বঙ্গবন্ধু চেয়েছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ, ইসলামী প্রজাতন্ত্র না। তিনি ধর্ম নিরপেক্ষ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের কথা বলেছেন বলে জানিয়েছেন কৃষি মন্ত্রী ড.মো. আব্দুর রাজ্জাক।
শুক্রবার খামারবাড়ীর আ.ক.মু গিয়াসউদ্দিন মিলকি অডিটোরিয়ামে বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা কৃষিবিদ পরিষদ আয়োজিত স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৪৪ তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কৃষি মন্ত্রী ড.মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বঙ্গবন্ধুর দুরদর্শিতা, প্রজ্ঞা মানুষের কথা বলার অধিকারের জন্য তিনি বলেছিলেন মুক্তির সংগ্রাম। মুক্তির সংগ্রামের জন্য সকল ধর্ম বর্ণের মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে দেশ স্বাধীন করেছে। ৭ মার্চের ভাষনের শেষ দুটি লাইন আজও আমাদের অনুপ্রাণিত করে।বঙ্গবন্ধু চেয়েছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ, ইসলামী প্রজাতন্ত্র না। তিনি ধর্ম নিরপেক্ষ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের কথা বলেছেন।
কৃষি মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও একাত্তরের চেতনাকে ধ্বংস করার জন্য ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা বিরোধী, প্রতিক্রিয়াশীল দেশী ও বিদেশী চক্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে। ৭১ এর পরাজিত শক্তি দেশকে পাকিস্তান রাষ্ট্রের আদলে পরিচালনা করার জন্য ১৫ আগস্টের নিকৃষ্ট হত্যাকান্ড ঘটায়। এটা কোন সাধারণ হত্যাকান্ড নয়, সুপরিকল্পিত হত্যাকান্ড। পরে অন্যতম সহযোগী জাতীয় চার নেতাকেও ০৩ নভেম্বর জেলখানায় নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে ঘাতকরা। ৭৫ এর হত্যাকান্ডের পর্দার আড়ালে নেপথ্যে যারা ছিল সময় এসেছে তাদের মুখশ উন্মোচন করে বিচারের সম্মুখীণ করা ।
তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত। বঙ্গবন্ধুর হত্যার আগে ও পরে হত্যাকারী কর্ণেল ফারুক-রশিদ গং পরিকল্পনা নিয়ে তার কাছে গেলে তিনি বলেন তোমরা কর, আমি সিনিয়র অফিসার হিসেবে সামনা সামনি থাকতে পারি না। আবার বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর সেনাবাহিনী অফিসাররা জিয়ার কাছে গেলে তিনি তাদের বলেন, ‘সো হোয়াট! ভাইস প্রেসিডেন্ট ইজ দেয়ার। সেনাবাহিনীর একটি অন্যতম দায়িত্ব হচ্ছে সেনাদের যে কোন হত্যার পরিকল্পনা যখন কেউ অবগত হন সেটি দ্রুত রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করা। সেটি জিয়া করেননি। এমনকি যারা এ অপরাধ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। এতেই প্রমাণিত হয় জিয়া বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের কুশীলব। জিয়ার পরবর্তী কর্মকান্ডের মাধ্যমে আরো প্রমাণ করেছেন যে, তিনিই এই হত্যাকান্ডের প্রধান কুশীলব। তিনি খুনীদেরকে সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা দিয়েছেন তাদের পুরস্কৃত করেছেন, ভালো চাকরি দিয়েছেন, বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন। ইন্ডিমেনিটি অধ্যাদেশ সংসদে পাশ করিয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচারের পথ রুদ্ধ করেছেন।
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেক বই রয়েছে যা পড়লে বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস জানা যায়, জানা যায় ইতিহাস বিকৃতির নোংরা উৎসবের কথা। উপস্থিত কর্মকর্তাদেও উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা ভিক্ষুকের দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্ন করেছেন এর জন্য আমরা গর্বিত, গর্বিত এদেশের মেহনতি কৃষক ভাইদের জন্য। “আগামী আমন ও বোরোতে সত্যিকারে কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করবো। আমলাতন্ত্র, রাজনৈতিক প্রভাব দুর্নীতি আমাদের এ কাজকে রুখতে পারবে না”, মন্ত্রী উপস্থিত কর্মকর্তাদের এই শপথ বাক্য পাঠ করান। খাদ্য উৎপাদন করে জাতীর মুখ উজ্জ্বল করেছেন এবার কৃষকদের লাভবান করে আবারও জাতীর মূখ উজ্জ্বল করাবেন এ আমার বিশ্বাস,বলেন তিনি।
এছাড়া, অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য করেন রাশেদ খান, সংগঠনের সহ-সভাপতি, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোজাম্মেল হোসেন মহাসচিব বিসিএস(কৃষি) পরিষদ, মহাসচিব কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন খায়রুল আলম প্রিন্স, কৃষিবিদ সাইদুর রহমান সেলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক-ড.মো.আবদুল মুঈদ প্রমুখ।
ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/জেডএইচ