দিনাজপুরে দেখা মিলল মাংসাশী পতঙ্গভুক উদ্ভিদের!

428

মাংসাশী উদ্ভিদ

জীবন্ত পোকামাকড় যার খাদ্য, তার নাম ‘সানডিউ’ বা ‘সূর্য শিশির’ উদ্ভিদ। কার্নিভরাস গোত্রের এ উদ্ভিদ ‘মাংসাশী পতঙ্গভুক’ হিসেবে পরিচিত। উদ্ভিদটি বিলুপ্তপ্রায়। তবে সম্প্রতি দিনাজপুরে বিলুপ্তপ্রায় পোকাখেকো এ উদ্ভিদের সন্ধান পাওয়া গেছে।

দিনাজপুর সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন উদ্ভিদটির সন্ধান পান বলে দাবি করেন। কলেজের জীববিজ্ঞান ভবনের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে অবস্থিত পুকুরের পশ্চিম পাড়ে এর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, ‘২০১৫ সাল থেকে উদ্ভিদটি দেখার জন্য পর্যবেক্ষণ করে আসছি। গোলাকার সবুজ থেকে লালচে রঙের থ্যালাসের মতো মাটিতে লেপটে থাকা উদ্ভিদটি মাংসাশী উদ্ভিদগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রজাতি।’

সূত্র জানায়, চার-পাঁচ সেন্টিমিটার ব্যাসের উদ্ভিদটিতে লাল বর্ণের দু-তিন ইঞ্চি লম্বা পুষ্পমঞ্জুরি হয়। সংখ্যায় ১৫-২০টি তিন থেকে চার স্তরের পাতাসদৃশ মাংসল দেহের চারদিকে পিন আকৃতির কাঁটা থাকে। দেহের মধ্যভাগ অনেকটা চামচের মতো ঢালু থাকে।

এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- শীতের সকালে পড়া শিশিরে চকচক করে উদ্ভিদটি। তাতে পোকারা আকৃষ্ট হয়। পাতাগুলো থেকে ‘মিউসিলেজ সাবসট্যান্স’ নামে এক ধরনের আঠালো এনজাইম নিঃসৃত হয়। পোকাগুলো উদ্ভিদটিতে পড়লেই আটকে যায়। তখন মাংসল পাতার চারদিকের কাঁটাগুলো পোকাকে আঁকড়ে ধরে। বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদটিকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন সহকারী অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন।

উদ্ভিদটি আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড প্রভৃতি স্থানে রয়েছে। তবে বাংলাদেশ ন্যাশনাল জাদুঘরে এর একটি রেপলিকা রয়েছে। তাদের ধারণা, এটি বিলুপ্ত। তারা দিনাজপুর সরকারি কলেজ থেকে নমুনা চেয়েছেন।

বাংলাদেশ বিজ্ঞান জাদুঘরের তথ্যমতে, অতীতে দিনাজপুর, রংপুর অঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবেই এ প্রজাতির উদ্ভিদ জন্ম নিত। উদ্ভিদটিকে আপাতদৃষ্টিতে ভয়ঙ্কর বা ক্ষতিকর মনে হলেও এর গুণাগুণ বিশ্লেষণ করে মানবজীবনে বা কৃষিতে কাজে লাগানো যায়। এ বিষয়ে বিস্তর গবেষণার সুযোগ রয়েছে।

ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/জেডএইচ