পেঁপে খুবই জনপ্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ সবজি। আধুনিক চাষ পদ্ধতি ও উন্নত জাতের পেঁপে চাষ করলে ফলন অনেক বেড়ে যাবে বলে। বসতবাড়ির আশপাশে খালি জায়গায়ও পেঁপে চাষ করে সহজেই আর্থিক দিক দিয়ে লাভবান হওয়া যায়, সেই সঙ্গে পরিবারের চাহিদা পূরণ করা যায়। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কথা সবারই জানা। আর এ ঊর্ধ্বগতির প্রভাব বেশি এখন কাঁচা বাজারে। সেই কাঁচা বাজারে পেঁপে প্রয়োজনীয় একটি সবজি। পেঁপে সারা বছর পাওয়া যায়। পেঁপে দেশের শীর্ষস্থানীয় জনপ্রিয় একটি সবজি। পেঁপে শীতকালীন সবজি, তবে বর্ষাকালেও চাষ করা যায়। দেশে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় ৩৯ হাজার মেট্রিক টন ফলন হয়ে থাকে। পেঁপেতে ভিটামিন-এ, সি, শ্বেতসার, ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান যথেষ্ট রয়েছে।
মাটি ও আবহাওয়া : সুনিষ্কাশিত দোআশঁ ও বেলে দোঅাঁশ মাটি পেঁপে চাষের জন্য উত্তম। মাটি উর্বর এবং সেচ ও নিষ্কাশন সুবিধাযুক্ত হওয়া বাঞ্ছনীয়।
জাত : রাঁচি, কাকদাম, ওয়াশিংটন, বস্নস্টেম, হানিডিউ, বারি পেঁপে-১, (শাহি)।
বীজতলা তৈরি : বীজতলার মাটি আগাছামুক্ত ও ঝুরঝুরা করে নিতে হবে।
বীজের পরিমাণ : পলিথিন ব্যাগে চারা তৈরি করলে চারা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ১৫ক্ম১০ সেমি আকারের ব্যাগে সমপরিমাণ মাটি, বালি, পচা গোবর
মিশিয়ে নিতে হবে। প্রতি ব্যাগে ২-৩টি করে বীজ দিতে হবে। পরে ১টি করে চারা রাখা যাবে। চারা তৈরি হতে সাধারণত ৭-৮ সপ্তাহ লাগে।
জমি তৈরি ও চারা রোপণ : ২ মিটার দূরে দূরে ৬০ক্ম ৬০ক্ম৬০ সেমি আকারের গর্ত করে নিতে হবে। রোপণের ১৫ দিন আগে গর্তে সার মেশাতে হবে।
সারের পরিমাণ : পেঁপে চাষের রোপণকৃত জমিতে নিম্নরূপে সার প্রয়োগ করতে হয়।
ক্র. নাম্বার সারের নাম সারের পরিমাণ/প্রতি মাদায়
১. পচা গোবর/ কম্পোস্ট ১২-১৬ কেজি ইউরিয়া ছাড়া
২. ইউরিয়া ৪৫০-৫৫০ গ্রাম
৩. টিএসপি ৪৫০-৫৫০ গ্রাম
৪. জিপসাম ২৫০ গ্রাম
৫. বোরাক ২০-৩০ গ্রাম
৬. এমপি ৪৫০-৫৫০ গ্রাম
সেচ ও নিকাশ : মাটিতে রস কম থাকলেই ১০-১২ দিন পর পর সেচ দেয়া প্রয়োজন। বৃষ্টি বেশি হলে পানি নিকাশের ব্যবস্থা করতে হবে।
সার প্রয়োগ পদ্ধতি : রোপণের পর চারায় নতুন পাতা এলে গাছপ্রতি ৫০ গ্রাম হারে ইউরিয়া ও পটাশ সার এক মাস পর পর প্রয়োগ করতে হবে। গাছে ফুল এলে এর মাত্রা দ্বিগুণ করে দিতে হবে।
অন্যান্য পরিচর্যা ও রোগবালাই দমন : পেঁপে ক্ষেত সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। রোগাক্রান্ত ও মরা পাতা, ডাল পুঁতে ফেলতে হবে।
সংগ্রহ ও ফলন : রোপণের পর ৬০-৮০ দিনের মধ্যে পেঁপে সংগ্রহ করা যাবে। ১ শতকে ২৪ মণ পর্যন্ত ফলন হয়ে থাকে।
রোগবালাই ও পোকামাকড় দমন : মোজাইক, গোড়া পচা, মরচে ধরা রোগ উল্লেখযোগ্য। এ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে হবে।
ফার্মসএন্ডফার্মার/১২মার্চ২০