পানির রং দেখেই মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য নির্ণয়ের কৌশল

1652

পানির রং দেখেই মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য নির্ণয়ের কৌশল নিয়ে আমাদের মধ্যে অনেকেরই কোন ধারণা নেই। মাছ চাষের পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মাছের পুকুরে যত বেশি পরিমাণ প্রাকৃতিক খাদ্য উপাদান থাকবে সেই পুকুরে দ্রুত মাছের বৃদ্ধি হবে এবং মাছের রোগ কম হয়ে থাকে। তবে পুকুরে মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য কি পরিমাণে আছে কিংবা প্রাকৃতিক খাদ্য আরও বাড়াতে হবে কিনা তা আমরা নির্ণয় করতে পারি না। আজ চলুন জানবো পানির রং দেখেই মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য নির্ণয়ের কৌশল সম্পর্কে-

পানির রং দেখেই মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য নির্ণয়ের কৌশলঃ
পুকুরের পানির রং দেখেই মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য নির্ণয়ের কৌশল সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হল-

এই আলোচনায় হাতের তৈরি সেকিডিস্কের সাহায্যে পানির রং দেখেই কিভাবে মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য নির্ণয় করতে হবে সেই বিষয়টিই আলোকপাত করা হবে।

১। পুকুরের পানির রং দেখেই মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য নির্ণয় করার জন্য প্রথমেই একটি সেকিডিস্ক তৈরি করে নিতে হবে। তৈরি করা সেকিডিস্ক এর মধ্যে দুইটি দাগ দিয়ে দিতে হবে। একটি দাগ ২০ সে.মি এবং আরেকটি দাগ ২৫ সে.মি হিসেবে দিতে হবে।

২। তারপর তৈরি করা সেকিডিস্কটি ২০ সে: মি: পর্যন্ত পানিতে প্রবেশের পর সাদা কালো দাগ ঝাপসা হয়েছে কিনা তা দেখতে হবে, এটা কার্প জাতীয় মাছের জন্য। আর যেসব মাছকে সম্পুরক খাবার দেওয়া হয়, তার জন্য আদর্শ পানির রং হবে ২০ সে.মি পর্যন্ত।

অর্থাৎ সেকিডিস্ক টি পানিতে ২০ সে.মি গভীরে প্রবেশ করানোর পরে যদি সাদা কালো দাগ গুলো ঝাপসা হয়ে যায় তাহলে বুঝবেন প্রাকৃতিক খাবার এবং অক্সিজেন তৈরীর প্রয়োজনীয় ফাইটোপ্লাংক্টন ও জুওপ্লাংক্টন যথেষ্ট পরিমানে আছে।

আর যদি ২০ সে.মি প্রবেশের পরও সাদা কালো দাগ স্পষ্ট দেখা যায়, তাহলে বুঝতে হবে পুকুরে জৈব ও রাসায়নিক সার দেওয়ার সময় হয়েছে।

সম্পুরক খাবার কম দেওয়া হলে, তাহলে সেকিডিস্ক ১৫ সে.মি প্রবেশ করালে সাদা কালো দাগ ঝাপসা হয়ে যাবে এমন ভাবে জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করবেন।

৩। আর ক্যাটফিসের জন্য সেকিডিস্কটি পানির ২৫ সে.মি গভীরে প্রবেশের পর সাদা কালো দাগ ঝাপসা হয়েছে কিনা তা দেখতে হবে। ক্যাটফিসের জন্য পানির আদর্শ সেকিডিস্কের মাপ হবে ২৫ থেকে ৩০ সে.মি। খেয়াল রাখতে হবে ক্যাটফিসের পুকুরের পানির রং যেন ২৫ থেকে ৩০ সে.মি এর মধ্যেই থাকে। এমনটি করা হলে সবুজ ব্লুম হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।

একটু চেষ্টা করলেই এরকম একটি সেকিডিস্ক বানিয়ে নিয়ে পানিতে থাকা জুওপ্লাংক্টন ও ফাইটোপ্লাংক্টনের সঠিক পরিমাপ নির্নয় করা যায়। উপরে দুটি মাছ চাষের জন্য যে পরিমানে পানির রং দেখানো হয়েছে তাই যথেষ্ট। কোনভাবেই পানির রং এর চেয়ে বেশি সবুজ করার দরকার নেই।

ফার্মসএন্ডফার্মার/২৫এপ্রিল২০