সুমন মুখার্জী, নীলফামারী থেকে: ছাদে বাগান গড়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে নীলফামারীর সৈয়দপুর বাঁশবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সারি সারি টবের গাছে বেড়ে উঠছে নানা প্রজাতির ফল-ফুল আর সবজি। সেখানে বেড়ে উঠা গাছের ডালে ঝাঁকে ঝাঁকে নানা প্রজাতির ফুল, ফল আর সবজি শোভা পাচ্ছে। সেই দৃশ্য দেখতে ভিড় করছেন উৎসাহী মানুষ।
স্কুলের ছাদেও যে বাগান করা সম্ভব সেটা প্রমাণ করেছেন বাঁশবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
স্কুলের ছাদে বাগান দেখে সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র আমজাদ হোসেন সরকার পৌর পরিষদের ফান্ড থেকে মাস্টার রোলে বাগান পরিচর্যা ও স্কুলের ঝাড়ুদার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন একজনকে।
স্কুলে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে ‘আমাদের আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন’ দেয়ালে লেখাটি। তার পাশেই শহীদ মিনার। সৈয়দপুর শহর থেকে এক কিলোমিটার দূরে ১৪নং ওয়ার্ডের শহীদ আব্দুল কুদ্দুস লেনে ১৯৫৮ সালে বাঁশবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়।
২১ শতক জমির ওপর নির্মিত স্কুলটিতে ১১জন শিক্ষক-শিক্ষিকা দিয়ে ৩৫০জন শিক্ষার্থীকে লেখাপড়া করানো হয়। ছাত্র-ছাত্রীর মেধা বিকশিত করার লক্ষ্যে তাদের লেখনির মাধ্যমে দেয়ালিকার আত্মপ্রকাশ ঘটে। প্রতিমাসে অভিভাবক সমাবেশ তো আছেই, তথ্য প্রযুক্তির যুগে মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে ক্লাসরুম পরিচালনা করা হয়।
স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি জোবায়দুর রহমান শাহীন ২০১৫ সালে শ্রেষ্ঠ বিদ্যুৎসাহী সমাজকর্মী, ২০১৬ সালে রংপুর বিভাগের শ্রেষ্ঠ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে স্বীকৃতি পান। তার সুপরিকল্পিত প্ল্যানে স্কুলের ছাদকে ফেলে না রেখে ব্যবহার করেছেন বাগান হিসেবে। ২০১৬ সালের ৮ অক্টোবর স্কুলের ছাদে বাগানের কার্যক্রম শুরু হয়।
বিদ্যালয়ে রয়েছে দুটি দ্বিতল ভবন। একটি ভবনের ছাদে ফল, ফুল আর ঔষধি বৃক্ষের বাগান। আরেকটিতে করা হয়েছে সবজির বাগান। নিজের বিদ্যালয়ের ছাদের বাগানে আম, মালটা’র মতো ফল পেয়ে শিশুরাও সীমাহীন আনন্দে ভাসছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ফেরদৌসী আক্তার জাহান বলেন, গত বছর ছাদে বাগানের কাজ শুরু করা হয়। বর্তমানে বাগানের গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে আম, কাগজি লেবু, কমলা, মালটা, আমড়া, আম্রপলি আম, কাগজি পেয়ারা, বাউকুল, ডালিম, সবেদা জাম, আঙ্গুর এবং লিচু। সবজি বাগানের ক্ষেতে মরিচ, বোম্বে মরিচ আর চায়না বেগুন চাষ করা হয়।
সভাপতি জোবায়দুর রহমান শাহীন বলেন, বাগান করার ফলে বদলে গেছে স্কুলের দৃষ্টিনন্দন এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ। আমাদের স্কুলে বিভিন্ন ধরনের ফুলেরও গাছ রয়েছে। শিউলী, চন্দ্র মল্লিকা, কলাবতী, গোলাপ ও দোলনচাঁপা অন্যতম। স্কুলটিকে দেশের অন্যতম স্কুলে রূপান্তরে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হোমায়রা মন্ডল বলেন, ফল আমাদের ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ফল গাছ মানুষের খাদ্যের যোগান দেয়, পুষ্টির অভাব মেটায়। বিদ্যালয়ের ছাদে এমন বাগান অবশ্যই শিশুদের জন্য অনুকরণীয় একটি বিষয়। তারা বাস্তব জীবনে এর সুফল পাবে।
মাছের তৈরি নিরাপদ খাদ্যপণ্য নিয়ে বাজারে এলো ‘সিপ’
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম