বেকার জীবনের অভিশাপ থেকে বেরিয়ে এসে কোনো প্রকার কেমিক্যাল ছাড়াই বিলের পুঁটি মাছের শুঁটকি তৈরি করে বছরে আয় করছেন ১০-১২ লাখ টাকা। বর্তমানে এই শুঁটকি দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি হচ্ছে। স্বপ্ন দেখছেন আগামীতে বিদেশে শুঁটকি রপ্তানির। নড়াইল সদর উপজেলার সিংগাশোলপুর ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের বাসিন্দা ভীম কুমার বিশ্বাস (৪০) এভাবেই বদলেছেন তার জীবনের গল্প।
সরেজমিনে দেখা যায়, মির্জাপুর গ্রামে দিগন্তবিস্তৃত ফসলের মাঠের একপাশে বাঁশের তৈরি মাচায় শুকানো হচ্ছে বিলের পুঁটি মাছ। চার-পাঁচ শ্রমিক দিনভর মাছ নিয়ে কাজে ব্যস্ত। জেলার বিভিন্ন হাটবাজার থেকে মাছ সংগ্রহ করে এখানে রোদে শুকিয়ে তৈরি করা হয় শুঁটকি।
শ্রমিক রাজকুমার বলেন, বাজার থেকে পুঁটি মাছ কিনে আনার পর মাছগুলো ভালোভাবে ধুয়ে মাঠে রোদে শুকানো হয়। টানা সাত থেকে ১০ দিন রোদে শুকিয়ে তৈরি করা হয় শুঁটকি। পরে বস্তায় ভরে এই শুঁটকি বিক্রির জন্য প্রস্তুত করে রাখা হয়।
উদ্যোক্তা ভীম কুমার বিশ্বাস বলেন, জেলার বিভিন্ন হাটবাজার থেকে দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টাকা মণ দরে দেশি পুঁটি মাছ সংগ্রহ করে ভালো করে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে শুঁটকি করা হয়। কোনো ক্ষতিকারক কেমিক্যাল ছাড়াই আমি শুঁটকি তৈরি করি, যে কারণে আমার শুঁটকির চাহিদা বর্তমানে জেলার গণ্ডি পার হয়ে এখন দেশজুড়ে। এই শুঁটকি ২৪ থেকে ২৬ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হয়।
তিনি আরও বলেন, শ্রমিকদের বেতন দিয়ে বছরে আমার ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা আয় থাকে। স্বপ্ন আছে একদিন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আমার শুঁটকি বিদেশে রপ্তানি হবে।
সিংগাশোলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিটু মোল্লা বলেন, ভীম কুমার বিশ্বাস শুঁটকি থেকে সফলতা পেয়েছেন। তার এই সফলতা আশপাশের গ্রামের বেকার যুবকদের অনুপ্রাণিত করে তুলবে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, ভীম কুমার বিশ্বাসের শুঁটকির ব্যবসার প্রসার ঘটাতে জেলা মৎস্য অধিদপ্তর সব ধরনের সহযোগিতা করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। সবকিছু মিলিয়ে নড়াইল শস্য ও মৎস্যভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত। এ অঞ্চলের ফসলাদি ও মৎস্য সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সংরক্ষণ করতে পারলে দেশের অর্থনীতি ব্যাপক উন্নতি লাভ করবে।