পোল্ট্রির টাইফয়েড এবং পলোরাম রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

1386

Recpi_fish-696x392
বাংলাদেশে ব্রয়লার ও লেয়ার পালনের পাশাপাশি টার্কি পালন একটি নতুন সম্ভাবনা। বিভিন্ন রোগের কারণে এই পোল্ট্রি শিল্প মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এদের মধ্যে ফাউল টাইফয়েড, পুলোরাম রোগ দুটি খুবই বিপজ্জনক। আসুন জেনে নেই এই রোগ গুলোর প্রভাব, বিস্তার, প্রতিরোধ ও প্রতিকার সম্পর্কে।

ফাউল টাইফয়েড
এটি সালমোনেলা গ্যালিনেরাম (গ্রাম – এরোবিক) দ্বারা হয়, এরা চলন ও স্পোর বিহীন।সিরোটাইপ গ্রোপ ডি এর অন্তভুক্ত। ২টি এন্টিজেন সোমাটিক ও ফ্লাজেলার।

ল্যাবে ৩৭ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেট তাপমাত্রা সেলেনাইট ব্রথ, টেটড়াথায়োনেট ব্রথ, ম্যাকন কি আগার, ব্রিলিয়ান্ট গ্রিন আগার এ ভাল জন্মায়।

# পি এইচ ৪-৯ এর মধ্যে বেঁচে থাকতে পারে, ( পি এইচ ৭ ভাল)। ১০-৪৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেট তাপমাত্রায় জীবানূ বেশি বংশ বিস্তার করে। ৮০-৮২ ডিগ্রী সেন্টি তাপমাত্রায় খাদ্যকে পিলেটিং করলে সালমোনেলা কমে যায়।

এই রোগ সব বয়সেই হয় তবে তিন মাস থেকে ডিম পাড়ার শুরুর সময় বেশি হয়।

ক্ষতির পরিমাণ:

# মরটালিটি ১০-৯০%
# ডিম কমে ১০-২০%
# ইনকোবেসন পিরিয়ড ৪ -৬ দিন এটি উপযুক্ত পরিবেশে ১ বছর বাচতে পারে।

ইংল্যান্ড, পশ্চিম ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকা থেকে এই রোগটি নিমূল করা হয়েছে.

# বাংলাদেশের প্রায় সব পোল্ট্রি ফার্মে এই রোগটি আছে।

#নোংরা পরিবেশ, গাদাগাদি অবস্থা,অপর্যাপ্ত বায়ু চলাচল, ঠান্ডালাগা এবং অন্য রোগের উপস্তিতি রোগাক্রান্ত এবং মারা যাওয়া বাড়িয়ে দেয়. এর প্রায় ২২০০ টি সেরোটাইপ আছে।

গৃহ পালিত মোরগ মুরগি সালমোনেলা জীবাণূ্র বড় বাহক।

১। মুরগির দেহের বাহিরে কতদিন বেচে থাকে তা নিন্মে দেয়া হলোঃ

১। চিকেন ড্রপিং ৫-২৫ দিন ২। পোল্ট্রি মল ১০-৪০ দিন ৩। পোল্ট্রি লিটার ২১-১৪৪ দিন ৪। পিট লিটার ১৬০-১৬৪দিন ৫। পালক ১-৪ বছর ৬। ডিমের খোসা ৩-১৪ মাস ৭। চিক বক্স ২ মাস ৮। রবারের ফিটিং ২-১৭২দিন ৯। মাটিতে ২৮০দিন ১০। পানিতে ২-৪৫দিন ১১। ফিশ মিল ১ মাস-২ বছর ১২। মাছি ৫-৬০দিন ১৩। ডিমের পাউডার ১৩ বছর।

২. যেসব মাধ্যম ব্যবহারে রোগটি ছড়ায়:

ডিম ( ভার্টিকেল), হ্যাচারী, ইদুর, পাখি( কবুতর), ভিজিটর, চিকা, পোকামাকড়, মাছি তেলাপোকা, খাবারের ভ্যান, ট্রাক, রিক্সা, পিক আপ, খাদ্য এবং খাদ্য উপাদান, ডিমের ট্রে, ব্রুডার, সিমেন।

৩. প্রকারভেদ এবং লক্ষণ

১। পোলোরামের মত জন্মের পর পরই ঘটেনা অন্তত ৫ দিন সময় নেয় মানে ৭-১০ দিনের মধ্যে লক্ষণ দেখা যায়।

২। সুস্থ সবল বাচ্চা হঠাৎ মারা যায়, খাদ্য এবং পানি ঠিক থাকে। পুলোরামের মত দুর্বল হয়না।

