নিয়াজ আহমেদ সিপন, লালমনিরহাট থেকে: নিলামে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার অভাবে সীমান্তে জব্দ করা চোরাচালান পণ্য বিক্রি করে সরকারের রাজস্ব আয় কম হচ্ছে। বিশেষ করে গরু-মহিষের ক্ষেত্রে বিবিজি সদস্য বাজার মূল্য জানে না বলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা কৌশলে কম মূল্য নির্ধারণ করে নিজরাই নিলাম ডাকে কিনে নিচ্ছে।
ভারতীয় সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটে আগস্ট মাসে ২৫০টি ভারতীয় গরু মহিষ জব্দ করেছে বডার গার্ড বাংলাদেশ(বিজিবি)। নিলামের নীতিমালা না থাকায় এসব গরু নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করতে হয়েছে।
বিজিবি লালমনিরহাট ১৫ ব্যাটালিয়ন হেডকোয়াটারের সাধারন শাখা সূত্রে জানা গেছে, সীমান্ত সুরক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে বিজিবি সদস্যরা। সীমান্তে মাদক ও গরু মহিষসহ সব ধরনের চোরাচালান রোধে সীমান্ত এলাকায় নিয়মিত টহল দিচ্ছেন তারা।
ঈদ সামনে রেখে চোরাকারবারি সক্রিয় হয়ে ওঠায় সীমান্তের টহল জোরদার করা হয়েছে। বিজিবির টহলে আগস্ট মাসের ৩১ দিনে ভারতীয় ২২৪টি গরু ও ২৬টি মহিষ জব্দ করা হয়। এসব গরু-মহিষ কাস্টমসের মাধ্যমে প্রকাশ্য নিলামে বিক্রি করে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে এককোটি ৫৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
গরু-মহিষ জব্দের পর স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সহায়তায় নিলাম মূল্য নির্ধারণ করে বিজিবি গরু-মহিষ জব্দের পর স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সহায়তায় নিলাম মূল্য নির্ধারণ করে বিজিবি
গরু-মহিষ জব্দের পর স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সহায়তায় এর মূল্য নির্ধারণ করেন বিজিবির ক্যাম্প কমান্ডার। যদিও বাজার দর সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই বিজিবি সদস্যদের। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা কম মূল্যে গরু-মহিষ নেয়ার জন্য কম মূল্য নির্ধারণ করেন। মূল্য নির্ধারণের পর কাস্টমস কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে কোনো প্রচারণা ছাড়াই নিলাম দেয়া হয় এসব গরু মহিষ।
যে ব্যবসায়ীরা মূল্য নির্ধারণ করেন তারাই নিলাম ডাকের মাধ্যমে নামমাত্র মূল্যে এসব গরু-মহিষ ক্রয় করছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। নিলামেপ্রাপ্তদের অতিরিক্ত গুনতে হয় বিজিবির সোর্স মানি ও গরুর রাখাল খরচ।
স্থানীয় ব্যবসায়ী খুপরী জানান, কাস্টমসকে নিলামের অর্থ বুঝিয়ে দেয়ার পর ২৭টি গরুর জন্য রাখাল ও সোর্স মানি গুনতে হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। নিলামের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানান তিনি।
লালমনিরহাটের সব চেয়ে বেশি গরু মহিষ জব্দকারী দুর্গাপুর বিওপি ক্যাম্পের ইনচার্জ হাবিলদার সাইফুল ইসলাম বলেন, “সোর্স মানি ও গরুর খাবার খরচ বিজিবির পক্ষ থেকে বরাদ্দ না থাকায় নিলামের সময় বলা হয়, নিলাম অর্থের সঙ্গে যুক্ত হবে এ খরচ। তবে এসব অর্থ যথাযথভাবেই বণ্টন করা হয়।”
লালমনিরহাট কাস্টমসের পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম রফিক জানান, সম্ভাব্য মূল্য নির্ধারণের কোনো নীতিমালা না থাকায় রাজস্ব কম হচ্ছে। বাজার দর সম্পর্কে অজ্ঞ বিজিবি কর্তৃপক্ষ যেভাবে মূল্য নির্ধারণ করে সে অনুযায়ী নিলাম দেয়া হয়।
বিজিবি লালমনিরহাট ১৫ ব্যাটালিয়নের পরিচালক লে. কর্নেল গোলাম মোর্শদ বলেন, সার্বক্ষণিক টহলের কারণে ভারতীয় গরু-মহিষ আটকের মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ে সহায়তা করছে বিজিবি। তবে সোর্স মানি ও গরুর খোরপোষ রাখাল খরচ সরকারিভাবে না দেয়ায় নিলামের পরে প্রাপ্ত ব্যবসায়ীর কাছ থেকে এ খরচের সমতা করা হয়।”
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এ