দ্রারিদ্র বিমোচনে ভেড়া পালন

1884

ভেড়া পালন

  • প্রাণীসম্পাদ অধিদপ্তরের তথ্য মোতাবেক বাংলাদেশে মোট ৩২ লক্ষ ভেড়া আছে।
  • জাতীয় আয় ও সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশে প্রাণিসম্পদেও মধ্যে ভেড়ার স্থান চতুর্থ।
  • দেশে প্রাপ্ত ভেড়া উষ্ণ ও আর্দ্র পরিবেশে খাপ খাইয়ে বছরে দুইবার বাচ্চা দেয় এবং প্রতিবাওে ২-৩ টি বাচ্চা দেয়।
  • ভেড়ার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি ও বাচ্চার মৃত্যুও হার অত্যন্ত কম।
  • চরম খাদ্য অভাবের মধ্যে শুকনা খড় এবং শস্যের অবশিষ্ট অংশ খেয়েও একটি প্রাপ্ত ভেড়া ১৫-২০ কেজি ওজন হতে পারে।
  • একটি ভেড়া বছরে ১.৫-২.০ কেজি পরিমাণ পশম উৎপাদন করে।
  • বছরে দুইবার ভেড়া কমপক্ষে ০৪ টি বাচ্চা উৎপাদন করে যাহা গরু ও মহিষের তুলনায় অনেক বেশী।
  • বাংলাদেশে ভেড়ার ঘনত্ব বরেন্দ্র এলাকা, যমুনা অববাহিকা এবং উপক’লীয় এলাকার জেলাগুলোতে বেশী।
  • আংশিক অথবা সম্পুর্ণ আবদ্ধ অবস্থায় ভেড়া পালন করা যায়, সে ক্ষেত্রে প্রতিটি প্রাপ্ত বয়স্ক ভেড়ার জন্য ৮-৯ বর্গফুট জায়গার জায়গার প্রয়োজন হয়।
  • ভেড়ার ঘরের চালা ছন, টিন অথবা পাকা যে কোনটিই হতে পারে।
  • দুই থেকে তিন বাচ্চা বিশিষ্ট ২০ কেজি ওজনের ১ টি ভেড়ীর দৈনিক ২.৫ থেকে ৩.০ কেজি কাঁচা ঘাস, ২৫০-৩০০ গ্রাম দানাদার খাবারের প্রয়োজন হয়।
  • একটি প্রাপ্ত বযাস্ক পাঁঠার দৈনিক ২.৫-৩.০ কেজি কাঁচা ঘাস ও ২০০-২৫০ গ্রাম দানাদার খাবার প্রয়োজন পড়ে।
  • ভেড়ার দানাদার খাদ্য হিসাবে সাধারণতঃ চাল, গম, ভ’ট্রা ভাংগা, চালের কুড়া, গমের ভ’ষি, মাসকলাই, খেসারী, মুসুর, মুগ কলাই, তিলের খৈল ও লবন ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়।
  • জন্মের সময় ভেড়ার বাচ্চার ওজন ১.০-১.৫০ কেজি হয়ে থাকে।
  • বাচ্চা জন্মের পরপরই পরিস্কার কওে আধ ঘন্টার মধ্যে শাল দুধ খাওয়ানো হয়।
  •  ভেড়ার বাচ্চার দৈনিক ২০০-৫০০ গ্রাম পানির প্রয়োজন হয়।
  • বাচ্চা সাধারণতঃ ১-২ মাসের মধ্যেই মায়ের দুধ ছাড়ে।
  •  ভেড়ার পাঠা বাচ্চাকে ২-৪ সপ্তাহের মধ্যে অন্ডকোষ কেটে খাসী কর প্রয়োজন।
  •  ঊাড়ন্ত ভেড়ীকে সাধারণত ঃ ১৩-১৪ কেজি ওজনে ৭-৮ মাস বয়সে পাল দিতে হয়।
  • ভেড়ার পাঁঠাকে প্রতিদিন ১০ গ্রাম গজানো ছোলা খাওয়ানো প্রয়োজন।
  •  একটি ভেড়া পালনের উৎকৃষ্ট পাঁঠার সাথে ভিন্ন পালের উৎকৃষ্ট ভেড়ীর পাল দেওয়া প্রয়োজন।
  •  প্রজনন কাজে কোন ভাবেই একটি পাঠার সাথে ভিন্ন পালের উৎকৃষ্ট ভেড়ীর সাথে প্রজনন করাতে হবে।
  • ভেড়ী ২০-৩৬ ঘন্টা গরম থাকে কিন্তু ১২-২৪ ঘন্টার মধ্যেই ভেড়ীকে পাল দেওয়া প্রয়োজন।
  •  ভেড়ী সকালে গরম হলে বিকালে এবং বিকালে গরম হলে সকালে পাল দিতে হয়। সম্ভাব হলে দুই বার পাল দেওয়া বেশি কার্যকর।
  •  ভেড়ী গরম হলে লেজ বাকিয়ে রাখে, ঘন ঘন লেজ নাডে, যৌনীদ¦ার লাল ও ফোলা হবে, যৌনীদ্বার দিয়ে সাদাটে মিউকাস বের হবে।
  • ভেড়ীর খাওয়া দাওয়া কমে যাবে ও ডাকা ডাকি করবে।
  • ঊাচ্চা দেওয়ার পর ভেড়ী ২১-৪৮ দিনের মধ্যে গরম হবে।
  •  ভেড়ীর পাল নিশ্চিত হওয়ার পর বাচ্চা সাধারণতঃ ১৪০-১৫০ দিন পেটে থাকে।
  •  গর্ভবতী ভেড়ীকে বাচ্চা দেওয়ার ১৫ দিন আগে থেকে আলাদা জায়গায় রেখে বিশ্রামে ও প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ করা প্রয়োজন।
  • দেশী ভেড়াতে কৃমি, আমাশয়, বসন্ত, নিউমনিয়া, এন্টারট´িমিয়া, পেট ফাঁপা ও ক্ষুরা ইত্যাদি রোগ দেখা যায়।
  •  স্বস্থ্য সম্মত টিকা প্রয়োগ করে ভেড়াকে বিভিন্ন মারাত্বক রোগের আক্রমন থেকে রক্ষা করা যায়।
    প্রতি ছয় মাস পর পর ভেড়াকে কৃমি নাশক ঔষধ খাওয়াতে হবে।
  • উকুন, আঠালী, মায়াসিস ইত্যাদি আক্রমন থেকে ভেড়াকে রক্ষার জন্য প্রতি ১৫ দিন পর পর ০.৫% মেলাথিয়ান দ্রবনে গোসল করান প্রয়োজন।
  • বছরে ২ বার শীতের আগে ও পরে ভেড়ার পশম কাটা প্রয়োজন।
  • ভেড়াতে পিপিআর ও একথাইমা রোগ নাই বললেই চলে।
  • ভেড়ার মাংস নরম, রসাল ও বিশেষ কোন গন্ধ নেই এবং ইহার চামড়া বাজারে বিক্রি করা যায়।
  • ভেড়া ভুমিহীন, ক্ষুদ্র ও মাঝারী চাষীদের অতিরিক্ত আয়ের উৎস।
  • ৩০ টি ভেড়া বিশিষ্ট খামার থেকে বছরে ৩০-৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় হয়।
  •  ঊাংলাদেশে অন্যান্য প্রাণীর তুলনায় ভেড়া পালন খুবই লাভজনক।
  • ভেড়ার মাংশে জিংক, আয়রণ এবং ভিটামিনের পরিমান বেশি।