অতিতীব্র:

১-৩ ঘন্টার মধ্যে হঠাৎ করে মারা যায়।

পানি বেশি খায়

তীব্র:

# জর, ক্ষুদামন্দা,নিস্তেজতা,বিমর্ষতা দেখা যায়।
# মাথার ঝুটি ও লতিকা ফ্যাকাশে এবং ছোট হয়ে যায়।
# সবুজ, সালফার বা হলুদ রং এর দূর্গন্ধ যুক্ত ডায়রিয়া দেখা যায়।
# শরীরে জ্বর থাকে।
# ডানা ঝুলে যায়।
# মারা যাবার আগে মুখ দিয়ে লালা পড়ে।
# কখনো কখনো হাস ফাস শব্দ করে,শ্বাস কস্ট দেখা দেয়।
# ফার্মে আস্তে আস্তে মৃত্যু হার বেড়ে যায় ১ম এ ২টি তারপর ৩টি, এভাবে বাড়তে থাকে।
# পিক প্রডাকশনে ঊঠে না ৮৩-৮৫% থাকে। তবে অধিকাংশ বাচ্চায় তা দেখা যায়না,লালচে তরল পায়খানা দেখা যায়,অনেকে এটিকে আমাশয় বলে ভুল করে।
# সাদা আঠালো পায়খানা মলদারে লেগে থাকে. হলুদ বাদামী আবার কখনো সবুজ পায়খানা করে।

দীর্ঘ মেয়াদী

# খাবার কম খায়
# ওজন কমে যায়
# ডিম কমে যায়
# ছোট ডিম পাড়ে এবং ভাংগা ডিম বেড়ে যায়।
# ফাইব্রিনাস পেরি্টোনাইটস
# ডিমে কালো ক্লাও ছিটা দেখা যায়।

৪. পোস্ট মর্টেম লেসন

# রোগের প্রাথমিক অবস্থায় লক্ষণ ভাল বুঝা যায় না.
# তীব্র পর্যায়ে লিভার বড়, কাসার মত রং (বোঞ্জ কালার,মেহগনির মত), লিভারে নেক্রোটিক ফোকাই দেখা যায়।
# অনেক সময় লিভার উজ্জল সবুজ হয়,এতে নিশ্চিত হওয়া যায়(pathognomic lesion)
# লিভারে রক্ত বর্ণ,সাদা রং বা উভয় দেখা যেতে পারে.
# লিভার বের করার পর বাতাসের সংস্পশে কিছুটা সবুজ নং ধারণ করে। অনেক সময় লিভার সাদা এবং ভংগুর হয়ে যায়।
# ফুসফুস কালচে রং এর হয়(Heavily congested) এবং শোথগ্রন্থ(Oedematous).ফূসফুস পানিতে রাখলে ডুবে যাবে.
# প্লীন এবং কিডনী অনেক বড় হয়ে যায়।প্লীন সবুজ এবং সাদা বর্ণের নেক্রোটিক ফোকাই দেখা যায়।
# পেঠের ভিতর ভাংগা,গলিত,বিবর্ণ ডিম পাওয়া যায়.
# ওভারিয়ান ফলিকল গুলো একত্রে মোটা দলার মত দেখা যায়।
# ইনটেসটাইনে আলসার দেখায যায়।

যেভাবে রোগ নির্ণয় করা যায়-

# ক্লিনিকেল লক্ষণ দেখে
# পোস্ট মর্টেম করে
# সিরাম প্লেট এগ্লুটিনেশন করে
# ব্যাক্টেরিয়া কালচার করে
# এলাইজা করে
# হিস্টো প্যাথোলজিকেল টেস্ট করে

চিকিৎসা:

আক্রান্ত মুরগি চিকিৎসা করে ভাল রেজাল্ট পাওয়া যায় না, তবে প্রাথমিক অবস্থায় হলে ভাল রেজাল্ট পাওয়া সম্ভব।

# এন্টিবায়োটিক ফ্লোরোকোইনোলন গ্রোপঃ ফ্লোরফেনিকল সালফার ড্রাগ নিওমাইসিন জেন্টামাইসিন এমিকাসিন বা জেন্টা ইঞ্জেকশন।
# ইমোনুস্টিমোলেটর
# টক্সিন বাইন্ডার
# লিভার টনিক
# ই+সেলেনিয়াম

