দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম কৃষি প্রযুক্তির প্রদর্শনী ১১তম এগ্রোটেক বাংলাদেশ- ২০২৩

120

বিগত ১৪ বছরের ধারাবাহিকতায় রাজধানীতে শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক কৃষি প্রযুক্তি প্রদর্শনী ২০২৩। ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা, জোয়ার সাহারা, ঢাকায় অনুষ্ঠানরত ০২-০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ মেয়াদে তিনদিন ব্যাপী এ বছরের মেলায় ১৩টি দেশের (বাংলাদেশ, চীন, ভারত, ইতালি, ভিয়েতনাম, জার্মানি,তাইওয়ান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, তুরস্ক, কানাডা, সিংগাপুর ও মালয়েশিয়া) প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করছেন।

পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের আওতাধীন পল্লী উন্নয়ন একাডেমী (আরডিএ), বগুড়া ও লিমরা ট্রেড ফেয়ার এন্ড এক্সিবিশনস লিঃ এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই আন্তর্জাতিক মেলায় কৃষি প্রযুক্তি সংক্রান্ত গবেষক,উদ্যোক্তা, উৎপাদনকারী, আমদানীকারক, ব্যবহারকারী এবং সাধারণ কৃষক প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করছেন।

মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশেষ অতিথি খলিল আহমদ, মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব), পল্লী উন্নয়ন একাডেমী, বগুড়া। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব মোঃ মশিউর রহমান এনডিসি। মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন খলিল আহমদ, মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব), পল্লী উন্নয়ন একাডেমী, বগুড়া,একাডেমীর পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ও মেলার আহবায়ক জনাব মোঃ ফেরদৌস হোসেন খান, লিমরার চেয়ারম্যান জনাব কাজী ছারোয়ার উদ্দিন, প্রমূখ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তাঁর বক্তৃতায় দেশের কৃষি উন্নয়নে এ ধরনের কৃষি প্রযুক্তি নির্ভর মেলা আয়োজনে গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি হল কৃষিখাত। দেশকে উন্নতির শিখরে এগিয়ে নিয়ে একটি সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে কৃষিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া এবং উত্তরোত্তর উন্নতি করার বিকল্প নেই। বাংলাদেশের সংকটকালীন অবস্থায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষিকে প্রাধান্য দিয়ে বিভিন্ন নীতি গ্রহণ করেছিলেন।

পরবর্তীকালে এটি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে। তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে কৃষি ও ভাগ্যাহত কৃষককূলের উন্নয়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে বিভিন্ন কর্মসূচী। প্রচলিত সনাতন ধারার কৃষি প্রযুক্তির পরিবর্তনে খামার যান্ত্রিকীকরণের পাশাপাশি উন্নত প্রযুক্তি ও কলাকৌশল এর সমন্বয় সাধন একান্ত প্রয়োজন। এ লক্ষ্য পূরণে এ মেলা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এবারের প্রদর্শনীতে রাইস মিল, ফিড মিল, ওয়েল মিল, ফ্লাওয়ার মিল মেশিনারিজ, ফুড এন্ড বেভারেজ প্রসেসিং এন্ড প্যাকিং, এগ্রি মেশিনারি, পাওয়ার টিলার, ড্রায়ার, কুলার, চিলার এবং সাইলো সংক্রান্ত বিভিন্ন দেশের প্রযুক্তি প্রদর্শিত হচ্ছে। এবারের প্রদর্শনীতে দেশ-বিদেশের চার শতাধিক কোম্পানি তাদের পণ্য ও প্রযুক্তি প্রদর্শন করছেন। প্রদর্শিত কৃষি যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি দেশের কৃষক সমাজকে কৃষি আধুনিকীকরণ এবং যান্ত্রিকীকরণে উৎসাহিত করবে। মেলার মাধ্যমে কৃষি ও কৃষিপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট গবেষক, প্রস্তুতকারক, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান,প্রযুক্তি ব্যবহারকারী ও দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের মধ্যে পারস্পরিক তথ্য এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগঘটবে।

আন্তর্জাতিক এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে দেশি-বিদেশি সরবরাহকারী, ব্যবহারকারী, গবেষক এবং প্রস্তুতকারকদের মধ্যে পারস্পরিক তথ্য এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে যা দেশের কৃষি প্রযুক্তি খাতকে সমৃদ্ধ করবে। ১১ম আন্তর্জাতিক কৃষি প্রযুক্তি মেলায় বিভিন্ন দেশের প্রযুক্তি প্রদর্শনের পাশাপাশি Sustainable Agricultural Mechanization in Bangladesh: Challenges and Opportunities বিষয়ক আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোঃ মঞ্জুরুল আলম।