দিনাজপুরে পাখির খামার করে বেকার যুবক জীবনের সাফল্য

1317

তনুজা শারমিন তনু, দিনাজপুর প্রতিনিধি : দৃঢ় আত্মপ্রত্যয়, পরিকল্পিত কর্মপন্থা আর কঠোর পরিশ্রমকে কাজে লাগিয়ে দিনাজপুরে ময়বুর আলম জীবন নামে এক বেকার যুবক পাখির খামার করে বয়ে এনেছেন ব্যাপক সাফল্য। ব্যক্তি উদ্যোগেই তিনি গড়ে তুলেছেন দূর্লভ জাতের এ পাখির খামার। এতে তার হয়েছে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা। খামারে বসেই তিনি বিক্রি করছেন পাখি। তার এ সাফল্য দেখতে ছুঁটে আসছেন অনেকেই। আকর্ষনীয়, সুন্দর, রং-বেরং এর দৃষ্টি নন্দন এসব পাখি দেখে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করছেন পাখির খামার গড়ার।

দিনাজপুর জেলা শহর থেকে প্রায় ৮ কিলো মিটার দক্ষিণে সদর উপজেলার মুরাদপুর গ্রাম। এ গ্রামের মেঠো পথ ধরে এখন অনেকেই ছুঁটছে জীবনের পাখির খামার দেখতে। পাখির কিচির-মিচির শব্দে এখন খামারের আশ-পাশের ঘুম ভাঙ্গে অনেকের। আধা পাকা দালান ঘরের জানালায় নেট দিয়ে পালন করছে পাখি। ভেতরে সারি বদ্ধ ভাবে সাজানো আছে মাটি’র কলস। এ কলসের ভেতরেই ডিম দিয়ে ওম্ এর মাধ্যমে মা পাখি বাচ্চা ফোটাচ্ছে। এতে খামারে প্রতিনিয়ত বাড়ছে জীবনের পাখির সংখ্যা। এ গ্রামের আনিছুর রহমানের ছেলে ময়বুর আলম জীবন। দরিদ্র পিতার অস্বচ্ছলতায় অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়া-লেখা করেছেন তিনি। বেকারত্ব ঘোচাতে এদিক ওদিক ছুটো-ছুটি। চাকুরি না পেয়ে টেলিভিশনে ডিসকভারী চ্যানেল দেখে পাখি পালনে আগ্রত তার। এক বছর আগে ১৫টি পাখি কিনে নিজ বাড়িতে এ পাখির খামার তৈরি করেন তিনি। পাখি’র খামার গড়ার বিষয়টি পরিবারের লোকজন মনে করে জীবনের নিছক পাগলামী।

এখন তার খামারে প্রায় সহস্রাধিক পাখি। লাভ বার্ড, কোকাটিল, বাজারিকা নামের এ পাখি এখন তিনি প্রতি জোড়া খামারেই বিক্রি করছেন ৪’শ থেকে ৮’শ টাকায়। প্রতিমাসে পাখি বিক্রি করে আয় করছেন ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা। তার এ সাফল্য দেখতে ছুঁটে আসছেন অনেকেই। আকর্ষনীয়, সুন্দর, রং-বেরং এর দৃষ্টি নন্দন এসব পাখি দেখে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করছেন পাখির খামার গড়ার। তার সাফল্য দেখে আশাবাদী স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও।

দিনাজপুরে পাখির খামার অনেকের কাছে গল্প মনে হলেও সেই অসাধ্যকে সাধ্য করেছেন ময়বুর আলম জীবন। বাণিজ্যিকভাবে পাখির খামার গড়ে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন তিনি। দূর্লভ জাতের পাখির খামার গড়ে ব্যাপক সাফল্য বয়ে এনছেন, বেকার যুবক ময়বুর আলম জীবন। তার এই সাফল্য এখন অনেকের অনুপ্রেরণা। সরকারী পৃষ্ঠ-পোষকতা পেলে ময়বুর আলম জীবনের এ পাখির খামারের পরিধি আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছেন পাখি প্রেমিকরা।