প্রতিরোধ:
# ভাল কোম্পানি এবং হ্যাচারীর বাচ্চা নিতে হবে।
# বায়োসিকিউরিটি মেনে চলতে হবে।
# পানিতে প্রবায়োটিক, ক্লোরিনএবং এসিডিফায়ার ব্যবহার করতে হবে।
# রীতিমত স্পে করতে হবে।
# খাদ্যে মিট বোন ব্যবহার কমিয়ে উদ্ভিজাত প্রোটিন ব্যবহার করতে হবে।
# টিকা দেয়া যায়।

পুলোরাম রোগ:

এটি সালমোনেলা পুলোরাম দিয়ে হয়, এটি হাইলি কন্টাজিয়াস ও সিস্টেমিক ডিজিজ যা তীব্র আকারে বাচ্চায় ছড়িয়ে পড়ে। সাদা পায়খানা হয় বলে আগে একে ব্যাসিলারি হোয়াইট ডায়রিয়া বলা হত। সব জায়গায়ই এটি আছে।অন্য জীবানূর তুলনায় এটি কঠিন পরিবেশেও বেঁচে থাকতে পারে। পি এইচ ৪-৯ এর মধ্যে বেচে থাকে তবে ৭ হল সবচেয়ে ভাল।এটি অনেক প্রকারের এন্টিজেনিক চারিত্রিক বৈশিষ্টের হয় যেমনঃ ৯,১২(১),১২(২),১২(৩),বিভিন্ন স্টেইনে ০-১ এন্টিজেন আছে কিন্তু স্ট্যান্ডাড স্টেইনে কম পরিমানে ১২(২) আছে।এই কারণে এই জীবানূর বিরুদ্ধে তেমন কোন টিকা নাই।টার্কি ও মুরগি বেশি আক্রান্ত হয়। হালকা জাতের তুলনায় ভারি জাত ,সাদার তুলনায় লাল,মোরগের তুলনায় মুরগি বেশি আক্রান্ত হয়।এই রোগে ২-৫০% মারা যায় এমনকি ১০০% হতে পারে যা নির্ভর করে গাদাগাদি,ঠান্ডা লাগা,ভেন্টিলেশন,নোংড়া পরিবেশ এবং অন্য রোগের উপস্তিতির উপর।সালমোনেলা সিরোটাইপ ডি গ্রোপের অন্তভুর্ক্ত।এটি ফ্যাকাল্টেটিভ এনারোবিক। ডেক্সটোজ ও ম্যানিটোজ এ ফার্মেটেশন করে এবং গ্যাস তৈরি করে।

জীবাণু নাশক দিয়ে সহজে মারা যায়।

১ম সপ্তাহেই মর্টালিটি দেখা যায় তবে ২-৩ সপ্তাহের বাচ্চা আক্রান্ত হলে বেশি মারা যায় এবং এই সময়েই প্রধানত হয়।

৪০- ৫২ তাপমাত্রায় টিকে থাকে কিন্তু ৩৩-৩৭ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ভাল বিস্তার লাভ করে।

আক্রান্ত ফার্মে ৩০ সপ্তাহ পর্যন্ত বাচে।

গরম পরিবেশে থাকা মুরগি ও টার্কিতে সালমোনেলোসিস বেশি হয়।

১। কিভাবে ছড়ায়:

ফাউল টাইফয়েড এর মতই তবে হ্যাচারিকে টাইম বোমার সাথে তুলনা করা হয়েছে,হ্যাচারিতে ডিম ১৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় রাখলেও জীবানূ ডিমে প্রবেশ করে।

# ভার্টিকে্ল এবং হরিজোন্টাল দুইভাবেই ছড়ায়।

১। ভিজিটর।

২। পরিবহন (ট্রাক,রিক্সা,পিক আপ ,ভ্যান) খাবার ও ডিমের গাড়ি।

৩। মুরগিতে যদি ক্যানাবলিজম হয় তাহলে এক মুরগি থেকে অন্য মুরগিতে যায়।

৪। ভেক্সিনেটরের এবং ডিবেকার লোকদের মাধ্যমে ছড়ায় / হ্যাচারীতে আক্রান্ত বাচ্চা থেকে সুস্থ বাচ্চাতে পালকের মাধ্যমে ছড়ায়।

৫। তাছাড়া পায়খানার মাধ্যমে ছড়ায়। আমেরিকায় ৬৭-৯১% ফার্মে এই জীবানূ আছে।

৬। ফিশমিল, মিট এন্ড বোনমিল,তিলের খৈল, সয়াবিন মিল,বাদাম এবং সূর্য মুখী মিল থেকে ও এই জীবানূ খাদ্যে যায়।

