নওগাঁর রাণীনগরে বাড়ছে সাথী ফসল সরিষার চাষ

499

সরিষা

আব্দুর রউফ রিপন, নওগাঁ থেকে: নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় চলতি রবি মৌসুমে উফশী জাতের ২ হাজার ৯শ ৩০ হেক্টর জমিতে সাথী ফসল হিসেবে সরিয়ার চাষ করা হয়েছে।

মাঠে মাঠে এখন শুধুই হলুদের সমারোহ। দৃষ্টি জুড়ে সরিয়ার হলুদ গাঁদার চিঠি। অপরদিকে সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করতে ব্যস্ত মৌ মাছিরা। মৌ মৌ শব্দে পুরো মাঠ মুখরিত।

কম খরচে বেশি লাভের আশায় কৃষকরা এবার বোর ধানের জমিতে আগাম এই ফসলের চাষ করেছেন। এবারে কৃষকরা সরিষার উচ্চ ফলনশীল জাত হিসাবে উফশী, টলি-৭ ও সম্পদ এই তিন জাতের সরিষা চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন এলাকার সরিষা চাষিরা। তবে উপজেলায় দিন দিন সরিষার চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

হরিশপুর গ্রামের কৃষক হাসেন সরদার জানান, মূল্য কম হওয়াই ধানের চাষ করে প্রতি বছরই তাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। গত বছরের বোরো ধান এখনো অনেক কৃষকের ঘরে মজুত রয়েছে। তাই বিকল্প পথ হিসাবে অন্যান্য ফসলের মধ্য তিনি সরিষা চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

গোনা গ্রামের কৃষক রহিম উদ্দিন ফার্মসঅ্যান্ডফার্মারকে জানান, এ মৌসুমে ধান চাষের উপযুক্ত ১০ বিঘা জমিতে তিনি সরিষার আবাদ করছেন। সরিষা তুলে নিয়ে ওই সব জমিতে তিনি বোরো ধান রোপন করবেন। সরিষার ফসল থেকে উপার্জিত আয় বোরো ধান উৎপাদনে সহায়তা পাবেন বলে তিনি দাবী করেন।

পশ্চিম বালুভরা গ্রামের কৃষক আবুল কালাম আজাদ জানান, ইদানিং ধান চাষ করে লোকসানে পড়ার কারণে এলাকার কৃষকরা আগাম জাতের সরিষা চাষের দিকে বেশি ঝুঁকেছেন। এছাড়াও সরিষা উৎপাদনে সার কম প্রয়োগ করতে হয়, সেচ, কীটনাশক ও নিড়ানীর প্রয়োজন হয় না। খরচ কম ও স্বল্প সময়ে এ ফসল হয়ে থাকে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম ফার্মসঅ্যান্ডফার্মারকে বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় গত বছরের তুলনায় এবছর রেকর্ড পরিমাণ জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। ধানের বাজার খারাপ হওয়ার কারণে কৃষকরা বর্তমানে সরিষাসহ অন্যান্য সাথী ফসল চাষের দিকে বেশি ঝুঁকছেন। কারণ এই সব ফসলে খরচ ও পরিশ্রম কম এবং লাভ বেশি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরিষার আবাদ থেকে কৃষকরা বাড়তি মুনাফা পাবেন বলে তিনি আশা করছেন। তিনি আরও জানান, এবারে প্রতি বিঘায় সরিষার পরিমাণ ৮ মণ হারে ধরা হয়েছে। সরিষার বিভিন্ন রোগ-বালায় কৃষকদের করণীয় ও তা থেকে সরিষার আবাদ রক্ষার কৌশল সম্পর্কে পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন