নওগাঁর বরেন্দ্র ভূমিতে মিষ্টি আনারস চাষের অপার সম্ভাবনা

379

2017-09-12_4_493978

তরমুজের পর নওগাঁ’র ঠা ঠা বরেন্দ্রভুমি বলে খ্যাত সাপাহার উপজেলায় সুমিষ্ট আনারস চাষের অপার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। “আলোহা সোস্যাল সার্ভিসেস বাংলাদেশ” নামের একটি বেসরকারী উন্নয়ন সংগঠনের কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ এ সম্ভাবনাটি হাতে কলমে প্রমাণ করেছেন। তারা সেখানে সংগঠনের কিছু এবং অন্যের কিছু জমি লীজ নিয়ে সিলেট থেকে চারা সংগ্রহ করে আনারসের চাষ করে সফল হয়েছেন।

আনারসের চারা লাগানোর পর অতি যত্ন নেয়ার ফলে কিছু দিনের মধ্যেই গাছগুলো সুন্দর, সতেজ ও তরতাজা হয়ে ওঠে। মৌসুমে প্রায় প্রতিটি গাছে একটি করে আনারস আসে। এ বরেন্দ্র অঞ্চলে প্রথম তাদের নিজ হাতে লাগানো গাছগুলোতে আনারস ধরতে দেখে সাফল্যের আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে উঠে সকলের মন।

“আলোহা সোস্যাল সার্ভিসেস বাংলাদেশের ব্যবস্থাপক মো. বেলাল উদ্দীন আহম্মেদ এ জানান, বে-সরকারি এ সংগঠনটি ২০০৮সাল থেকে সাপাহার উপজেলার কৃষি এবং কৃষকদের উন্নয়নে কাজ করছে। কৃষকদের মাঝে বিনা মূল্যে বিভিন্ন প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে আসছে। ইতিপূর্বে এ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে নিজ উদ্যোগে অফিস ক্যাম্পাসে ড্রাগন ফল, মালটা, কমলাসহ বিভিন্ন মসলা জাতীয় ফসলের চাষাবাদ সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায় ২১১৫সালে প্রথম আনারসের চারা সংগ্রহ করে অফিস এলাকায় তারা পরীক্ষামুলকভাবে রোপন করে। চারা রোপনের এক বছরের মধ্যেই এখানকার উৎপাদিত আনারস বাজার জাত করা সম্ভব হয়। তারও এক বছর পর অর্থাৎ ২০১৭সালে এর পরিধি আরও বৃদ্ধি করা হয়। এ বছরই তাদের উৎপাদিত আনারস বাজারজাত করে সকল উৎপাদন ব্যয় বাদ দিয়ে প্রায় কুড়ি হাজার টাকা মুনাফা অর্জন সম্ভব হয়।

বরেন্দ্র এলাকার মাটি রুক্ষ হওয়ায় এবং তারা আনারস ক্ষেতে পর্যাপ্ত হরমোন জাতীয় কীটনাশক ব্যবহার করেনি। তবে সিলেট কিংবা মধুপুরের আনারসের চেয়ে সাপাহারের আনরস আকারে একটু ছোট হলেও এর স্বাদ এবং মিষ্টিগুণ অন্যান্য এলাকার আনারসের চেয়ে অনেক বেশি। তবে ক্ষেতে পর্যাপ্ত সেচ ব্যাবস্থা, একটু বেশী পরিচর্যা ও হরমোন জাতীয় কীটনাশকের ব্যবহার বৃদ্ধি করলে এর আকার সিলেট কিংবা মধুপুরের আনারসকে ছাড়িয়ে যাবে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এএফএম গোলাম ফারুক হোসেন জানান, আলোহা সোস্যাল সার্ভিসেস বাংলাদেশের উৎপাদিত আনারস তিনি খেয়েছেন এবং অন্যান্য এলাকার আনারসের চেয়ে এর গুণাগুণ অনেক বেশি বলেও জানিয়েছেন। তিনিও মনে করেন সাপাহারের এই ঠা ঠা বরেন্দ্র অঞ্চলের জমিতে আনারস চাষের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। ভবিষ্যতে আমের মত এ এলাকায় কৃষকরা আনারস চাষ করে অধিক লাভবান হবেন বলে তিনি মনে করেন। সূত্র: বাসস

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম