পেঁয়াজ রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর ২৪ দিন পেরিয়ে গেলেও নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যের বাজারে অস্থিরতা আরও বেড়েছে। ভারতের বিকল্প দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি হলেও স্থির হচ্ছে না বাজার। এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। দেশি পেঁয়াজ কেজিতে বেড়েছে পাঁচ টাকা আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ কেজিতে বেড়েছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে দেশি পেঁয়াজের সংকট আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে না আসায় এ বাড়তি দাম।
এর আগে ভারতীয় পেঁয়াজ খুচরা বাজারে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এখন তা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। আর পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১০৮ থেকে ১১০ টাকা। একইভাবে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০৬ টাকা।
এ বিষয়ে কারওয়ান বাজারের পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা এবং স্বদেশ বাণিজ্যালয়ের মালিক মো. অন্তর বলেন, দুর্গাপূজার পর থেকে এখন পর্যন্ত ভারতের পেঁয়াজ বাজারে আসেনি। এ কারণে এ পেঁয়াজের সংকট রয়েছে, দামও বেড়েছে।
আমদানির সঙ্গে বাজারমূল্যের ব্যাপক ফারাক : বিশ্ববাজারের চেয়ে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণেরও বেশি। যেমন মিয়ানমারের পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪২ টাকায়। খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৯৫-১০০ টাকা। এর আগে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি হয় ৭২ টাকা কেজি দরে। গতকাল বিক্রি হয়েছে ১১৫-১২০ টাকায়। মিসরের পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে ২৫ টাকা কেজি দরে, বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। পেঁয়াজের সরবরাহ কম থাকায় আমদানিমূল্যের সঙ্গে বাজারমূল্যের ব্যবধানও বাড়ছে বলে মনে করেন আমদানিকারকরা।
এদিকে দু-তিন বছর পরপরই পেঁয়াজের বাজারে এ ধরনের একটি সমস্যা তৈরি হয়। কেন এ সমস্যা, সমাধানইবা কী, তা নিয়ে যায়যায়দিনের অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে বেশ কয়েকটি কারণ। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব সমস্যার সমাধান না হলে বাজারে সংকট লেগেই থাকবে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, স্থানীয় কৃষকের উৎপাদিত পেঁয়াজে ন্যায্যমূল্যের নিশ্চয়তা না থাকা, অনিয়ন্ত্রিত বাজারে বেপরোয়া সুবিধাভোগী সিন্ডিকেটের তৎপরতা, মৌসুমে পেঁয়াজের মজুদে গুদাম সংকট, ভারতের কূটকৌশলের কাছে পেঁয়াজ চাষিরা ধরাশায়ী, ভারতনির্ভরতা, আমদানিমূল্যের সঙ্গে বাজারমূল্যের ব্যাপক ফারাক এবং মূল্য নির্ধারণে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর নিয়মিত মনিটরিং না করা পেঁয়াজের বাজারে কারসাজির মূল কারণ।
ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/জেডএইচ