পোল্ট্রি খামারে রোগ নিরাময়ে রসুনের ব্যবহার আমরা অনেকেই জানি না। রসুনের রয়েছে বিভিন্ন ভেষজ গুণাগুণ। পোল্ট্রি খামারে রোগ নিরাময়ে রসুন বেশ কাজে আসে। আসুন জেনে নেই পোল্ট্রি খামারে রোগ নিরাময়ে রসুনের ব্যবহার সম্পর্কে-
১। কাঁচা রসুন পেস্ট করে সরাসরি বা পানির সাথে মিশিয়ে পোল্ট্রি কে খাওয়াতে পারলে শরীরে ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাশ প্রতিরোধী ক্ষমতা তৈরি হয়। ২ চামচ ১ লিটার পানিতে সপ্তাহে ২ দিন।
২। পোল্ট্রির ঠান্ডা লাগে নাক দিয়ে পানি ঝরে ১ চা চামুচ রসুনের পেস্ট, এক চা চামুচ মধু, ১ লিটার পানিতে খেতে দিলে ঠান্ডা চলে যাবে গায়ে যদি জ্বর বা ব্যথা থাকলে সেটাও চলে যাবে।
৩। ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণুঘটিত রোগ প্রতিরোধে হাজার বছর ধরেই রসুন ব্যবহৃত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, কৃমি দূর করতে রসুনের নির্যাস ভালো কাজ করে।
৪। অনেক সময় কোনো কারণ ছাড়াই পোল্ট্রির পালক পরে যায়। সেক্ষেত্রে চিন্তা না করে রসুন পেস্ট করে সাথে খাঁটি মধু মিশিয়ে হাতের তালুর সাহায্যে যেখানে পালক নাই সেখানে চামড়ার ওপরে মেখে দিলে খুব তারাতাড়ি পালকে ফিরে আসবে।
৫। পোল্ট্রির কোনো জায়গায় কেটে গেলে, খোঁচা লাগলে, আচর লাগলে বা পোকামাকড় কামড়ালে রসুন লাগিয়ে দিলে তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যাবে।
৬। রসুন রক্ত পরিষ্কার রাখে, তাই সকালে খাবারের পূর্বে, পানিতে ২ চা চামচ ১ লিটার পানি সপ্তাহে ২ দিন রসুনের পেস্ট মিশিয়ে খাওয়ালে ভালো ফল পাওয়া যায়।
৭। রসুন প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক। গবেষণায় দেখা গেছে, খালি পেটে পোল্ট্রিকে রসুন খাওয়ান হলে একটি শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক এর মত কাজ করে। ফলে পোল্ট্রির শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াসমূহ আর রক্ষা পায় না।
৮। অন্যান্য ঔষধের তুলনায় পোল্ট্রির শরীরকে ডি-টক্সিফাই করতে রসুন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রসুন, প্যারাসাইট, কৃমি , জ্বর, এর মত রোগ প্রতিরোধ করতে অনেক উপকারি।
৯। রসুন পোল্ট্রির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও হজম হয়না বা খাবার থলি চাপ দিলে পানি বের হয় মুখ দিয়ে।এসব সমস্যা দূর করে রসুন।
১০। সকালে খাবারের আগে রসুন ২চা চামচ ১ লিটার পানি পোল্ট্রির হঠাৎ পা পরে যাওয়া বা গিট ফোলা এসব রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
১১। পুলরাম ও সালমনেলা প্রতিরোধেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
সতর্কতাঃ
পোল্ট্রির যদি হঠাৎ কোনো কারণে শ্বাসকষ্ট শুরু হয় ,তখন রসুন দেয়া যাবে না। স্ট্রোক করতে পারে হাইপার হয়ে। রসুনের অনেক গুন বা উপকারী দিক আছে ভেবে অতিরিক্ত মাত্রায় রসুন প্রয়োগ করা যাবে না।
নিয়মিত রসুনের ব্যবহারের ফলে খামারে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে ব্যাপক উপকার পাওয়া সম্ভব। সবচেয়ে বড় বেপার ওষুধের খরচ কম যাবে তথা রোগ হবার ই সুযোগ পাবে না।
ফার্মসএন্ডফার্মার/২৮মার্চ২০২১