মেহেরপুরের গাংনীতে বিভিন্ন এলাকার ধানক্ষেতে মাজরা পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। কৃষি অফিসের দেয়া পরামর্শ অনুযায়ী কীটনাশক ছিটিয়েও সুফল মিলছে না। এতে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন চাষিরা।
কৃষি অফিস বলছে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে গোড়া পচা রোগ ছাড়াও মাজরা পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এ থেকে ফসল রক্ষার্থে চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসের হিসাবমতে, উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১৪ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। কিছু জমিতে ধানের শিষ চলে এসে ে, কিছু জমিতে ধানের থোড় আছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে প্রায় সাড়ে পাঁচ হেক্টর জমিতে গোড়া পচা রোগ দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে মাজরা পোকার আক্রমণ। পোকায় ধানের ডগা কেটে দিচ্ছে। এসব গাছ বেচে থাকলেও শিষ বের হবে না। ফলে এসব ধানগাছ থেকে কোনো ফলন আসবে না। কৃষকরা দফায় দফায় বালাইনাশক ব্যবহার করে পোকা দমন করতে পারছে না। যদি আমনের মাজরা পোকা ও গোড়া পচা রোগ দমন করা না যায়, তাহলে আমন ধানের ফলন বিপর্যয়ে পড়বেন কৃষকরা।
সহড়াবাড়িয়ার চাষি আকছেদ জানান, তার ধনচি মাঠে পাঁচ বিঘা জমিতে আমন ধান রয়েছে। ধানক্ষেতে মাজরা পোকার আক্রমণে ক্ষেত বিবর্ণ হয়ে গেছে। পোকায় শিষ কেটে দিচ্ছে। একই সঙ্গে গোড়া পচা রোগও দেখা দিয়েছে। কৃষি অফিসারদের পরামর্শে বালাইনাশক ব্যবহার করেও কোনো সমাধান হয়নি। এতে ফলন বিপর্যয় হবে। একই কথা জানালেন একই মাঠের ধানচাষি আবু বক্কর ও আলম মাস্টার।
কুঞ্জনগরের ধানচাষি রফিকুল ও আব্দুল আজিজ জানান, শেখগাড়ি ও পোকামারির বিলে আমন ক্ষেত ভালো হয়েছিল। ধানগাছে কিছু থোড় আবার কিছু কিছু ক্ষেতে শিষ বেরিয়েছিল। চাষিরা এবার বাম্পার ফলনের আশা করেছিলেন। হঠাৎ করে মাজরা পোকার আক্রমণ শুরু হয়। কৃষি অফিস আলোকফাঁদ ও পারচিং পদ্ধতিতে পোকা নিধনের পরামর্শ দেয়। এ পদ্ধতি ছাড়া বালাইনাশক ব্যবহার করেও কোনো লাভ হচ্ছে না।
গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন জানান, মাজরা পোকার আক্রমণ দেখা দিলে ধানক্ষেত থেকে ২০০ থেকে ৩০০ মিটার দূরে আলোকফাঁদ বসিয়ে মাজরা পোকার মথ সংগ্রহ করে মেরে ফেলা যায়। তা ছাড়া ধানের জমিতে ১০০ মিটারের মধ্যে ১০ থেকে ১৫টি মরা শিষ অথবা পাঁচটি মরা শিষ পাওয়া গেলে ভিরতাকো ৪০ ডব্লিউজি, এসিমিক্স, ফেনজেট, বেল্ট এক্সপার্টসহ বিভিন্ন কীটনাশক সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে। কৃষি অফিস থেকে চাষিদের সঙ্গে সার্বিক যোগাযোগ করে সব ধরনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।