৭। মাছি, মাছির লার্ভা, ইদুর এবং বন্য প্রানীর পায়খানা থেকে সালমোনেলা জীবানূ মুরগির খাদ্য উপাদানে প্রবেশ করে।

৮। মুরগি এবং খাবার বিক্রেতার মাধ্যমে ও ছড়াতে পারে।

৯। ম্যাগোট, ধুলা বালি।

১০। কবুতর দিয়ে ১৭% সালমোনেলোসিস হয়ে থাকে

লক্ষণ:

১। ইনকিউবেটরে মৃত বাচ্চা পাওয়া যায় বা ফোটার পর বাচ্চা মারা যায়।

২। আক্রান্ত বাচ্চা হবে তন্দাচ্ছন্ন, দুরবল।

৩। খাবার কম খাবে এবং মারা যাবে।

৪। ৫-১০ দিনে কম মারা যায়, কিন্তু ২-৩ সপ্তাহে বাচ্চা মারা যাওয়া শুরু করে।

৫। হোভারের নিচে বাচ্চা জমা হয়।

৬। পাখনা ঝুলে পড়ে ও খুব বেশি চেচামেচি করে।

৭। সাদা চকের মত পায়খানা করে, মাঝে মাঝে সবুজাভ বাদামী রং এর পায়খানা করে এবং পায়খানার রাস্তায় লেগে থাকে।

৮। বাচ্চায় জ্বর হয় তাই গাদাগাদি করে থাকে কিন্তু খামারী মনে করে তাপ কম হয়েছে এবং তাপ বাড়াতে থাকে তবু কাজ হয় না।

৯। ফুসফুস আক্রান্ত হলে শাসকষ্ট দেখা যায়। আক্রান্তের পর যে বাচ্চা টিকে তাদের বৃদ্ধি কম হয় এবং পালক কম উঠে।

১০। পালক উস্কোখোস্কো হয়।

১১। বাচ্চা প্রচন্ড কিচির মিচির করে ।

১২। ব্রয়লারে বাচ্চা অন্ধ হয়ে যেতে পারে ও পায়ের গিরা ফুলে খোড়া হয়ে যেতে পারে।

বয়স্ক টার্কি ও মুরগি

১। তীব্র আকারে রোগ লক্ষন দেখা যায়না।

২। বিভিন্ন মাত্রায় ডিম কমে

৩। ডিমের হ্যাচাবিলিটি এবং ফারটিলিটি কমে যায়।

৪। তীব্র আকারে হলে ঝুটি ফ্যাকাশে হয়ে যায়

৫।পাতলা পায়খানা হয় এবং মারা যায়।

৬। মৃদু আক্রমণে অস্থিরতা দেখা যায়।

পোস্ট মর্টেম

বাচ্চা:

হটাত বাচ্চা মারা গেলে প্রথম কোন লক্ষণ বুঝা যায়না।তবে লিভার বড় দেখায় এবং লিভারের হলুদ রং পরিবর্তিত হয়ে কনজেসটেড হয়, রক্তের ডোরাকাটা দাগ দেখা যায়।সেপ্টিসেমিক ফলে অন্যান্য অংগে রক্ত দেখা যায়।কুসুম হলুদ রং এর হয় যা সহজে শুকায়না। সিকামে প্রদাহ হয়,বড় হয় এবং এতে শক্ত,শুকনা বস্তু দেখা যায়।সাদা সাদা ফোটা বা নডিউল হৃদপিন্ডের মাংসে,লিভারে,ফুসফুসে,সিকামে,বৃহদান্তে এবং গিজার্ডের মাংস পেশিতে দেখা যায়। সিকামে রক্ত বা কেজিয়াস দ্রব্য দেখা যায়,প্লিন বড় হয়ে যায়,অন্তনালী পুরু হয়ে যায়।ইউরেটারে ইউরেট ক্রিস্টাল দেখা যায়।

বয়স্ক মুরগি ও টার্কি;(কম গুরুত্বপূর্ণ কারণ ক্লিনিকেল রুপে তেমন পাওয়া যায় না।)

যে সমস্ত টার্কিতে অনেক দিন ধরে এই জীবানু থাকে এবং আক্রান্ত হয়,সেসব ক্ষেত্রে ডীম্বানুতে সিস্ট থাকে,বিকৃত আকারের হয়,এবং রং পরিবরতিত হয়,পেরিটোনিয়ামে প্রদাহ দেখা যায়। মাঝে মাঝে হৃদপিন্ডের আবরনে প্রদাহ দেখা যায়।আক্রান্ত ডিম্বানুতে তরলীকৃত এবং কেসিয়াস বস্তু দেখা যায় যা মোটা ক্যাপসুল দ্বারা আবৃত থাকে।

