পার্সিমন বা কাকি একটি জাপানি ফল যা বাংলাদেশে চাষ হচ্ছে।
পার্সিমন বা কাকি বর্তমানে বাংলাদেশের নাটোরে চাষ হচ্ছে যা মূলত জাপানের জাতীয় ফল। নাটোরে অল্প পরিসরে পার্সিমনের ফলন পাওয়া গেলেও অচিরেই এ ফল এদেশের মানুষের কাছে ছড়িয়ে পড়বে।
পার্সিমনের উতপত্তিস্থান ও গুণাগুনঃ
পার্সিমনের উৎপত্তিস্থল চায়নাতে হলেও জাপান, কোরীয় উপদ্বীপ ছাড়িয়ে চলে গেছে ইউরোপ ও আমেরিকাতে। এই ফলটি ভিটামিন এ, বি এবং সি’তে ভরপুর। এতে রয়েছে এন্টি অক্সিডেন্ট এবং পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস ও কপারসহ একাধিক খনিজ লবণ।
মানুষের শরীরের জন্যে উপকারী পার্সিমনের অসংখ্য গুনাগুণ থাকলেও এতে থাকা পেকটিন শরীরের রক্তচাপ এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বাংলাদেশে পার্সিমনের চাষাবাদঃ
জাপান, ইটালী, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম থেকে সংগ্রহ করা ১৫টি পার্সিমন গাছে ফল ধরানোর চেষ্টায় নিজেকে নিয়োজিত করেন দেশের প্রখ্যাত ফল গবেষক এস এম কামরুজ্জামান। পরবর্তীতে তিনি ২০১০ সালে নাটোরের মডার্ণ হার্টিকালচার সেন্টারে পার্সিমন গাছে ফল ধরাতে সফল সফলতা পান।
বর্তমানে প্রায় কুড়ি ফুট উচ্চতার থাইল্যান্ডের ছয়টি গাছের প্রত্যেকটিতে দেড় থেকে দুই হাজার করে ফল ধরেছে। ৬-৭ টি ফলের ওজন ১ কিলোগ্রাম। রং এবং আকৃতিতে এদেশের টমেটো এবং গাবের সাথে সাদৃশ্য থাকা পার্সিমন ফল হলুদ ও কমলা রঙের মিশ্রনে থোকায় থোকায় গাছে ধরে। সুস্বাদু ও রসালো পার্সিমনের মধ্যে সফেদার মত কয়েকটি বিচি থাকে। আর ভিয়েতনামের পার্সিমন খানিকটা কচকচা। জাপানের পার্সিমন বিচিমুক্ত হবে বলে আশাবাদী এস এম কামরুজ্জামান।
পার্সিমন গাছে ফুল আসে মার্চে আর ফল সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে। তবে ফল প্রাপ্তির সময়কে দীর্ঘায়িত করে নভেম্বরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় কাজ করছেন এই উদ্যান তত্ত্ববিদ ও অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব এস এম কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, নভেম্বরে এদেশে উৎপাদিত কোন ফল নেই। ফলশূন্য নভেম্বরে এই ফল উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের মানুষের কাছে পৌছে দিতে পারলে অবশ্যই জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।
চারা সম্প্রসারণঃ
মডার্ণ হর্টিকালচার সেন্টারে থাকা গাছগুলোকে মাতৃগাছ হিসেবে ব্যবহার করে এক হাজার চারা তৈরি করা হচ্ছে। এসব চারা বাণিজ্যিকভাবে ছড়িয়ে যাবে সারাদেশে। আর এসব গাছ থেকে ৩-৪ বছরের মধ্যে ফল পাওয়া যাবে। এক সময় এই ফল দেশের মানুষের কাছে পরিচিত হয়ে উঠবে।
পার্সিমন ফলের দাম ও চারা প্রাপ্তিস্থানঃ
পার্সিমন বা কাকি সারা বিশ্বে দামি ফল গুলোর একটি । বর্তমানে এর প্রতি কেজি বাংলাদেশি টাকায় ৩০০-৪০০ টাকা করে বিক্রি হয়। বাংলাদেশে মাঝে মাঝে আমদানি হয় যা সুপারশোপ গুলোতে পাওয়া যায় , বাংলাদেশের বাজারে এক কেজি ফলের দাম ৭০০/৮০০ টাকা।
ফার্মসএন্ডফার্মার/২৬জুলাই২০