ডিম ফুটার জন্য সঠিক তাপমাত্রা রাখার পাশাপাশি সঠিক আদ্রতা বজায় রাখাটাও বেশ জরূরী। ডিম ফুটার জন্য সঠিক আদ্রতা যেনে রাখতে হবে সেই সম্পর্কে জানতে হলে প্রথমে আমাদের আদ্রতা সম্পর্কে জানতে হবে।
বাতাসের আদ্রতা সম্পর্কে আমরা জানি, বাতাসে জ্বলীয় বাস্পের উপস্থিতিকে বাতাসের আদ্রতা বলে।
ডিম ফুটার জন্য সঠিক সময়ে ডিম সঠিক পরিমাণে শুকানো বেশ জরুরী, যেহেতু ডিমের ভিতর জ্বলীয় পদার্থ থাকে তাই সেই জ্বলীয় পদার্থ শুকানোর সহজ উপায় হচ্ছে ডিমের সংস্পর্শে শুষ্ক পদার্থ আনা, ইনকিউবেটরে সেই কাজটাই শুষ্ক বাতাসের দ্বারা করা হয়। বাতাস এবং ডিমের তাপমাত্রা সমান রেখে সেই বাতাসকে ডিমের সংস্পর্শে আনলে বতাস সেই ডিমের তরল শুষে নেবে। কিন্তু বাতাসে যদি পূর্বে থেকেই পানির অনু থাকে তাহলে শুস্ক বাতাস অপেক্ষা ভিজা বতাসের পানি শোষনের ক্ষমতা কমে যায়।
যেমন বর্ষাকালে ভিজা কাপড় দেরিতে শুকানোর কারন হচ্ছে বর্ষাকালে বাতাসের আদ্রতা বেশি থাকে। এখানে আমরা বুঝলাম ইনকিউবেটরের ভিতরে সমান তাপমাত্রা রেখে বাতাসে যদি আদ্রতা কম রাখি তাহলে ইনকিউবেটের ভিতর ডিম দ্রুত শুকাবে। কিন্তু ইনকিউবেটরে ডিমের বয়সের সাথে সাথে ডিম শুকানোটাই সব চেয়ে ভালো। মূলত হেচিং এর সময় অপেক্ষা হেচিংএর আগে আদ্রতা কম রাখা হয় কারণ ডিমকে হেচিংএর আগেই সঠিক পরিমানে শুকাতে হয়, হেচিংএর সময় আদ্রতা কম রাখলে ডিম শুষ্ক হয়ে ডিমের ভিতর বাচ্চার শরীর আটকে যায়। আমরা ডিম পরিক্ষার জন্য কিছুদিন পর পর অন্ধকার ঘরে ডিমের অপর পিষ্ঠে টর্চ লাইটা দিয়ে ডিমের ভ্রুনের গঠন সম্পর্কে জেনে থাকি।
কিন্তু আমরা যদি সেই ক্যান্ডালিংএ গুরুত্ব দিয়ে এটা দেখি যে ডিম কতটুকু খালি হলো তাহলে আমরা সহজেই বুঝতে পারবো ডিমে সঠিক আদ্রতা থাকছে কিনা। ইনকিউবেটরে ডিম দেবার দিন থেকে হেচিং এর আগ পর্যন্ত ডিমকে ৮%থেকে ১২% পর্যন্ত শুকাতে হবে তবেই সেটা নিরাপদে হেচিং হবে। অর্থাৎ ডিমের ভিতর যে পরিমান জাগয়া থাকবে তার ৮থেকে ১২ভাগ ফাঁকা হতে হবে। ডিমের তরলের কত ভাগ শুকিয়েছে সেই বিষয়টা ডিমের অপর পিষ্ঠে টর্চ লাইট দিয়ে সহজেই অনুমান করা যায়। ডিম দেবার আগে পরিক্ষা করে নেবেন ডিমের ভিতর শুন্যস্থানের পরিমান কতটুকু, এর পরে ৭এবং ১২তম দিনে ক্যন্ডালিং এর সময় যদি দেখেন ডিমের তরল ঠিক তেমনই আছে তখন বুঝবেন আদ্রতা বেশি থাকছে, অথবা ঐ ডিমের কাছে আদ্রতা বেশি থাকছে।
এবং ১২তম দিনে যদি দেখেন ডিমের অর্ধেক খালি হয়েছে তখন বুঝবেন আদ্রতা কম থাকছে। আদ্রতা খুব বেশি দেখলে শুষ্ক বস্তু বা ছাই, মুড়ি, ইত্যদি দিয়ে যতটা সম্ভব আদ্রতা কমিয়ে রাখবেন তাহলে প্রথমের সেই বেশী আদ্রতা হেচিংএর সময় বাচ্চার মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়াতে পারবেনা। আদ্রতা যদি কম দেখেন তাহল একটা কাপড় ভিজিয়ে এর পরে সেই কাপড়ের পানি চিপে ফেলে দিয়ে, সেই হালকা ভিজা কাপড় ইনকিউবেটরের ফাকা স্থানে শুকাতে দেবেন, এতে সেই কাপড়ের পানি বাতাসে মিশে গিয়ে ইনকিউবেটরের ভিতর আদ্রতা বাড়িয়ে তুলবে।
যার ফলে প্রথমের খুব কম আদ্রতা হেচিংর সময় তেমন প্রভাব ফেলতে পারবেনা। আদ্রতা কমানো বা বাড়ানো যদি খুব কঠিন হয়ে পড়ে তাহলে যতটা সম্ভব কমিয়ে বা বাড়িয়ে রাখতে হবে, এতেও হেচিংএর সময় এর উপকারিতা পাওয়া যাবে।
ফার্মসএন্ডফার্মার/০৩মার্চ২০