দেশি শিং মাগুর, কৈ ও থাই কৈ মাছের চাষ ব্যবস্থাপনা

1370

jnm-1440x564_cশিং, মাগুর, কৈ অত্যন্ত সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর মাছ হিসেবে বহুল আলোচিত ও সমাদৃত। কিন্তু জলজ পরিবেশের আনুকূল্যের অভাব এবং অতিরিক্ত আহরণজনিত কারণে এসব মাছ অধুনা বিলুপ্তির পথে। এসব মাছ বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষার্থে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা কার্যক্রম শুরু করে সাম্প্রতিক সময়ে আশাব্যঞ্জক সাফল্য অর্জন করেছে। ফলে এ জাতীয় মাছ বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষার উজ্জ্বল সম্ভাবনার দ্বারোদঘাটন হয়েছে।

এ মাছ অত্যন্ত পুষ্টিকর ও সুস্বাদু অধিক সংখ্যক মাছ এক সঙ্গে চাষ করা যায়, স্বল্প গভীর পানিতে নিরাপদে চাষ করা সম্ভব, অন্যান্য মাছের তুলনায় এ মাছের চাহিদা ও বাজার মূল্য অনেক বেশি, অতিরিক্ত শ্বাসনালী থাকায় বাতাস থেকে অঙিজেন নিয়ে এরা দিব্যি বেঁচে থাকতে পারে। ফলে, জীবন্ত অবস্থায় বাজারজাত করা যায়, কৃত্রিম প্রজনন কৌশল উদ্ভাবনের ফলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পোনা উৎপাদন সম্ভব।

খাল-বিল, হাওর-বাঁওড়, পুকুর-দীঘি, ডোবানালা, প্লাবনভূমি ইত্যাদি। এঁদো, কর্দমাক্ত মাটি, গর্ত, গাছের গুঁড়ির তলা ইত্যাদি জায়গায় এরা সহজেই বসবাস করতে পারে। আগাছা, কচুরিপনা, পচা পাতা, ডালপালা ঘেরা জলাশয়ে বাস করতে এদের আদৌ কোন সমস্যা হয় না।

চালের কুঁড়া শতকরা ৪০ ভাগ, তৈলবীজের, খৈল ৩০ ভাগ ও শুঁটকি ৩০ ভাগ একত্রে মিশিয়ে গোলাকারে বল তৈরি করে মাছকে সবররাহ করতে হবে। এছাড়া শামুক-ঝিনুকের গোশতও মাছকে খাওয়ানো যেতে পারে। এক চাষ মৌসুমে ব্যবস্থাপনা খরচ বাদে প্রতি শতাংশে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা আয় করা সম্ভব।

শিং মাছের মতো মাগুর মাছকেও মাছের মোট ওজনের ৪-৫% হারে দৈনিক দুইবার খাবার সরবরাহ করতে হবে। মাগুর মাছের খাবার হিসেবে শিং মাছের অনুরূপ উপকরণাদিসহ তৈরি সম্পূরক খাদ্য দৈনিক দু’বার যথারীতি প্রদান করতে হবে। যথা নিয়মে মাছের পরিচর্যা করা সম্ভব হলে ৮-১০ মাসেই মাগুর মাছ বাজারজাত করার উপযোগী সাইজে উন্নীত হয়ে থাকে। এক চাষ মৌসুমে মাগুর মাছ চাষ করে ব্যবস্থাপনা খরচাদি বাদে শতাংশ প্রতি ১০০ থেকে ১,৫০০ টাকা আয় করা সম্ভব।