লকডাউনে পরিবহন সংকট ও অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে রাজশাহীর ডেইরি খামারিদের। প্রতিদিনের সংগৃহীত দুধ বিক্রি করতে না পারায় ক্ষতির মুখে পড়ছেন তারা।
রাজশাহী ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গেছে, লকডাউনের শুরু থেকে বর্তমান পরিস্থিতি অবধি ডেইরি খামারিদের প্রায় ১২ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। এ হিসেব শুধুমাত্র রাজশাহী মহানগরে আড়াই হাজার খামারির। এছাড়াও জেলার ৯ উপজেলায় এ ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি। মহামারির শুরু থেকে এসব খামারে উৎপাদিত প্রায় ৩০ হাজার লিটার দুধের বেশিরভাগই স্বল্পমূল্যে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন তারা।
সূত্র আরও জানায়, প্রতি লিটার দুধ ৪০-৪৫ টাকা দরে বিক্রি করে উৎপাদন খরচ তুলতে হিমসিম খাচ্ছেন এখানকার খামারিরা। গত বছর এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত ১২০ লাখ থেকে ১৫০ লাখ লিটার দুধ বিক্রি হয়নি। এতে প্রায় ৫৭ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্র জানায়, রাজশাহী মহানগর ও ৯ উপজেলা মিলে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে দেশী ও সঙ্কর জাতের গাভী থেকে দুই লাখ ৫০ হাজার ২৭ টন দুধ উৎপাদন হয়েছে। ২০২০ সালে দুধ উৎপাদন হয়েছে তিন লাখ ৫০ হাজার ২৬ টন। সে হিসেবে ২০১৬ সালের তুলনায় জেলায় চার বছরে দুধ উৎপাদন বেড়েছে প্রায় এক লাখ টন।
রাজশাহী ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি গোলাম রাহিদ বলেন, রাজশাহীতে হাজারো সমস্যায় জর্জরিত ডেইরি ফার্মের খামারিরা। এতো সমস্যার পরও প্রশাসন কিংবা প্রাণিসম্পদ দফতরকে পাশে পাওয়া যাচ্ছে না।
অ্যাসোসিয়েশনের সহ সভাপতি সাথী আক্তার বলেন, আমার খামারে ২৩টি গরু রয়েছে। এর মধ্যে দুধ দেয় ১২টি। প্রতিদিন ১১০ লিটার দুধের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ লিটার দুধ অবিক্রীত থেকে যায়। বাধ্য হয়ে অবিক্রীত দুধ অল্প দামে বিক্রি করতে হয়।
এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. ইসমাইল হক বলেন, খামারিরা লোকসান গুনছেন এ বিষয়টি আমরা উপলব্ধি করতে পারছি। এ জন্য ভ্রাম্যমাণ দুধ-ডিম-মাংস বিক্রির উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। তাছাড়া মানুষের স্বাভাবিক চলাফেরা না থাকায় মিষ্টির দোকানও বন্ধ। আর তাই দুধ বিক্রিতেও সমস্যা হচ্ছে।
ফার্মসএন্ডফার্মার/ ০৭ জুলাই ২০২১