আমরা রাস্তাঘাটে কিংবা স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় প্রায়ই শামুক দেখতে পাই। অন্যদিকে পুকুরের আশপাশে বা মাছ ধরতে গেলেই জালে জড়িয়ে যায় ঝিনুক। শামুক-ঝিনুকের মাংসল অংশ হাঁস, পাঙ্গাস মাছ ও চিংড়ির খাবার হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়। আবার চীন, কোরিয়া বা অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলোতে মানুষের খাবার হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। আর শামুক-ঝিনুকের খোলস থেকে চুনও তৈরি করা হয়।
এ ছাড়াও পানিতে শামুক ঝিনুকের উপস্থিতি দেখে পানির বিশুদ্ধতা বা অক্সিজেন আছে কিনা তার নিদের্শক হিসেবেও কাজ করে বলেও জানিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম।
অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, শামুক-ঝিনুক সাধারণত বদ্ধ জলাশয়ের মাটিতে কাদার ভেতরে ঢুকে থাকে। এ জন্য তাদের প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেন প্রয়োজন হয়। যদি মাটিতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন না থাকে তাহলে শামুক পানির উপরে উঠে আসে এবং প্রয়োজনীয় অক্সিজেন গ্রহণ করে। যদি তাতেও অক্সিজেনের ঘাটতি না মেটে তাহলে তারা স্থলে চলে আসে।
অন্যদিকে পুকুরে পযার্প্ত অক্সিজেন না থাকলে মাটিতে থাকা সব ঝিনুক মারা যায়। অর্থাৎ যদি কোনো পুকুরের মাটিতে শামুক-ঝিনুক পাওয়া যায় তাহলে বলা যায় ওই পানিতে যথেষ্ট পরিমাণে অক্সিজেন রয়েছে। আর শামুক-ঝিনুক না পাওয়া গেলে পানি বিশুদ্ধ নয় বলে ধারণা করা যেতে পারে।
এ ছাড়াও তিনি বলেন, পৃথিবীতে প্রায় ৫০ হাজার প্রজাতির শামুক রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের সাগরে ২১২ প্রজাতির, স্বাদুপানিতে ৪০ প্রজাতির ও স্থলে ২৬ প্রজাতির শামুক পাওয়া যায়। অন্যদিকে দেশে ৪ প্রজাতির ঝিনুক পাওয়া যায়। একসময় পুকুর ও নদীতে প্রচুর শামুক ও ঝিনুক পাওয়া যেত। কিন্তু বতর্মানে কম জায়গায় অধিক মাছ চাষ ও অতিরিক্ত খাবার দেয়ায় পুকুরের মাটিতে অক্সিজেনের অভাব দেখা দিচ্ছে। আর অক্সিজেনের অভাবের কারণে শামুক ঝিনুকের আশ্রয়স্থল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় নিবির্চারে শামুক-ঝিনুক আহরণ বন্ধ করতে সরকারকে সচেতনতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে শামুক-ঝিনুকের অভাব পরিবেশের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।
ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/ডেটএইচ