বাংলাদেশের ছোট মাছগুলোর মধ্যে পাবদা মাছ আবহমান কাল থেকেই বাঙালিদের খুব প্রিয় মাছ হিসেবে সমাদৃত। খেতে সুস্বাদু ও কাঁটা কম থাকার কারণে মাছটি ছোটদের কাছে খুবই প্রিয়। অতীতে বিভিন্ন প্রাকৃতিক জলাশয় যেমন- নদী-নালা, খাল-বিল, প্লাবনভূমি, ধানক্ষেত, হাওর-বাওরে এসব মাছ প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যেত। কিন্তু নদীর উজানে চর জেগে উঠার কারণে পানির নাব্যতা কমে যাওয়া, অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ, ধানক্ষেতে কীটনাশকের ব্যবহার, বিল-ঝিল শুকিয়ে মাছ ধরা ইত্যাদি নানাবিধ কারণে এ মাছের প্রজনন ও চারণক্ষেত্র সংকুচিত হয়েছে এবং প্রাচুর্যতা ব্যাপকহারে হ্রাস পেয়েছে।
IUCN (২০০৩) এর সমীক্ষায় পাবদা মাছকে বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করা হয়। বাজারে সরবরাহ কম থাকায় এবং চাহিদা বেশ হওয়ায় এ মাছের বাজারমূল্য রুই জাতীয় মাছের তুলনায় অনেক বেশি।
ইদানিং বিভিন্ন প্রজাতির এই পাবদা মাছ চাষে চাষী ও উদ্যেক্তাদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সম্প্রতি বিপন্ন প্রজাতির এ মাছের বিলুপ্তি রোধকল্পে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষকদের গবেষণায় কৃত্রিম প্রজনন, পোনা লালন-পালন এবং চাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে সফল্য অর্জিত হয়েছে।
বৈশিষ্ট্য: অর্থনৈতিক ও পুষ্টিমাণ বিবেচনায় পাবদা মাছের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। অত্যন্ত সুস্বাদু বিধায় সব ধরনের ক্রেতার কাছে এ মাছের বিশেষ কদর রয়েছে। সে কারণে এটির চাহিদা ও বাজারমূল্য বেশি । নিম্ন এ মাছের বৈশিষ্ট্যগুলো দেয়া হলো:
# গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর আয় বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
# প্রচুর পরিমাণে আমিষ ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট বিদ্যমান থাকে।
# ছোট কিংবা বড় জলাশয়ে সহজ ব্যবস্থাপনায় চাষ করা যায়।
# কাপজাতীয় মাছের সাথেও একত্রে চাষ করা যায়।
# খেতে সুস্বাদু হওয়ায় ক্রেতারা বড় মাছের তুলনায় এই মাছ বেশি পছন্দ করে।
# বাজারে প্রচুর চাহিদা ও সরবরাহ কম থাকায় এর মূল্য অন্যান্য মাছের তুলনায় অপেক্ষাকৃত বেশি।
( চলবে… )
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম