পাহাড়ি কৃষিতে নারীরাই বেশি পরিশ্রম করে

838

07339241681da5387f8c36f4ca2

রাঙ্গামাটি: পাহাড়ে কৃষি ক্ষেত্রে পুরুষের তুলনায় ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর নারীরা অনেক বেশি পরিশ্রমী। ঘর সামলিয়ে পাহাড়ে জুমচাষ, ফলের বাগান সৃজনসহ আর্থনৈতিক উন্নয়নে তারা নিরলস হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে যাচ্ছে। কথিত আছে ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর পুরুষরা কম পরিশ্রমী।

জীবিকা নির্বাহের জন্য এখনো পাহাড়ী নারীরাই তাদের সংসারের হাল ধরে টিকিয়ে রেখেছেন। একজন পাহাড়ী নারী দিনের শুরুতে স্বামী সন্তানকে সামলিয়ে জুম চাষ কিংবা বাগানে কাজের জন্য চলে যান উঁচু উঁচু পাহাড়ের জুম ক্ষেতে। সারাদিন কাজ করে পাহাড়ী তরি-তরকারী নিয়ে বিকেলে বাড়িতে পৌঁছে রান্নাবান্নার কাজ সারেন। এভাবেই প্রতিদিনকার জীবনকে মানিয়ে নিয়েছেন তারা।

রাঙ্গামাটি বিলাইছড়ি উপজেলাসহ বিভিন্ন পাহাড়ে ঘুরে দেখা গেছে, ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর নারীরা পুরুষদের মত জুম ক্ষেতে কাজ করছে। জুমে বিভিন্ন সবজি ও ধান চারা রোপণ থেকে শুরু করে ঘরে তোলা পর্যন্ত পরিশ্রম করে থাকেন তারা। একেবারে পরুষের মতোই জুমের ধান আহরণ করে। যদি শিশু সন্তান থাকে; তাহলে শিশুটিকে কাপড় মুড়িয়ে বুকের সাথে বেঁধে নিয়ে জুমের পরিচর্যা করতে থাকেন। বিশেষ করে বিলাইছড়ি উপজেলার ফারুয়া ইউনিয়নে, মুঈদুছড়া, তাংখুতাং, শুক্কুরছড়ি, গবইছড়ি ও পানছড়িসহ বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় প্রায় ৬ শতাধিক নারী পুরুষদের মতোই জুমে নেমে কাজ করছে।

জানা গেছে, পাহাড়ের নারীরা শুধু মাত্র সন্তান প্রসবের কয়েক দিন বিশ্রামে থাকেন। বাকি সবগুলো তারা পরিশ্রম করেন।

কয়েকজন জুমিয়া তরুণী ও তাদের অভিবাবকের সাথে কথা বললে তারা জানায়, কাজ করতে তাদের কোনো সমস্যা নেই, জুমে নেমে ধান কেটে আহরণ করতে দীর্ঘসময় পাহাড়ের গায়ে থাকতে কষ্ট হলেও তাতে তাদের আপত্তি নেই। সংসারের চাহিদা মেটাতে জুমে মা-বাবা, স্বামী-পুত্রের কাজে সহযোগিতা করতে তারা কাজ করছেন।

পুরুষরা যাতে ব্যবসা-বাণিজ্য ও সন্তানরা যাতে লেখাপড়া করার সুযোগ পায়, সে জন্যই নারীরা জুমে চাষাবাদের মতো কষ্টকর কাজ করছে। বিশেষ করে জুম মৌসুমে কাজ করতে তাদের ভালো লাগে। নিজেদের বা বর্গা পাহাড়ে চাষাবাদ ও জুমের ধানসহ সবজি আহরণ করে তারা আনন্দ পায়। পাশাপাশি তাদের বাড়তি আয় হয় এবং তা সংসারের উপকারে আসে বলে জানিয়েছেন ফারুয়া ইউনিয়নের জুমিয়া কৃষাণী মানুপ্রু মারমা, ওয়াংসাপ্রু মারমা ও সাংখিমা মারমা। সূত্র: বিএসএস

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন