তামাক ছেড়ে তুলা চাষের দিকে ঝুঁকছেন পার্বত্যাঞ্চলের কৃষকরা

862

%e0%a6%a4%e0%a7%81%e0%a6%b2%e0%a6%be

তামাক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হলেও অর্থকারী হওয়ায় যুগ-যুগ ধরে রাঙামাটির পার্শ্ববর্তী বান্দরবানের লামা উপজেলায় এ চাষ করে আসছে অধিকাংশ কৃষক। বিকল্প চাষাবাদের কথা কখনো ভাবেননি তারা। তবে সময়ের পরিবর্তনে অনেকে বিষয়টি বুঝেছেন এবং তারা তামাকের বিকল্প চাষা খুঁজতে শুরু করেছেন। রাঙামাটির কাউখালী উপজেলা ও বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ভ্যালিতে তামাক চাষের পরিবর্তে এখন তুলা চাষ করা হচ্ছে। এছাড়া বান্দরবান তুলা উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তারা উপজেলার বেশ কয়েকজন কৃষককে উদ্বুদ্ধ করেন সম্ভাবনাময় তুলা চাষে।

এতে প্রথমে আগ্রহ প্রকাশ করেন উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়নের মুসলিমপাড়ার কৃষক মোহাম্মদ হোসাইন। তার দেখাদেখি একই ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি ছৌলুমঝিরির আবদুল হালিম, পূর্ব শীলেরতুয়া গ্রামের নুরুল ইসলাম, জমির হোসেন, আহমদ নবীসহ ৩২ কৃষক। এদের প্রতিজনকে ৪০ শতক করে ৩২টি প্রদর্শনী প্লটের মাধ্যমে গত জুন মাসে পরীক্ষামূলক চাষে সার্বিক সহযোগিতা করে বান্দরবান তুলা উন্নয়ন বোর্ড। এসব প্লটের আওতায় পাহাড়ের ঢালে ও সমতল ভূমিতে তুলা চাষের ভাল ফলন দেখা দেওয়ায় আশাবাদী হয়ে উঠেছেন  চাষীরা। তাই পরিকল্পিত ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে এখানের পাহাড়ে তুলা চাষ করাগেলে কৃষকরা তামাকের মতো লাভবান হওয়ার পাশাপাশি মোট উৎপাদনের এক-পঞ্চমাংশ তুলা এখান থেকে সংগ্রহ করা যাবে বলে মন্তব্য করছেন বান্দরবান তুলা উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তারা।

পার্বত্যাঞ্চলের আবহাওয়া ও মাটি তুলা চাষের জন্য উপযোগী। ব্রিটিশ আমলে এই অঞ্চল “কার্পাস মহল” হিসেবে পরিচিত ছিল। এই অঞ্চলের পাহাড়ের পাশাপাশি নদী ও প্রচুর ঝিরি রয়েছে। নদী ও ঝিরির বেলে-দোআঁশ মাটিতে সমভূমি তুলা ভালো হয়। এছাড়া সমভূমি তুলা পাতাঝরা উদ্ভিদ বিধায় গাছের মোটা আয়তনের এক-তৃতীয়াংশ জৈব পদার্থ হিসেবে যোগ হয়। বছরের জুন মাসের শেষের দিকে ও জুলাই মাসের প্রথম দিকে জমিতে তুলার বীজ বপন করার উপযুক্ত সময়। পাঁচ মাস পর অর্থাৎ নভেম্বের-ডিসেম্বর মাসের মধ্যে তুলা উত্তোলন করা হয়। এদিকে সরেজমিন পূর্বে শীলেরতুয়া গ্রাম পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায় এখন বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে উন্নত জাতের তুলা আর তুলা ক্ষেত। এ সময় তুলাচাষী নুরুল ইসলাম বলেন, এক বিঘা জমিতে তুলা চাষ করতে ১০ থেকে ১৪ হাজার টাকা খরচ হয়। বিঘাপ্রতি ১১ থেকে ১২ মণ তুলা উৎপাদন করা যায়। যার বাজার মূল্য প্রায় ৩০ হাজার টাকা। তিনি আরও বলেন, তুলা উন্নয়ন বোর্ড এ চাষে কৃষকদের প্রশিক্ষণ, বিনামূল্যে বীজ, সার, কীটনাশক ও ঊপকরন প্রদান করায় অন্য কৃষকরাও সমভূমি জাতের তুলা চাষের দিকে ঝুঁকছে।

সূত্র: আ.স