নিজের হাতে তৈরি করুন শখের বনসাই

956

91258327_1407470809425890_7129215110823804928_n
বনসাই অনেকেই চিনে থাকেন। এই বনসাই হতে পারে আপনার আয়ের একটি অন্যতম উৎস। যারা বনসাইয়ের চারা সংগ্রহ করতে চান তারা বিভিন্ন নার্সারী থেকে নিতে পারেন এছাড়াও বীজসংগ্রহ করেও চারা তৈরি করার মাধ্যমেও এর উৎপাদন করতে পারেন। টবের আকার হওয়া উচিত গাছের শাখা প্রশাখাসহ তার বিস্তারের চেয়ে কিছুটা ছোট। আকৃতি দৃষ্টিনন্দন হওয়া চাই। টবের আকৃতি সবসময় বৃত্তকার হবে। এমন ধরন ঠিক নয়। আয়তাকার, বর্গাকার বা ত্রিভুজাকারও হতে পারে।

কম্পোস্ট- ১/২ কেজি হাড়গুঁড়ো ৫০ গ্রাম খড়িমাটি গুঁড়ো ৫০ গ্রাম, ইট গুঁড়ো ১৩০ গ্রাম, কাঠের ছাই ৭৫ গ্রাম মাটিতে মিশিয়ে বনসাইয়ের জন্য মাটি তৈরি করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে বনসাই লাগানোর জন্য দো আঁশ মাটি হয়।

কাটিং গুটি কলম বা বীজের চারা বনসাইয়ে সারমাটি ভরে যথারীতি লাগাতে হবে। টবে জল নিষ্কাশনের ছিদ্রের ওপর ইটের কুচির পবির্তে এক টুকরো তারের জালি রেখে তা কিছু কাঁকর দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। তারপর যথারীতি সারমাটি ভরে চারা লাগাতে হবে। বনসাই তৈরির ধাপ: বনসাই তৈরির জন্য কান্ড শেকড়, শাখা-প্রশাখা ও পাতার বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করাই যথেষ্ট নয়। টবের ছোট গেছে প্রকৃতির কোলে বেড়ে ওঠা বয়োবৃদ্ধ গাছের সুঠাম ভঙ্গিমায় আনার চেষ্টা করতে হবে। চারাকে অতিমাত্রায় বোটে করে রাখতে ও ঝোপালো করতে কুঁড়ি বা পত্রমুকুল ভেঙে দিতে হয়। ক্ষুদে বনসাইয়ের বেলায়ও তা করতে হয় বা নিরন্তর। কারণ, সবসময় বাড়ন্ত ডগা মাত্র দুটি পাতা রেখে আর সব ছেঁটে দিতে হবে। কুঁড়িভাঙার প্রধান উদ্দেশ্য হলো নিচের পাতার কাঙ্ক্ষিত মুকুলকে বাড়তে বাধ্য করা। কারণ ওগুলো বাড়লে গাছের শাখার সংখ্যা বেড়ে গাছ ঝোপালো হবে।

বনসাই যে রূপ ধারণ করাতে চান সেটাই করতে পারবেন। আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী এর রূপ বদলাতে পারবেন সেভাবে শাখা বাছাই করা প্রয়োজন। জোড়া পাতার কক্ষ থেকে কান্ডের দু’পাশে দুটি শাখা গজায়। বনসাই এর জন্য নিচের ডানদিকের কাণ্ডটি রাখলে উপরের কাণ্ডটিকে বামদিকে রাখতে হয়। আসলে বনসাইয়ের কান্ডের রূপ এমন হবে- যাতে সামনের দিকে কোনো শাখা থাকবে না। থাকবে কেবল ডান ও বাম দিকে এবং পেছনে কান্ডের মাথার দিকেও সর্বদিকেই শাখা থাকতে হবে। প্রায়শই বনসাইয়ের বয়স ৩-৪ বছর হলে তখন প্রম্ননিয়ের প্রয়োজন হয়। বাছাই করা মোটা শাখাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটতে হয়।

কান্ড বা শাখাকে সুন্দর সুঠাম ভঙ্গিমায় আনতে যেসব কৃত্রিম উপায় অবলম্বন করা হয় তার বাধা তাদের মধ্যে অন্যতম। সরল শাখায় তার জড়িয়ে আঁকা-বাঁকা রূপ দেয়া যায়। কাণ্ড বাধার জন্য মোটা তার ও শাখা বাধার জন্য সরু তার ব্যবহার করা যায় তবে গ্যালভানাইজিংয়ের তার ছাড়াও তামার তার ব্যবহার করা যেতে পারে। খেয়াল রাখতে হবে যেন তার খোলার পর গাছকে রোদে রাখা না হয় যতটুকু পারা যায় হালকা ছায়ায় রাখতে হবে। কেননা এসময় গাছ বেশ দূর্বল হয়ে পড়ে। প্রায় সপ্তাহখানেক রাখার পর অনত্র রাখা যেতে পারে। তার দিয়ে বেধে দিতে চাইলে অন্তত ৬ মাস পর করা ভাল। বনসাই তৈরির জন্য উপযুক্ত প্রজাতির গাছ। বট, পাকু, হিজল, অশ্বথ, ডুমুর, ডালিম, কদম, বাগানবিলাস, বোতল ব্রাশ, নীম, জামরুল, তেঁতুল ইত্যাদি।

ফার্মসএন্ডফার্মার/২৭মার্চ২০