি করতে হবে পানি নিষ্কাশনের জন্য। মোটকথা গোড়ার মাটি হাল্কা ভেজা থাকলেই হবে।

বিদেশ থেকে টিউলিপ সংগ্রহ করা হলে বাল্বগুলো শীতের মাঝামাঝিতে সরাসরি মাটিতে লাগালে চলবে। কেননা বিদেশের বাজারে যে বাল্বগুলো পাওয়া যায়, সেগুলোতে কোল্ড শক দেওয়া থাকে।