বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়ায় চাষোপযোগী প্রথম হাইব্রিড পেঁয়াজের জাত উদ্ভাবন করেছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান লাল তীর সিড লিমিটেড। বীজটি এ বছরই বাজারে ছাড়তে চায় তারা। উদ্ভাবক প্রতিষ্ঠানের নামের সঙ্গে মিল রেখে এই বীজের নাম দেয়া হয়েছে ‘লাল তীর হাইব্রিড পেঁয়াজ বীজ’। উদ্ভাবকদের দাবি, পেঁয়াজের নতুন এ জাতে স্থানীয় জাতের তুলনায় প্রায় তিন গুণ বেশি ফলন হবে। প্রতি একরে উৎপাদন হবে ১২ টন।
এ পেঁয়াজ তুলনামূলক বেশি দিন সংরক্ষণ করা যাবে। প্রতিটি পেঁয়াজের ওজন হবে ৫০-৬০ গ্রাম। দেশে উদ্ভাবিত নতুন জাতের এই পেঁয়াজের বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। স্থানীয় জাতের পেঁয়াজের অঙ্কুরোদ্গম ক্ষমতা গড়ে ৪০-৫০ শতাংশ। পক্ষান্তরে লাল তীর হাইব্রিড জাতের এই ক্ষমতা প্রায় ৮০ শতাংশ। এক কন্দবিশিষ্ট প্রতিটি পেঁয়াজের রঙ ও আকৃতি অভিন্ন।
জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর ধরে ব্যাপক গবেষণার পর উদ্ভাবন করা হয়েছে পেঁয়াজের এই নতুন জাত। শুধু দেশে নয়, বিদেশেও এ বিষয়ে গবেষণা করেছে লাল তীর সিড লিমিটেড। নানা ধরনের আবহাওয়ার সঙ্গে অভিযোজন ক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য জাতটি যুক্তরাষ্ট্রে নিয়েও আবাদ করেছে তারা।
এ বিষয়ে লাল তীর সিডস লিমিটেডের এমডি মাহবুব আনাম গণমাধ্যমকে জানান, বছর জুড়ে পেঁয়াজের সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নতুন এই জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে।
তিনি জানান, বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়ায় চাষোপযোগী জাতটি আবাদ করে কৃষক বাড়তি মুনাফা পাবেন। পেঁয়াজের আমদানি ব্যয় কমানোর মাধ্যমে দেশের অর্থ সাশ্রয় করবে জাতটি। এছাড়া এর স্বাদও প্রচলিত জাতের মতোই। কড়া ঝাঁজের পেঁয়াজটির রঙ ও স্বাদ দেশী তাহেরপুরী পেঁয়াজের মতোই। এটি প্রায় সারা বছর সংরক্ষণোপযোগী। সংরক্ষণকালে এর ওজন কমবে খুবই সামান্য।
বাংলাদেশে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা ২৭-২৮ লাখ টন। এর মধ্যে দেশে উৎপাদন হয় প্রায় ১৯ লাখ টন। ফলে প্রতি বছরই চাহিদার তুলনায় ঘাটতি থাকে প্রায় ৮/৯ লাখ টন। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এ জন্য ব্যয় হয়েছে ৩২ কোটি ৫২ লাখ ডলার। লাল তীরের গবেষকরা বলছেন, যদি দেশে পেঁয়াজ চাষে ব্যবহৃত মোট জমির ৩০ শতাংশকেও নতুন উদ্ভাবিত জাতটির আবাদ এলাকার আওতায় নিয়ে আসা যায়, তাহলে দেশের বার্ষিক উৎপাদন বেড়ে দাঁড়াবে ২৭ লাখ টনে। যা দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা সম্পূর্ণ মেটানোর জন্য যথেষ্ট।
ফার্মসএন্ডফার্মার/২৯এপ্রিল২০