এই ওভারিয়ান ফলিকল গুলো নিবিড়ভাবে ওভারীর সহিত লেগে থাকে।ডিম্বাশয়ে রক্তের দাগ দেখা যায়। আবার মাঝে মাঝে দোলকের ন্যায় ঝুলে থাকে যা ডিম্বাশয়ের অন্যান্য বস্তু থেকে আলাদা।এক্ষেত্রে ডিম্বাশয় এবং ডিম্বনালি অকার্যকর হয়ে যায়। মোরগের জননতন্ত্র ও আক্রান্ত হয়।মাঝে মাঝে ডিম্বানু গুলো সিস্টের মত হয় এবং ওভারি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে উদর গহবরে উন্মক্ত থাকে বা পেরিটোনিয়মের কিনারায় লেগে থাকে,পেরিটোনিয়ামের প্রদাহ করে।

রোগ নির্ণয়

রোগের লক্ষণ দেখে রোগ নির্ণয় করা কঠিন, পোস্ট মর্টেম করে কিছুটা আন্দাজ করা যায়, সঠিক নির্ণয় করতে হলে রক্ত পরীক্ষা করতে হবে।

অন্য রোগ থেকে আলাদা করা:

ফাউল টাইফয়েড হলেও এমন লক্ষন এবং লেশন দেখা যায়,তাছাড়া নিউমোনিয়া হলেও ফুসফুসে এমন লেশন দেখা যায়।

বাচ্চার অস্তি সন্ধিতে যে লক্ষন দেখা যায় তা মাইকোপ্লাজমা সাইনোভি দারা ও হয়।

ওভারি এবং হৃদপিন্ডের আবরনে ক্ষত দেখে অন্যান্য ব্যাক্টেরিয়ার আক্রমন থেকে পুলোরাম রোগ কে চেনা যায়।

যেভাবে রোগ নির্ণয় করা যায়-

১। ক্লিনিকেল লক্ষণ দেখে

২। পোস্ট মর্টেম করে

৩। সিরাম প্লেট এগ্লুটিনেশন করে

৪। ব্যাক্টেরিয়া কালচার করে

৫। এলাইজা করে

৬। পি সি আর

চিকিৎসা
চিকিৎসা দিয়ে লক্ষণ দূর করা যায় কিন্তু রোগ দূর করা যায়না।

কসুমিক্স প্লাস ০.0৪% ১০-১৪ দিন খাদ্যে।
সি টি সি ২২০ মি গ্রা পার কেজি খাদ্যে ১০ দিন।

নিচের যে কোন একটি দেয়া যায়।

কোইনোলন গ্রোপ
জেন্টামাইসিন
নিওমাইসি

রোগ প্রতিরোধ এবং দমন:

১। খাদ্যের উপাদান ভালভাবে সংরক্ষণ করতে হবে তা নাহলে ইদুর বা অন্যান্য পোকা মাকড় দারা রোগ খাদ্যে আসতে পারে।

২। ফিড মিলের যন্তপাতি গুলো ভাল ভাবে পরিস্কার না করলে সালমোনেলা আসতে পারে,৮২ সেন্টিগ্রেট তাপমাত্রায় খাদ্য পিলেটিং করতে পারলে সালমোনেলা কিছুটা কমে।

৩। খাদ্যে এসিডিফায়ার সালমোনিল ড্রাই ৩০০-৪০০গ্রাম ১০০কেজি খাদ্যে দিলে ভাল হয়।

৪। খাদ্যে প্রবায়োটিক প্রটেক্সিন ১০০ গ্রাম ১ টন খাদ্যে দিলে ভাল ফল পাওয়া যায়।

৫। ইদুরের পরেই কবুতরের স্থান তাই এসব যাতে আশে পাশে না আসে বা থাকে সে ব্যবস্থা করতে হবে।

৬। খাদ্য ,বাচ্চা ,বয়স্ক মুরগি এবং ডিম এক সাথে বিক্রি করা যাবেনা।

৭। কেউ যাতে সালমোনেলা জীবানূ নিয়ে ফার্মে না ঢুকে সে ব্যবস্তা করতে হবে।

৮। ব্রীডার এবং হ্যাচারির বায়োসিকিউরিটি ভাল করতে হবে যাতে সা্লমোনেলা মুক্ত থাকে।

ফার্মসএন্ডফার্মার/২৪জানু২০২০