নানামুখি চাপের মুখে পোলট্রি খাত

1187

pic

পোলট্রি খাতের অন্যতম কাঁচামাল ‘সয়াবিন মিলের’ দাম বাড়ছে লাগামহীনভাবে। দেড় মাসের ব্যবধানে কেজিতে সর্বোচ্চ ১৩ টাকা বেড়েছে।

চলতি (২০১৭-১৮) অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার আগে কেজিপ্রতি সয়াবিন মিলের দাম ছিল ৩২ টাকা। বর্তমানে ৪২ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নতুন বাজেটে এ পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক বহাল থাকায় অস্বাভাবিক দাম বাড়িয়েছে দেশীয় ভোজ্য তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান।

পাশাপাশি কাঁচামালের ওপর অগ্রিম আয়কর, আমদানি, শুল্ক ও কর্পোরেট ট্যাক্স প্রত্যাহার না হওয়ায় বড় ধরনের চাপের মুখে পড়েছে এ শিল্প।

সূত্রমতে, পোলট্রি শিল্পের খাবার তৈরিতে প্রায় ৬০ শতাংশ ভুট্টা ব্যবহার হয়। দেশীয় ভুট্টা এ শিল্পের ৪৫ শতাংশ চাহিদা পূরণ করছে। বাকি ৫৫ শতাংশ আমদানি করা হয়।

জানতে চাইলে বাংলদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের (বিপিআইসিসি) প্রেসিডেন্ট মসিউর রহমান জানান, ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে কর অব্যাহতি সুবিধা দেয়া হয়নি। সার্বিক অবস্থায় এ শিল্প মৃত্যুর পথযাত্রী হওয়ার মতোই। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে সয়াবিন মিলের লাগামহীন দাম বৃদ্ধি। ফলে আত্মনির্ভরশীলতার দিকে অগ্রসরমান এ খাত এবং ডিম, মুরগির মাংস, একদিন বয়সী বাচ্চা ও ফিড আবারও আমদানিনির্ভর হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

জানা গেছে, পোলট্রি খাতের তিন সংগঠন ফিআব, বিএবি এবং বিপিআইসিসির পক্ষ থেকে আমদানি করা কাঁচামাল ভুট্টায় ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর (এধাইটি), সয়াবিন মিলে ১০ শতাংশ শুল্ক, ডিডিজিএসে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) এবং আমদানিকারকদের ওপর থেকে ৫ শতাংশ হারে আরোপিত টার্নওভার ট্যাক্স প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়। অর্থ মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে এ প্রস্তাব জানানো হয়। পাশাপাশি কর অব্যাহতি সুবিধা ২০১৫ সাল পর্যন্ত বহাল রাখার সুপারিশ করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ডিডিজিএসের ওপর থেকে মূসক প্রত্যাহার করা হলেও ভুট্টা আমদানিতে ৫৫-৬০ শতাংশ এবং সয়াবিন মিলে ২০-২৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর ও শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়নি। সামগ্রিকভাবে দেখা যাচ্ছে , আমদানি পর্যায়ে কর ও শুল্ক আরোপের কারণে ফিডের উৎপাদন খরচ ৫ থেকে ৬ টাকা বেড়ে যাচ্ছে।

সূত্রমতে, আগামী ২০১১ সালে দেশের চাহিদা মেটাতে বছরে প্রায় ৯৮ কেটি বাচ্চার প্রয়োজন। এছাড়া প্রায় ১ হাজার ৪৭৯ কোটি ডিম ও ১২ লাখ টন মুরগির মাংস এবং ৫৫-৬০ লাখ ফিড উৎপাদনের প্রয়োজন হবে। এটি বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণ।
এ শিল্পের একজন উদ্যেক্তা বলেন, এসব পণ্যের দাম ভোক্তা সাধারণের নাগালের মধ্যে থাকে, সেটিও নিশ্চিত করতে হবে। ফলে কর ও শুল্ক প্রত্যাহার করতে হবে ২০২৫ সাল পর্যন্ত।

এ প্রসঙ্গে ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশর সভাপতি আবু লুৎফে ফজলে রহিম খান শাহরিয়ার বলেন, কর ও শুল্ক বৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে ফিড শিল্পের ওপর। এতে এ খাতের ফিড, একদিন বয়সী বাচ্চা, ডিম ও মুরগির মাংসের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেছে।

শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, পোল্ট্রি শিল্পকে এগিয়ে নেয়ার পথে সরকার নীতি (ফিসক্যাল পলিসি) প্রধান অন্তরায়। হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হলে শুধু পোল্ট্রি কেন কোনো শিল্পই দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকতে পারবে না। তাই এসব ক্ষেত্রে কমপক্ষে ২০-৪০ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা থাকা বাঞ্ছনীয়।

জানা গেছে, কয়েক বছর আগেও বাংলাদেশে ফিনিশড ফিড কয়েক বছর আগেও বাংলাদেশে ফিডিশড ফিড আমদানি নির্ভরশীল ছিল। এছাড়া একদিন বয়সী বাচ্চা, হ্যাচিং ডিম, খাবার ডিম, মুরগির মাংস সবই ছিল আমদানিনির্ভর। কিন্তু এখন এগুলোর শতভাগই দেশে উৎপাদিত হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে দ্য ওয়ার্ল্ডস পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ শাখার সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ অঞ্জন বলেন, মানসম্পন্ন পোলট্রি ফিড আমদানির অন্যতম পূর্বশর্ত হচ্ছে মানসম্পন্ন উপকরণের ব্যবহার নিশ্চিত করা । কিন্তু দেশীয়ভাবে যে সয়াবিন মিল উৎপাদিত হচ্ছে, তা আন্তর্জাতিকমানের অনেক নিচে। এদিকে কাঁচামাল আমদানি করে ফিড মিলগুলোতে সরবরাহ করেছেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু অতিরিক্ত আয়কর এবং কর্পোরেট ট্যাক্রের চাপে পড়েছেন তারা।

হিসাব মতে, কোনো একটি কাঁচামালের দাম ৩০ টাকা হয় হলে এর সর্বোচ্চ মুনাফা ৫ শতাংশের অধিক হওয়া সম্ভন নয়। অর্থাৎ সর্বোচ্চ মুনাফা ১ দশমিক ৫০ টাকা। সে হিসাবে আয়কর হওয়া উচিত সর্বোচ্চ শূন্য দশমিক ৫০ টাকা। কিন্তু বাস্তবে ট্যাক্স আদায় করা হচ্ছে ৪ দশমিক ৫০ টাকা (আয়কর হার ৩০ শতাংশ হিসাবে ) অর্থাৎ প্রায় ৩ গুণ হারে। এর ওপরে আরও আছে ৫ শতাংশ হারে আরোপিত কর্পোরেট ট্যাক্স। সূত্র: মিজান চৌধুরী, যুগান্তর।

আধুনিক পোল্ট্রি ফার্ম গড়তে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও সাজ-সরঞ্জামের খোঁজ

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মালয়েশিয়ান ইন্টার্ন শিক্ষার্থীদের ফিডব্যাক অনুষ্ঠান

World Famous Veterinarians

ঘরের সাজে দেশি গাছ

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম