যে কোনও মাছচাষে সঠিক পরিমাণে উন্নততর সার ব্যবহারের মাধ্যমে মাছের ভালো গঠন ও সঠিক সময়ে ভালো উৎপাদন মিলতে পারে। এ ব্যাপারে মৎস্য আধিকারিকরা বলছেন, গোবরসারে নাইট্রোজেনের পরিমাণ কম, তাই বেশি লাগে।
মাছচাষে এই সার দরকার বিঘা প্রতি প্রতি মাসে ১০০-৩০০ কেজির মতো। আর যদি একটু ভালো পচানো গোবরসার প্রয়োগ করা যায়, তাহলে তা পরিমাণে কিছুটা কম লাগবে।
এছাড়া সর্ষে খোল ৪-৫ দিন পচিয়ে সার হিসেবে প্রয়োগ করলে বিঘায় প্রয়োজনে হবে মাত্র ৩০ কেজির মতো। বাদামখোলে নাইট্রোজেন থাকে সবচেয়ে বেশি। তাই বাদামখোল সার হিসেবে পচিয়ে প্রয়োগ করলে বিঘায় ২০ কেজিতেই হয়ে যাবে।
পুকুরে উন্নততর জৈবসার ব্যবহারে একদিকে যেমন কমানো যায় জলের দূষণ, অপরদিকে বাড়ানো যায় মাছের ফলন। পুকুরে চাষ করা মাছ বাজার উপযোগী হলে তবেই তা ধরতে হবে।
যত মাছ তুলে নেওয়া হবে, সম সংখ্যক সেই প্রজাতির মাছের পোনা মজুত করতে হবে পুকুরে। কিন্তু কখনওই মজুত মাছের সংখ্যা তার সর্বোচ্চ মাত্রা যেন অতিক্রম না করে।
পুকুরের জলের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে মাসে ২-৩ বার জাল টানা দরকার। পুকুরে মাছচাষের জন্য সব ধরনের পোনার একটা মজুত ভান্ডার গড়ে তোলা খুবই প্রয়োজন। অর্থাৎ পৃথক একটি পুকুর দরকার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাছের ফলন ভালো পেতে ভিটামিন ও মিনারেলের ব্যবহার করতে হবে। পুকুরে মিনারেল মিক্সচার বিঘাপ্রতি ১-২ কেজি হারে ডিমপোনার ক্ষেত্রে ও ধানি পোনা চাষে কোবাল্ট ক্লোরাইট প্রতি মাসে বিঘাপ্রতি ১০ গ্রাম মাত্রায় প্রয়োগ করতে পারলে ভালো।
এছাড়া সব ধরনের মাছ চাষেই প্রতি কেজি মাছের খাবারের সঙ্গে ভিটামিন ও ইস্ট ৫-১০ গ্রাম করে মিশিয়ে দিলে মাছের ফলন বাড়বে অনেকটাই। নিয়মিত পুকুরের জল ও মাটি পরীক্ষা জরুরি।
পুকুরে মাটি ঠিক না থাকলে সহজেই দূষিত হয়ে পড়বে জল। এতে মার খাবে মাছের উৎপাদন। এ কারণে মাছ চাষের আগে পুকুরের জল ও মাটির গুণমান পরীক্ষা করা দরকার। বছরে এক থেকে দু’বার পুকুরের মাটি ও জল পরীক্ষা করাতে পারলে খুবই ভালো হয়।