পতিত জমিতে বাণিজ্যিকভাবে তরমুজ চাষ মীরসরাইয়ের কৃষকরা

184

চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের ভূমিগুলো বছরের পর বছর অনাবাদি ও পতিত থাকলেও বর্তমানে সেখানে তরমুজ চাষ হচ্ছে। সড়ক ব্যবস্থার উন্নতি ও বাজারজাতকরণে সুবিধা থাকায় এখানকার সুস্বাদু ও মিষ্টি তরমুজ চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলার ভোক্তার কাছে। গত বছর বাণিজ্যিকভাবে উপজেলার ইছাখালী ইউনিয়নে তরমুজ চাষ করে সাড়া ফেলেছেন কৃষকরা।

উপজেলার রবি মৌসুমে পতিত জমিতে উপযুক্ত আবহাওয়া ও বালু মিশ্রিত মাটি হওয়ায় ইছাখালী ও সাহেরখালী ইউনিয়নের চরাঞ্চল এলাকায় প্রায় ৭০ একরের বেশি জমিতে তরমুজের চাষ করে মুনাফার আশা করছেন কৃষকরা। বর্তমানে বেশিরভাগ গাছে ফুল ফোটার পাশাপাশি তরমুজের মুকুল এসেছে। গত বছর এসব জমিতে চাষাবাদ করে লাভবান হওয়ায় চলতি বছর বেড়েছে চাষের জমির সংখ্যা।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ইছাখালী ও সাহেরখালী ইউনিয়নে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে সবুজ লতার সমারোহ। একটা সময় এ দুই ইউনিয়নের চরাঞ্চলের বেশিরভাগ জায়গাজুড়ে রবি মৌসুমে খালি পড়ে থাকত। বর্তমানে ইছাখালী খাল থেকে পর্যাপ্ত পানি সংগ্রহ করে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার কৃষি উদ্যোক্তারা মীরসরাইয়ে তরমুজ চাষ করছেন।

এদিকে স্থানীয় কৃষকরা জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতা পেলে তারাও তরমুজ চাষ করতে চান। কারণ নিজেদের জমিতে নোয়াখালীর সুবর্ণচর থেকে আসা কৃষকরা বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে লাভবান হচ্ছেন।

জানা গেছে, এখানকার মাটি তরমুজ চাষের উপযোগী হওয়ায় গত বছরের ডিসেম্বর থেকে স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে পাঁচ মাসের জন্য প্রতি একর জমি ১২, ১৪ কিংবা ১৫ হাজার টাকা হারে খাজনায় বর্গা নিয়ে সেই জমিতে তরমুজের বীজ বপন করেন সুবর্ণচরের কৃষি উদ্যোক্তারা।

কৃষক ইলিয়াস জানান, এবার আমরা ডিসেম্বরের শেষের দিকে ১১ জন মিলে ৭০ একর জমিতে তরমুজের চারা রোপণ করেছি। এখন গাছে ফুল ও মুকুল আসতে শুরু করছে। আশা করছি, ফলন ভালো হবে।

ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল মোস্তফা জানান, গত বছরের মতো এ বছর ইছাখালীতে সুবর্ণচরের কৃষকরা তরমুজ চাষ করেছেন। স্থানীয় কয়েকজন কৃষক তাদের মাধ্যমে চাষাবাদের চেষ্টা করছেন। মূলত স্থানীয়দের এ বিষয়ে অভিজ্ঞতা না থাকায় তরমুজ চাষে আগ্রহ কম। তাছাড়া তরমুজ চাষে খরচ তুলনামূলক বেশি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় জানান, ইছাখালীতে তরমুজ চাষের বিষয়ে জেনেছি। তবে আমি এখনও দেখিনি। আবহাওয়া উপযোগী থাকলে ফলন ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তরমুজ চাষে পরিশ্রম তুলনামূলক বেশি। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় যারা তরমুজ চাষ করতে আগ্রহী, তাদের জন্য আমাদের কৃষি অফিস থেকে ১২ মাসি তরমুজ চাষের ওপর প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।