পঞ্চগড় জেলায় চলতি মৌসুমে ভুট্টার বাম্পার ফলন হতে পারে এমন আশা করছেন এলাকার কৃষকরা। পোকা, পচন, রোগ বালাই কম থাকার কারণে এবার ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কম খরচে বেশি লাভের কারণে কৃষকরা ভুট্টা চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। কোন কোন এলাকায় আগাম জাতের ভুট্টা জমি থেকে উত্তোলন শুরু করছেন কৃষকরা।
বর্তমানে ভুট্টা প্রতিমণ (৪০) কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত। গত বছর বাজারে ভুট্টার দামও বেশ ভালো পেয়েছেন চাষিরা। চলতি মৌসুমে আরো ভালো দামের আশা করছেন কৃষকরা। বর্তমানে ভুট্টা আবাদ কৃষকদের প্রধান অর্থকরি ফসল হিসেবে গুরুত্ব বহন করছে। এ আবাদ করতে কৃষকদের অধিক পরিশ্রম করতে হয় না। অল্প খরচে বেশি লাভ হয় এ জন্য ভুট্টা চাষের দিকে কৃষকরা ঝুঁকে পড়ছে।
ভুট্টা মূলত মেক্সিকান ফসল। বাংলাদেশে ১৯৭৫ সালে কম্পোজিট জাতের বীজ দিয়ে আবাদ শুরু হয়। তবে ২০০৩-০৪ সালে ভুট্টা আবাদ কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে থাকে কৃষি কর্মকর্তারা।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় এবার চলতি মৌসুমে ২০ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। ভুট্টা আবাদ সম্পর্কে কথা হয় রামগঞ্জ বিলাসী গ্রামের ভুট্টা চাষি শেখ ফরিদ সাথে।
তিনি বলেন, এবার ৩ বিঘা জমিতে ভুট্টা আবাদ করেছেন। এরই মধ্যে বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে প্রায় ১১’হাজার টাকা। আবহাওয়া ভালো থাকলে এবার ভুট্টার দাম পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন তিনি। ভুট্টা আবাদ করে অনেক চাষি লাভবান হচ্ছেন। তবে সমস্যা হচ্ছে ভুট্টার বীজ শতভাগ হাইব্রিড এবং বিদেশি প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভরশীল হতে হচ্ছে। যদি দেশীয় কোন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান বীজের যোগান দিতে পারত তাহলে ভালো হত। ভুট্টার চাষ প্রতি বছর ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কৃষকরা বলছেন, এ আবাদের ফসল বিক্রির সময় নগদ টাকা পাওয়া যায়। চাষ ও বিক্রি করতে কোন ঝামেলা হয় না। ফলে তারা ভুট্টা চাষের দিকে ঝুঁকছে বেশি করে।
পঞ্চগড় জেলার কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক সামছুল হক জানান, ভুট্টা আবাদে রোগ বালাই নেই বললেই চলে, খরচের তুলনায় লাভ বেশি, অন্যান্য ফসলের তুলনায় চাষিরা লাভবান হচ্ছেন। তাই এ আবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। চলতি মৌসুমে ভুট্টার বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন তিনি।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এমএস