বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন বিপিএ এর উদ্যোগে ২০ ই ফেব্রুয়ারি রোজ মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি সাগর রুনি হল সেগুনবাগিচা ঢাকা । ডিম মুরগি পরিবহনের গাড়ির খাঁচার অনুমোদন চেয়ে সংবাদ সম্মেলন প্রান্তিক খামারিদের রক্ষায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। সামনে পবিত্র রমজান মাসে ডিম ও মুরগীর দাম ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকবে। তবে সব সময়ের জন্য ডিম মুরগির বাজারে স্বস্তি রাখতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পৃষ্ঠপোষকতায় বিপিএ এর উদ্যোগে ন্যায্য মূল্যে ডিম ও মুরগি বিক্রয় কার্যক্রম কে আরো প্রসারিত করার লক্ষ্যে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন।
কর্পোরেটদের সুপার ম্যাজিকে ছোট এবং মাঝারি উদ্যোক্তারা টিকে থাকা দায়
এখন রমজানের আগে ডিম মুরগির দাম বাড়ার পিছনে কারন হলো কর্পোরেট গ্রুপের সকল ধরনের মুরগির বাচ্চা আমদানি অনুমতি থাকলেও কর্পোরেট সিন্ডিকেটের যোগসাজসে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে প্রান্তিক খামারিদের মুরগির বাচ্চা আমদানি নিষিদ্ধ করেছে। প্রান্তিক খামারিদের মতামত না নিয়ে শুধু কর্পোরেট সিন্ডিকেটকে সুবিধা দিয়ে ২৮ থেকে ৩০ টাকা উৎপাদন খরচের মুরগীর বাচ্চার দাম প্রানিসম্পদ অধিদপ্তর ডি এল এস দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে ৪৯ থেকে ৫২ টাকা। কর্পোরেট গ্রুপ গুলো মুরগির বাচ্চার উৎপাদন কমিয়ে দিয়ে তারা তাদের চাহিদা মত নিজস্ব খামারে বাচ্চা তুলেছেন এবং কন্টাক্ট খামারিদের বাচ্চা দিয়েছেন অবশিষ্ট বাছাইকৃত নিম্ন মানের বাচ্চাগুলো অতিরিক্ত দামে তাদের পরিবেশকের মাধ্যমে প্রান্তিক খামারিদের কাছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রয় করেন। যার খেসারত দিতে হচ্ছে ভোক্তা ও প্রান্তিক খামারীদের কে। কর্পোরেট গ্রুপ গুলো মুরগির বাচ্চার কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ও অযৌক্তিক পোল্ট্রি ফিডের দাম বাড়িয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে অন্য দিকে প্রান্তিক খামারিরা লস করে উৎপাদন থেকে সরে যাচ্ছে । গত তিন মাস যাবত প্রান্তিক খামারিরা মুরগীর বাচ্চা কিনতে না পেরে তারা খামার বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন এবং মুরগির সংকট সৃষ্টি হয়েছে যার কারণে মুরগি ও ডিমের দাম বেড়েছে। এখন বাজারে যে পরিমাণ মুরগি আছে এগুলো বেশির ভাগ কোম্পানির নিজস্ব উৎপাদন এবং তাদের কন্টাক্ট ফারমিং এর মুরগী । খামারিদের মুরগি বাজারে আসলে ম্যাজিকের মত দাম কমে যায়। প্রান্তিক খামারিদের ন্যায্য মূল্য দিয়ে উৎপাদনে ধরে রাখতে না পারলে কখনই ডিম মুরগির বাজারে স্বস্তি ফিরবে না
বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ, পুলিশের আইজিপি মহোদয় ,র্যাবের মহাপরিচালক মহোদয় , ও ডি এম পি কমিশনার, স্যার সহ সকলকে অবগত করছি । ডিম ও জীবন্ত মুরগির পরিবহনের জন্য মুরগি ও ডিমের গাড়ির ক্যারিয়ারের বিআরটিএ থেকে অনুমোদন দিয়ে পুলিশি হয়রানি ও রাস্তায় চাঁদাবাজি বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছি ।
কর্পোরেট গ্রুপগুলোর ডিম মুরগি পোল্ট্রি ফিড মুরগির বাচ্চা পরিবহন করার জন্য বিআরটিএ থেকে গাড়ির অনুমোদন থাকলেও। প্রান্তিক খামারিদের ডিমের গাড়ির ক্যারিয়ার ও মুরগি পরিবহন করার জন্য মুরগির খাঁচার বিআরটিএ থেকে অনুমোদন দেয়া হয় না। বিআরটিএ থেকে মুরগির খাঁচা ও ডিমের গাড়ির অনুমোদন না দেয়ায় সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে অন্যদিকে ডিম মুরগির গাড়ি গুলো ঠিকই রাস্তায় চলছে যেমন ট্রাফিক বিভাগ,হাইওয়ে পুলিশ, থানার চেকপোস্ট পুলিশের,সারা দেশের কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তা সবাইকে ম্যানেজ করে মাসিক চাঁদা দিয়ে চলতে হয়। স্থানীয় চাঁদাবাজদের কবলে পড়তে হয় এবং মাসিক চাঁদা দিয়েও গাড়িগুলো দিনের বেলা চলাচল করতে না পারার কারণে ডিম ও মুরগি পরিবহন করতে প্রতিবন্ধীকতা সৃষ্টি হয় এবং রাতে চলাচল করার কারণে এই গাড়িগুলো ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে যার জন্য আমাদের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় ডিম ও মুরগি পরিবহন খরচ বেড়ে যায় এবং ডিম মুরগির দামও বেড়ে যায় তাই ডিম ও মুরগি পরিবহন করার জন্য মুরগির খাঁচার অনুমোদন দিয়ে সহযোগিতা করুন। যাতে করে বাধাহীন ঢাকা সহ সারা দেশে ডিম ও মুরগির গাড়ি সহজে চলতে পারে। যাতে করে ডিম মুরগির বাজারে স্বস্তি চলে আসবে
কর্পোরেট স্বেচ্ছাচারিতায় প্রান্তিক খামারীদেরকে নিঃস্ব করে পোল্ট্রি ফিড মুরগির বাচ্চায় বছরে ৫০০০ হাজার কোটি টাকা লুট
প্রান্তিক পোল্ট্রি শিল্পের সংকট কাটিয়ে খামারিদের উৎপাদনে ফিরিয়ে আনতে কর্পোরেট সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিতে হবে। প্রান্তিক খামারিদেরকে নিঃস্ব করে পোল্ট্রি ফিড ও মুরগীর বাচ্চায় গুটি কয়েক কোম্পানি মিলে মাফিয়া চক্র গড়ে তুলেছেন শিল্প দখলের চেষ্টা করছে। সকল কম্পানি বছরে ৮০ লাখ টন পোল্ট্রি ফিড উৎপাদন করে যদি পার কেজি ফিডে ৫ টাকা অতিরক্ত মুনাফা করে তাহলে প্রায় ৪০০০ কোটি টাকা হয় এবং সকল ধরনের মুরগির বাচ্চা প্রতি সপ্তাহে উৎপাদন হয় ২কোটি তাহলে ৫২ সপ্তাহে ১০৪ কোটি বাচ্চা হয় প্রতি বাচ্চায় যদি ১০ টাকা অতিরক্ত মুনাফা করা হয় তাহলে ১০৪০ কোটি টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করে । আমরা অতি টাকা কম ধরে হিসাব করেছি তবে কোম্পানি গুলো পার কেজি পোল্ট্রি ফিডে ১০ থেকে ১৫ টাকা ও প্রতি পিস মুরগির বাচ্চায় ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি নিচ্ছে ।পোল্ট্রি ফিড ও মুরগীর বাচ্চায় সিন্ডিকেট করে মোট অতিরিক্ত মুনাফা করে ৫০০০ কোটি টাকা।খামারিদের কাছ থেকে অতিরিক্ত লাভ করে তাদের ফিড ও মুরগীর বাচ্চা বিক্রয়কারী পরিবেশকদের প্রলবন দেখিয়ে ২ কোটি ৫ কোটি ১০ কোটি ১০ লাখ ৫০ লাখ টাকা ক্রেডিট ও অতিরিক্ত মুনাফা দিয়ে থাকেন বিভিন্ন রকম বড় বড় গিফট ও নামি দামি হোটেলে পরিবেশক সম্মেলন এবং বিভিন্ন দেশে ট্যুরের আয়োজন করেন । অন্যদিকে প্রান্তিক খামারিদের ডিম মুরগির উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় ন্যায্য মূল্য না পেয়ে খামার বন্ধ করে বেকার হয়ে পড়ছেন অনেক যুবক সরকাররের কর্পোরেট গ্রুপের সকল সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করে দিয়ে প্রান্তিক খামারিদেরকে সুযোগ-সুবিধা দিয়ে উৎপাদনে ধরে রাখতে হবে এবং ৫০ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান রক্ষা করতে হবে ।
প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারিদের সংকট ওকরণীয়।
১/ সকল ডিম মুরগির খামারিদের ডাটা বেজ তৈরি করে আইডি কার্ড প্রধান করতে হবে। খামারি যার মাধ্যমে ব্যাংক ঋণ সহ সরকারী
সকল সুযোগ সুবিধা পাবে।
২/প্রান্তিক খামারীদের ডিম মুরগী পরিবহন করার জন্য বি আর টি এর মাধ্যমে মুরগির গাড়ির জন্য খাঁচার অনুমোদন দিতে হবে এবং ডিমের গাড়ির জন্য ক্যারিয়ারের অনুমোদন দিতে হবে
৩/ মুরগির বাচ্চা কম্পানির উপরে নির্ভর না করে। সরকারি হ্যাচারি গুলোই ব্রয়লার সোনালী ও লেয়ার বাচ্চা উৎপাদন করে খামারীদের ন্যায্যমূল্যে দিতে হবে। সরকারি ভাবে ৮ বিভাগে ৮ টি ফিড মিল গড়ে তুলতে হবে যাতে কম্পানির উপড়ে নির্ভর না করে খামারিরা ন্যায্য মূল্যে ফিড ক্রয় করতে পারে।
৪/ মুরগির বাচ্চাও পোল্ট্রি ফিড আমদানি বন্ধ না করে। আমদানির অনুমতি রাখতে হবে তাহলে দেশীয় কোম্পানিগুলো মুরগির বাচ্চা সঠিক দামে বিক্রয় করবে।
৫/ নিরাপদ ডিম ও মুরগি উৎপাদন করতে দেশের সকল পোল্ট্রি খামারীদেরকে ট্রেনিং এর আওতায় নিতে হবে। সকল ফিড কোম্পানিকে তদারকি করে নিরাপদ ফিট উৎপাদন করতে বাধ্য করতে হবে যাতে দেশের মানুষ নিরাপদ ডিম ও মুরগি দিয়ে আমিষের চাহিদা পূরণ করতে পারে।
৬/ সকল জেলা উপজেলায় কৃষি বিপণনের মাধ্যমে বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে যাতে উৎপাদনকারী খামারী ন্যায্য মূল্য পাবে এবং ভোক্তা ন্যায্যমূল্যে খাবে।
৭/ ২০০৮ পোল্ট্রি নীতিমালায় যে সকল খামারিদের জন্য সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়েছে তা বাস্তবায়ন করতে হবে।
৮/ কোম্পানির কন্টাক ফরমিং বন্ধ করতে হবে এবং কোম্পানির ডিম মুরগি উৎপাদন বন্ধ করতে হবে তা না হলে কোম্পানি এবং খামারির উৎপাদন খরচে ডিফারেন্ট হয় আর এই ডিফারেন্সের কারণে খামারি ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়। খামারীর জাতে সব সময়ের জন্য প্রফিট যুক্ত ব্যবসা করতে পারে এবং উৎপাদন ন্যায্য মূল্য পায় তাহলে দেশে ডিম মুরগির ঘাটতি হবে না এবং আমদারির প্রয়োজন হবে না।
৯/ সরকার ঘোষিত খামারিদের জন্য যে ঋণ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষণায় তা যাতে সকল ব্যাংক বাস্তবায়ন করে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে এবং খামারিদেরকে দাদন ব্যবসা থেকে মুক্ত করতে হবে এবং ব্লাঙ্ক চেকের মামলা থেকে খামারিদেরকে মুক্ত করতে হবে।
১০/ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন একত্রিত কাজ করতে হবে এবং সকল প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের অফিসারগণকে খামারিদের পক্ষে কাজ করতে হবে খামারিদের দ্বারে দ্বারে যেতে হবে এবং তাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে এবং সকল খামারীকে তারা যাতে সেবা দেন এবং সকল ধরনের ভ্যাকসিন সরকারের পক্ষ থেকে দিতে হবে।
১১/ পোল্ট্রি ব্যবসায় কোন প্রকার ব্যাংক চেক জামানত নেওয়া যাবে না। সকল পোল্ট্রি খামারি পোল্ট্রি ফিড ডিম ব্যবসায়ী মুরগির ব্যবসায়ী সকলকে সরকারি নিবন্ধনের আওতায় নিতে হবে এবং সবাই ট্রেড লাইসেন্স এর আওতাভুক্ত থাকবে এবং বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের আওতাভুক্ত সকলকে থাকতে হবে ব্যবসায়ী
১২/ প্রান্তিক খামারীদের জন্য পরিবেশ ছাড়পত্র তুলে নিতে হবে এবং প্রান্তিক খামারীদের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে যাতে পরিবেশ দূষিত না হয় সে পদক্ষেপ নিতে হবে।
১৩/পোল্ট্রিতে দাদন ব্যবসা বন্ধ করতে হবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষিত পোল্ট্রি শিল্পের প্রান্তিক খামারিদের ক্ষুদ্রঋণের ব্যবস্থা করতে হবে এবং সকল পোল্ট্রি খামারি পোল্ট্রি ফিড ব্যবসায়ী ডিম ব্যবসায়ী মুরগির ব্যবসায়ী সকলের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষিত জামানত বিহীন ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করতে হবে সকল তফসীল ব্যাংকের মাধ্যমে।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করবেন সংগঠনের সভাপতি সুমন হাওলাদার , সহ সভাপতি বাপ্পি কুমার দে , সাধারন সম্পাদক ইলিয়াস খন্দকার,সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেন ,যুগ্ন সাধারন সম্পাদক মোঃ কাওসার আহমেদ, জাতীয় যুব পুরুস্কার প্রাপ্ত খামারি ,দপ্তর সম্পাদক মেজবাহ মারফি , উপ প্রচার সম্পাদক মোঃ আব্দুর রউফ ,এবং আরো উপস্থিত থাকবেন সকল জেলা উপজেলা থেকে প্রান্তিক ডিলার খামারি গন।